© অরুণ আনন্দ
১৯২১ সালের ১ জুলাই, চীনের সমাজতন্ত্র গঠনের চূড়ান্ত লক্ষ্য করে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) আনুষ্ঠানিকভাবে একটি রাজনৈতিক দল এবং একটি বিপ্লবী আন্দোলন সংগঠনের ভিত্তি স্থাপন করে। ১৯৪৯ সালে, মাও সেতুংয়ের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী কুওমিনটাং পার্টিকে সহজেই হারিয়ে জয়ী হয় সিসিপি(CCP )এবং পরবর্তীকালে পিপলস রিপাবলিক অফ চায়না(পি. আর. সি) প্রতিষ্ঠিত করে, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকারের একমাত্র দল হিসেবে ঘোষণা করা হয় যা আজও অব্যাহত রয়েছে।
২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, ৯.৮ কোটি সিসিপির সদস্য নিয়ে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল গড়ে তুলেছে, চীন। বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, চীন তার উচ্চাকাঙ্ক্ষার পরিকল্পনের জন্য, বিশেষত তার জাতীয় পুনর্জাগরণের ত্ত উন্নয়নের জন্য, গুরুত্ব অর্জন করেছে। সিসিপির মাধ্যমেই চীনে বর্তমানে যে রাজনৈতিক ব্যবস্থার কল্পনা ও নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটী ‘চীনা বৈশিষ্ট্যযুক্ত সমাজতন্ত্র’। সিসিপির ১০৩তম প্রতিষ্ঠা দিবসে, সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে দলের জনপ্রিয়তা ও জনসংখ্যাকে শক্তিশালী করে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা পুনরায় পর্যালোচনা করা অনিবার্য।
১৯২৭ সালে সাংহাইতে, চিয়াং কাই-শেকের নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী কুওমিনতাং পার্টি, চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকে সহিংসভাবে বিতাড়িত করে। এর ফলে, তাদের জোটের বিচ্ছেদ ঘটে (১৯২৪-২৭) এবং বিপর্যয়ের আশঙ্কায় সিসিপিকে গোপনে যেতে বাধ্য হতে হয়। ১৯৩১ সালে, দক্ষিণ-পূর্ব চীনের জিয়াংসি সোভিয়েতে (চীনা সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র), গ্রামের কৃষক শ্রেণীর সমর্থনে, সিসিপি নেতারা মাও সেতুং এবং ঝু দে, পুনরায় দলের ভিত্তি স্থাপন করেন। তবে, এই রাজনৈতিক দলের ঘাঁটি শীঘ্রই কুওমিনতাং দ্বারা সামরিক ঘেরাও অভিযানের সম্মুখীন হয়। ১৯৩৪ সালে সিসিপি ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করে কুওমিনটাংয়ের শেষ সামরিক সফল হয়, যা সিসিপি বাহিনী স্থানবদল করতে বাধ্য করে। এর ফলে, চীনা ইতিহাসে লং মার্চ নামে পরিচিত দীর্ঘ এক বছরের ঐতিহাসিক উদ্যোগ আরও দৃশ্যমান করে তোলে। প্রায় ৬,০০০-১২,৯০০ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ অংশের পথ অতিক্রম করে, সিসিপির অবশিষ্ট ৮৬,০০০ সৈন্য নারী-পুরুষ দক্ষিণ-পূর্ব চীনের জিয়াংসি সোভিয়েত থেকে দেশের উত্তর-পশ্চিমে শানসি প্রদেশের ইয়ানানে যাত্রাকে আরও দৃশ্যমান করে তোলে।
দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধ (১৯৩৫-৪৫) চলাকালীন, সিসিপি ইয়ানানে অবস্থান করে। স্থানান্তরের পর, জাতীয়তাবাদী পার্টির সরাসরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে, এটি ছিল সিসিপি-র প্রথম ঘাঁটি। এখানেই সিসিপি ধীরে ধীরে আরও প্রভাবশালী হয়ে ওঠে এবং ১৯৪৯ সালে জাতীয়তাবাদীদের পরাজিত করে মূল ভূখণ্ড চীনের উপর নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে। এই ঐতিহাসিক ঘটনা সিসিপির ভাগ্য ও রাজনৈতিক সত্তা পরিবর্তন করে দেয়। মাও সেতুং সিসিপির অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত (১৯৭৬ সালে) সিসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির দীর্ঘতম সময়ের চেয়ারম্যান ছিলেন।
