শুধু ভারতের নয়, ভারতের বাইরে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হিন্দু নির্যাতন অব্যাহত। হিন্দু ধর্ম সম্বন্ধে অপমানজনক মন্তব্য, ধর্মান্তকরণ, খুন, ধর্ষণ, মন্দিরে হামলা ইত্যাদির মত ঘটনা ক্রমাগত ঘটে চলেছে। সেই ঘটনাগুলি আপনাদের সামনে তুলে ধরতেই এই নিবন্ধ।
নিম্নের নিবন্ধে ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ থেকে ২রা মার্চ, ২০২৪ তারিখের মধ্যে হওয়া হিন্দু নির্যাতনের ঘটনাগুলি তুলে ধরা হয়েছে।
ভারত:
(১) রাজস্থানের বারান জেলার একটি স্কুলে কর্মরত একজন শিক্ষক মা সরস্বতী সম্বন্ধে ঘৃনামূলক মন্তব্য করেন। সেই মন্তব্যের পরই শিক্ষা দপ্তরে অভিযোগ দায়ের হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এক নির্দেশিকা জারি করে ওই শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
(২) শ্রী কৃষ্ণ জন্মভুমি পুনরুদ্ধারের মামলায় হিন্দু পক্ষকে দেওয়া হলো খুনের হুমকি। পাকিস্তান থেকে আসা এক ফোনে হিন্দু পক্ষের হয়ে মামলাকারী আশুতোষ পান্ডেকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। ফোন করে তাকে বলা হয় যে মামলা তুলে না নিলে বোমা হামলা করে তাকে হত্যা করা হবে। উল্লেখ্য, শাহী ঈদগাহ মসজিদ নির্মিত করা হয়েছে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ জন্মভুমিতে। সেই পবিত্র ভূমি উদ্ধারের জন্য আদালতে মামলা লড়ছেন শ্রী আশুতোষ পান্ডে।
(৩) মুসলিম বন্ধু ক্রমাগত ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। আর সেই মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার এক অফিসার। মৃত ওই অফিসারের নাম সুখারাম জাট। তিনি রাজস্থানের মাকরানার বাসিন্দা।
অভিযোগ, সুখারামের বন্ধু ‘সাদ্দাম হোসেন‘ ও সাদ্দামের পিতা মহম্মদ সৈয়দ কর্মগত মানসিকভাবে চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন। সুখারামকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করতে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। আর সেই চাপ সহ্য করতে না পেরেই আত্নহত্যার পথ বেছে নেন বায়ুসেনার ওই অফিসার।
(৪) ঘৃণজনিত অপরাধের শিকার হলেন উত্তর প্রদেশের আগ্রার বেশ কিছু হিন্দু বাসিন্দা। বাড়ির বাইরে গেরুয়া পতাকা লাগানোর কারণে রাতের অন্ধকারে হামলা চালানো হলো। বাড়ির বাইরে রাখা গাড়িতে আগুন লাগানো হলো। আর সেই আগুন লাগানোর ঘটনায় জুবাইর নামে এক মুসলিম যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মোট ১৪টি গাড়িতে আগুন লাগায় ওই মুসলিম যুবক। এছাড়াও, হামলার শিকার হয়েছে প্রায় ২০০টি হিন্দু বাড়ি।
খবর অনুযায়ী, আগ্রা শহরের মুরলী বিহার কলোনির একাধিক হিন্দু বাসিন্দার গাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ওই মুসলিম যুবককে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করে। পরে জেরায় সে তাঁর করা অপরাধের কথা স্বীকার করে।
(৫) ইসলামিক মৌলবাদীদের হাতে আক্রান্ত হলেন একদল বজরং দলের কর্মী ও কার্যকর্তা। গরু পাচার রোধে কাজ করার কারণে মৌলবাদীদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিলেন বজরং দলের ওই কর্মীরা। উন্মত্ত ইসলামিক মৌলবাদীরা লাঠি ও ছুরি নিয়ে হামলা চালায়। হামলার কারণে বজরং দলের একাধিক কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। ঘটনা মধ্য প্রদেশের দামোহ- এর।
(৬) ‘শবে-ই-বরাত’- এর রাতে হামলার শিকার হলো পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার একটি হিন্দু মন্দির। রাতের অন্ধকারে সুযোগ নিয়ে হাওড়া জেলার ডোমজুড় থানার অন্তর্গত বাঁকড়ার মিশ্রপাড়ায় হিন্দু মন্দিরে হামলা চালানো হয়। ভাঙচুর করা হয় মূর্তি।
অন্য একটি খবরে বলা হয় যে একটি নয়, হামলার শিকার হয়েছে পাঁচটি হিন্দু মন্দির।
(৭) পশ্চিমবঙ্গের যেখানেই জনবিন্যাসের পরিবর্তন হয়েছে, সেখানেই হিন্দু মহিলারা ধর্ষনের শিকার হচ্ছেন, এমনটাই অভিযোগ করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি শ্রী সুকান্ত মজুমদার।
(৮) প্রকাশ্য দিবালোকে হিন্দু মন্দিরের ভিতরে ঢুকে বাইবেল পড়তে শুরু করলেন একজন খ্রিস্টান মিশনারী। চেন্নাই শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত বিখ্যাত কপিলেশ্বারার মন্দিরে এই ঘটনা ঘটে। হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করতে খ্রিস্টান মিশনারিরা যে আগ্রাসী হয়ে উঠেছে, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।
(৯) অযোধ্যা থেকে ফেরা রাম ভক্তদের ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দিলো ইসলামিক মৌলবাদীরা। আর তা জানতে পেরেই কয়েকজন ইসলামিক মৌলবাদীকে গ্রেপ্তার করলো রেল পুলিশ।
ঘটনা অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়নগর জেলার হস্পেত স্টেশনের।
(১০) দুষ্কৃতী হামলার শিকার হলো পশ্চিমবঙ্গের আরও একটি হিন্দু মন্দির। রাতের অন্ধকারে হামলা চালানো হলো পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট থানার অন্তর্গত পাওয়ার হাউস এলাকার একটি হিন্দু মন্দিরে। ভাঙচুর করার চেষ্টা করা হলো মূর্তি। অভিযোগ দায়ের হলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করার খবর পাওয়া যায়নি।
(১১) পাঞ্জাবের লুধিয়ানার একটি হিন্দু মন্দিরে হামলা চালানোর ঘটনা ঘটলো। মন্দিরের ভিতরে থাকা মূর্তিগুলি ভাঙচুর করা হয়েছে। দিল্লীগামী জাতীয় সড়কের ধারে অবস্থিত সহনেওয়াল গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।