যতই দিন যাচ্ছে, মেওয়াটের বিভিন্ন এলাকা থেকে জিহাদী তাণ্ডবের নতুন নতুন ঘটনা সামনে আসছে। ঘটনার দিন স্থানীয় একটি হাসপাতালে ঢুকে ব্যাপক তান্ডব চালায় ইসলামিক মৌলবাদী জনতা। বেছে বেছে হিন্দুদের মারধর করা হয়। নার্স, চিকিৎসক থেকে শুরু করে বাদ যাননি হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীরাও।
জানা গিয়েছে, খেড়লা চকের পাশেই অবস্থিত আলোয়ার হাসপাতাল। ঘটনার দিন পাথরবাজীর বিরোধিতা করায় এক যুবককে তাড়া করতে করতে হাসপাতালে চত্বরে পৌঁছে যায় একদল উন্মত্ত ইসলামিক মৌলবাদী। যুবকটি তাঁর গাড়ি রেখে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যে হাসপাতালে পৌঁছে যায় আরও কিছু ইসলামিক মৌলবাদী।
ইতিমধ্যে হাসপাতালে হামলার সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এসেছে। সেই ফুটেজে দেখা গিয়েছে যে একদল ইসলামিক মৌলবাদী হাসপাতালে পৌঁছে যায়। হাসপাতাল লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে একদল ইসলামিক মৌলবাদী, অন্যদিকে আর এক দল হাসপাতালের বাইরে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙ্গার চেষ্টা করতে থাকে।
এরই মধ্যে একদল ইসলামিক মৌলবাদী হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে যায়। ভিতরে গিয়েই হিন্দু নার্স ও চিকিৎসকদের আলাদা করা হয়। মুসলিম চিকিৎসক ও নার্সদের আলাদা ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরই হাসপাতালের ভিতরে তাণ্ডব শুরু হয়। হিন্দু নার্সদের বেধড়ক মারধর করে ইসলামিক মৌলবাদীরা। এমনকি কয়েকজন নার্সদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। হাসপাতালের নামকরা চিকিৎসক ডাঃ শিখরকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
ইসলামিক মৌলবাদীদের হামলা থেকে বাদ যাননি হাসপাতালে চিকিৎাধীন থাকা রোগীরা। হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা রোগীদের তুলে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারধরে কয়েকজনের পা ও হাত ভেঙে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন একজন হিন্দু গর্ভবতী মহিলা। একটি হিন্দি দৈনিকে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মৌলবাদীদের হাতেপায়ে ধরেও রেহাই পাননি ওই গর্ভবতী মহিলা। লাঠি দিয়ে তাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। ইসলামিক মৌলবাদীদের মারে ওই গর্ভবতী হিন্দু মহিলার হাত ও পা ভেঙে গিয়েছে।
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে নাসির ও অঞ্জুম নামে দুই মুসলিম যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩১শে জুলাই মেওয়াটের নুহতে হিন্দুদের ধর্মীয় শোভাযাত্রায় হামলা চালায় ইসলামিক মৌলবাদীরা। সেই হামলায় দুইজন পুলিশকর্মীর পাশাপাশি একাধিক হিন্দু খুন হন। দীর্ঘ সময় ধরে বিস্তীর্ণ এলাকায় তাণ্ডব চালায় ইসলামিক মৌলবাদীরা। সেই সময় হামলার মুখে পড়ে আলোয়ার হাসপাতাল।
ছবি: হাসপাতালের বাইরে থাকা সিসিটিভি ফুটেজের স্ক্রিনশট