পিআরসি প্রতিষ্ঠার পর, লং মার্চকে, সাধারণ চীনা জনগণের সাথে সিসিপি পার্টির ঐক্যের প্রতীক হিসেবে স্মরণ করা হয়। মাও-এর নেতৃত্বে সিসিপি লং মার্চকে একটি মহান যুগান্তকারী বিজয় হিসাবে প্রচার করতে সক্ষম হয়েছিল যা চীনা ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করেছিল। যদিও বাস্তবতার চেয়ে বৃহত্তর করে উপস্থাপন করার প্রচেষ্টায় সিসিপি লং মার্চের অনেক বিবরণ বাদ দিয়েছে।
কয়েক দশক ধরে, লং মার্চ নিয়ে গবেষণা এবং মিছিলে অংশগ্রহণকারী সংগ্রামীদের সাথে কথা বলা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এটি মূলত চীনা সরকারকে ইতিহাস পুনর্লিখন করার অনুমতি দেয় যেভাবে তারা উপযুক্ত মনে করেছিল। যার ফলে এই ঐতিহাসিক ঘটনার তথ্য যাচাই করা অসম্ভব করেছে। এই আবহে সূত্রে সিসিপি যেভাবে ইতিহাস উপস্থাপন করেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গবেষকরা। সিসিপি সংস্থা যে দূরত্বকে ১২.৯ হাজার কিলোমিটার বলে দাবি করে, অন্যরা খবর সূত্রে দূরত্বকে প্রায় ৬০০০ কিলোমিটার হিসাবে অনুমান করে, তবে সর্বাধিক উল্লেখিত অনুমান প্রায় ৯০০০ কিলোমিটার। দ্বিতীয়ত, সিসিপির লাল সৈন্যরা, মার্চের প্রথম কয়েক মাসে জাতীয়তাবাদী কুওমিনটাং বাহিনীর আকাশ এবং স্থলপথে আক্রমণের মুখোমুখি হয়। এর ফলে লাল সেনার অধিকাংশ-এর বেশি মৃত্যু হয়। অনুমান মত, জাতীয়তাবাদী বাহিনী এবং স্থানীয় (জাতীয়তাবাদী অনুগত) জমিদারদের আক্রমণের পাশাপাশি রোগ, মরুভূমি, অনাহার এবং কঠোর আবহাওয়ার পরিস্থিতিকে উত্তীর্ণ করে মাত্র ৮,০০০ সৈন্যরা বেঁচে থাকেন। তৃতীয়ত, মাও সেতুংয়ের সিসিপির নেতা হিসেবে উত্থান সিসিপির ইতিহাসের স্বাভাবিক গতিপথ ছিল না। মার্চের আগে, মাওকে সিসিপির কেন্দ্রীয় কমিটি তার নেতৃত্বের পদ থেকে সরিয়ে দেয়। তৃতীয়ত, মার্চের আগে, মাওকে সিসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বের পদ থেকে সরিয়ে দেয়; তাই সিসিপির নেতা হিসেবে উত্থান পিআরসির ইতিহাসে স্বাভাবিক গতিপথ ছিল না মাও সেতুংয়ের। প্রকৃতপক্ষে, জিয়াংসি থেকে পালানোর যাত্রাটি, ঝু দেই সংগঠিত করেছিলেন। পার্টি সদস্যদের মধ্যে মতানৈক্যের সুবিধা নিয়ে এবং পার্টি বিরোধীদের পরিস্থিতি ব্যবহার করে মাও সেতুং মার্চের সর্বোচ্চ নেতা ঘোষণা করেন। ১৯৪৯ দোষক থেকে কমিউনিস্ট রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান চীনের প্রধান শাসক হয়ে ওঠে। সিসিপির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করার জন্য ১৯৬৬ সালে চেয়ারম্যান মাও সেতুং, ‘সাংস্কৃতিক বিপ্লব’ ঘোষণা করেন। এই বিপ্লবকে চিত্রিত করা হয় “সামাজিক কুদর্শন” দূর করার জন্য যমন প্রাচীন রীতি, ধারণা, অভ্যস্ত এবং সংস্কৃতি। তবে প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল মাও-এর, সিসিপির ভিতরে এবং বাইরের শত্রুদের নির্মূল করা। এটি ১৯৬৬ সালের মে মাসে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিফলিত হয় যেখানে মাও-এর সাংস্কৃতিক বিপ্লবের ধারণা তুলে ধরা হয়েছে। সেই রিপোর্ট দ্বারা দাবি করা হয়েছে যে, সিসিপি “প্রতিপক্ষ বিপ্লবী সংশোধনবাদীদের” দ্বারা অনুপ্রবেশ করেছে, সেই সব কর্মচারীকে যারা “ধনতান্ত্রিক একনায়কত্ব” প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র করছে।
