মেওয়াট(Mewat) জেলার নুহতে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হিসেবে চালানোর চেষ্টা করলেও বাস্তবে যে তা হিন্দুদের টার্গেট করে হিংসা ছিল, তা একাধিক ঘটনায় প্রমাণ হয়। সদ্য আসা তথ্য অনুযায়ী, হিংসার প্রথম এবং প্রধান টার্গেট ছিল হিন্দুরা। বেছে বেছে হিন্দুদের গাড়ি পোড়ানো হয়েছে, তাও আবার দুই কিংবা দশটি নয়, শত শত গাড়ি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ কর্মীর দায়ের করা অভিযোগে তেমনই তথ্য উঠে এসেছে।
ঘটনার দিন অর্থাৎ জলাভিষেক যাত্রার দিন, শোভাযাত্রায় বজরং দলের কার্যকর্তা এবং সদস্যদের একটি গাড়িও ইসলামিক মৌলবাদী জনতার হাত থেকে রক্ষা পায়নি। সবকটি গাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরে ইসলামিক মৌলবাদী জনতা আশেপাশের হিন্দু এলাকায় হানা দেয়। রাস্তার ধারে পার্কিং করা গাড়িগুলোতে ভাঙচুর চালানো হয়। তারপর পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে যে হামলাকারীরা আগে থেকে পরিকল্পনা করে এসেছিল। যুবক থেকে কমবয়সী ছেলেরাও বোতলে পেট্রোল ভরে সঙ্গে নিয়ে এসেছিল। তারপর বেছে বেছে হিন্দুদের মোটর বাইক এবং গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। রাস্তায় চলতি গাড়িকে দাঁড় করিয়ে ভাঙচুর চালানো হয় এবং আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার সময় উপস্থিত থাকা পুলিশ কর্মীরাও একই অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন। হামলার শিকার হেড কনস্টেবল জিতেন্দ্রর দায়ের করা অভিযোগ অনুযায়ী, ঘটনার দিন নলহার গেটে ডিউটিতে ছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল কনস্টেবল নবীন। লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন যে তাঁর কাছে খবর আসে যে নুহ-নলহার রোডে কিছু লোক গাড়ি দাঁড় করিয়ে ভাঙচুর করছে এবং আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। সে খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে ছুটে যান দুজনে। সেখানে তখন প্রায় ১৫০-২০০ জন পথ চলতি গাড়ির উপরে তাণ্ডব চালাচ্ছে। উন্মত্ত জনতাকে মাইকিং করে শান্ত করার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু উল্টে আক্রমণের শিকার হন হেড কনস্টেবল জিতেন্দ্র। লাঠি দিয়ে মারধর করা হয় তাকে। হুমকি দেওয়া হয় চুপচাপ চলে যেতে, নাহলে প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকি দেয় ইসলামিক মৌলবাদীরা। কোনরকমে প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
নুহ সদর থানায় লিখিত অভিযোগে জিতেন্দ্র জানিয়েছেন যে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন যে শামীম, আবিদ ও ভাকিল গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগাচ্ছে। আগে থেকে তাদের চিনতেন বলে সেদিন প্রাণে বেঁচে যান তিনি, এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। এদিকে জীতেন্দ্রর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৮, ১৪৯, ১৮৬, ৩৪১, ৩৫৩, ৪২৭, ৪৩৫ ও ৫০৬ ধারার পাশাপাশি অস্ত্র আইনের ২৫ নম্বর ধারায় মামলা দায়ের করেছে।