মাও-এর বার্তাকে যুবসমাজ, বিশেষত শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে স্বাগত জানানো হয়েছিল। সিসিপি প্রতিপক্ষ বিপ্লবীদের ‘রেড গার্ডস’ নামে প্যারামিলিটারি ইউনিটের অধীনে অনুপ্রবেশের জন্য নিযুক্ত করেছিল। ফলে সিসিপি’র রেড গার্ডস যাদের “সংশোধনবাদী” বা “রাজনৈতিক শত্রু” মনে করতো, তাদের উপর অত্যাচার চালাতো। রেড গার্ডস শারীরিক নির্যাতন, অত্যাচার ছাড়াও জনসম্মুখে অপমান করতো, যার কারনে অধিকাংশ মানুষই আত্মহত্যা বা মৃত্যু স্বীকার করতো। হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি, রেড গার্ডস সাংস্কৃতিক নিদর্শন এবং ঐতিহাসিক স্থানও ধ্বংস করত।
সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা সিসিপি’র মধ্যে বিদ্রোহের রূপ নিতে শুরু। রেড গার্ডস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায়, চীনা সেনাবাহিনী (PLA) হস্তক্ষেপ করে, যা সহিংসতা ও বেসামরিক হত্যাকাণ্ডকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এরপর মাও সেতুং প্রায় ১৬ মিলিয়ন শহরের যুবকদের “পুনঃশিক্ষা”র জন্য ঘোষণা করেন, যাতে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের কারণে সৃষ্ট সহিংসতা বন্ধ করা যায়। মাও সেতুং-এর মৃত্যুর পর ১৯৭৬ সালে সাংস্কৃতিক বিপ্লব আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়। এই দশ বছর ধরে চলা বিপ্লব সিসিপিকে একমাত্র বৈধ চীনা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি স্থাপনে সফল হয়েছিল, যা ছিল নিছক বল প্রয়োগের মাধ্যমে।
সিসিপি’র আনুষ্ঠানিক হিসাব (১৯৮০) অনুযায়ী, বেইজিং-এ প্রায় ১,৮০০ জন মানুষ মারা গিয়েছিল। কিন্তু স্ট্যানফোর্ডের সমাজবিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু ওয়াল্ডারের গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে যে, প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ১.৬ মিলিয়ন। এটি ভুল হবে যদি ধরে নেওয়া হয় যে সাংস্কৃতিক বিপ্লব ছিল শুধুমাত্র একটি ঘটনামাত্র যা চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) চীনে তাদের পা রাখার চেষ্টা করে। সাংস্কৃতিক বিপ্লবের শেষের একটু বেশি সময় পরে, চীন আবার একটি ভয়াবহ গণহত্যার মুখোমুখি হয়, যা ১৯৮৯ সালের তিয়েনআনমেন স্কোয়ার গনহত্যা নামে পরিচিত। সিসিপি’র সামরিক শাখা চীন সেনার দ্বারা ছাত্র-নেতৃত্বাধীন অহিংস বেসামরিক প্রতিবাদকে নির্মমভাবে দমন করা সম্ভবত চীনের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকারতম ঘটনা। চীনা সেনাবাহিনী’র ভূমিকা হল সিসিপি’র রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করা, এবং এর মাধ্যমে সিসিপি’র রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বৈধতা বজায় রাখা। মাও-এর মৃত্যুর পর সিসিপি’র নেতৃত্বের স্থলাভিষিক্ত হওয়া ডেং জিয়াওপিং ১৯৮০-এর দশকে পি. এল. এ-র উপর আরও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টায় সামরিক আধুনিকীকরণ অভিযান শুরু করেন। তবে, ১৯৮৯ সালে তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে সিসিপি’র দুর্নীতির বৃদ্ধি এবং প্রবল রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতার দাবিতে প্রতিবাদ সিসিপি’র বৈধতা ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের জন্য বিপত্তির আশঙ্কা দেখা যায়। এই প্রতিবাদের চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়ায় সিসিপি সামরিক পদক্ষেপের মাধ্যমে দমন করার সিদ্ধান্ত নেয়। সিসিপি, প্রতিবাদকারীদের “প্রতিপক্ষ বিপ্লবী” হিসেবে সনাক্ত করে (ঠিক যেমন সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় দেখা গিয়েছিল। সিসিপি প্রায় ২০,০০০ চীনা সৈন্যকে তিয়েনআনমেন স্কোয়ার ঘিরে রাখতে নির্দেশ দেয়।
১৯৮৯ সালের ৪ জুনে প্রতিবাদকারীদের উপর ট্যাঙ্ক এবং হাতিয়ার প্রয়োগ করে গণহত্যার জন্য দেন শিয়াওপিং “দল ও দেশের র্গঠন লৌহ এবং ইস্পাতের প্রাচীর” আদর্শ পরিবর্তন হিসাবে প্রশংসা করেন। সিসিপি’র বিবৃতি অনুযায়ী, এই ঘটনায় প্রায় ২০০ জন নাগরিক মারা গিয়েছিল। ২০১৭ সালে প্রকাশিত একটি যুক্তরাজ্যের নথি তথ্য সূত্রে জানা যায় তিয়েনআনমেন স্কোয়ার ঘোটনায়, প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা কমপক্ষে ১০,০০০। চীনের ইতিহাসে, পিআরসি প্রতিষ্ঠার পর, বেসামরিক নাগরিকদের উপর নির্যাতন করে গণহত্যার এটি প্রথম ঘটনা। ফলে রয়ে গিয়েছিল চীন সেনার মধ্যে দুর্নীতি। এবং যারা বিরোধিতা করেছিল তারা প্রতিক্রিয়া ভোগ করেছিল, যারা সিসিপি’র সঙ্গে সহযোগিতা করেছিল তারা শক্তিশালী অবস্থানে পুরস্কৃত হয়েছিল।
চীনে বর্তমান সময়ের মানবাধিকার অবস্থানের তুলনায় উল্লিখিত ইতিহাসের ঘটনাগুলি প্রভাব বেশি ছিল। ২০১২ সালে সিসিপির নেতৃত্ব নেন শি জিনপিং। শি জিনপিং-এর নেতৃত্বে চীনে সামাজিক নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়ছে এবং চীনকে বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা ক্রমাগত চালানো হচ্ছে। চীনের রাজনৈতিক সংশোধন ক্ষমতা এখন “রাজনৈতিক অনুশাসন” বজায় রাখার একটি প্রতিষ্ঠিত ধারণা। ভিন্নমতাবলম্বী, সংখ্যালঘু, মানবাধিকার রক্ষাকারী, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বা নাগরিক সমাজের গোষ্ঠীগুলির নির্যাতিত দমনে চীনকে ‘নজরদারি রাষ্ট্র’ করে তোলে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে চীনের নেতিবাচক বৈশ্বিক চিত্রকে বাড়িয়েছে।
বর্তমানে, চীন সরকার আঞ্চলিক দাবিগুলি সূত্রে চীনের আক্রমণাত্মক আচরণ তার সীমানার বাইরেও দেখা যাচ্ছে। যেমন তাইওয়ানের চারপাশে সামরিক মহড়া কিম্বা দক্ষিণ চীন সাগর বিতর্কে আক্রমণাত্মক সম্পৃক্ততা, বা হংকং-এ দমনমূলক রাজনৈতিক জলবায়ু। এছাড়া রয়েছে বৈশ্বিক সাইবার নজরদারি অথবা ভারত মহাসাগর এবং দক্ষিণ চীন সাগরে ‘গবেষণা’ জাহাজের ব্যবহার করে তত্বাবধান চালানো, সবই চীনের ভীতিপ্রদর্শন প্রচেষ্টা। গত কয়েক বছরে প্রায়ই দেখা গেছে, চীন সীমান্ত অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা এবং প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে বিরোধ বিরোধে জরিয়ে পড়েছে, প্রধানত ভারতের সাথে। চীনা নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলি সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় ইতালি আয়োজিত সাম্প্রতিক জি-7 শীর্ষ সম্মেলনে প্রতিফলিত হয়েছে। যদিও চীনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, সম্মেলনে উপস্থিত সমস্ত দেশ চীনকে ‘ক্ষতিকর শক্তি’ হিসাবে উল্লেখ করে। সমসাময়িক সময়ে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি চীনে ক্ষমতায় একাধিপত্য অধিকার লাভ করেছে। সিসিপি’র ১০৩ তম বর্ষপূর্তিতে, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে ইতিহাসের সেই সময়গুলি স্মরণ করা হয় যা চীনে সিসিপি’র ভিত্তি স্থাপন করেছে, বর্তমান চীনের ঘটনাবলীর পরিস্থিতি বুঝতে।