ছাত্রীদের বাথরুমে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েছিলেন কনভেন্ট স্কুলের প্রিন্সিপাল। আর তা নজরে আসার পরই ক্ষোভ আছড়ে পড়লো ওই স্কুলে। স্কুলের প্রিন্সিপালকে ধোলাই দিলেন ক্ষুব্ধ অভিভাবক এবং স্থানীয় হিন্দুরা। ঘটনা মহারাষ্ট্রের পুনে শহরের।
জানা গিয়েছে, পুনে শহরের আম্বি অঞ্চলের বিখ্যাত কনভেন্ট স্কুল হিসেবে পরিচিত ডিওয়াই পাতিল হাই স্কুল। ওই স্কুলের প্রিন্সিপাল আলেকজান্ডার কোয়াতেস রেইড কাউকে কিছু না জানিয়ে ছাত্রীদের বাথরুমে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়ে দেন। ওই প্রিন্সিপালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ওই বিদ্যালয়ের আরও কয়েকজন খ্রিস্টান শিক্ষক।
গত ৬ই জুলাই, স্কুলের কয়েকজন ছাত্রীর নজরে আসে যে বাথরুমে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে। তখন ছাত্রীরা ঘটনার কথা তাদের অভিভাবকদের জানান। মুহুর্তের মধ্যে ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্কুলে অন্যান্য অভিভাবকরাও ভিড় করেন। খবর পেয়ে স্কুলে পৌঁছে যায় বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের সদস্যরা।
অভিযোগ, হাতের কাছে পেয়ে ওই খ্রিস্টান প্রিন্সিপালকে মারধর করেন অভিভাবক এবং হিন্দু সংগঠনের প্রতিনিধিরা। ইতিমধ্যে ওই খ্রিস্টান প্রিন্সিপালকে মারধর করার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। আর সেই সব ভিডিও বেশি করে ছড়িয়ে হিন্দুদের টার্গেট করছেন ইসলামিক মৌলবাদীরা।
দেখা গিয়েছে যে, ওই প্রিন্সিপালকে মারধর করার পর আসরে নেমে পড়েছেন একদল ইসলামিক মৌলবাদীরা। তাঁরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল করে হিন্দুদের আক্রমণ করছেন। ওই প্রিন্সিপালের দোষ গোপন করে প্রচার করা হচ্ছে যে কিভাবে ভারতে সংখ্যালঘুদের আক্রমণ করা হচ্ছে, এই ঘটনা নাকি তার প্রমাণ। এমনকি ইসলামিক মৌলবাদীরা মিথ্যা প্রচার করছে যে ওই প্রিন্সিপালকে মারধর করা হয়েছে কারণ তিনি স্কুলে খ্রিস্টান প্রার্থনা চালু করেছিলেন। এইভাবে সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের আক্রমণ করছেন হিন্দুত্ববাদীরা, এমন কথাও প্রচার করা হচ্ছে। যদিও এটি অর্ধ সত্য এবং আসল অপরাধকে গোপন করার প্রচেষ্টা।
কারণ দায়ের করা অভিযোগে এটা স্পষ্ট যে ওই প্রিন্সিপাল ছাত্রীদের বাথরুমে সিসিটিভি লাগিয়েছিলেন, যে কারণেই তিনি অভিভাবক এবং হিন্দুদের হাতে মার খেয়েছেন।
তাছাড়া ওই স্কুলের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ এনেছেন বহু অভিভাবক। স্কুলের হিন্দু ছাত্রদের খ্রিস্টান ধর্মীয় প্রার্থনা করানো হতো। কোনও হিন্দু ছাত্র কিংবা ছাত্রী প্রতিবাদ করলেও তাকে কটু কথা শুনতে হতো। স্কুলে হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব কিংবা অনুষ্ঠান পালনে নিষেধাজ্ঞা ছিল। এমনকি বিভিন্ন সময়ে হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব কিংবা শ্রদ্ধেয় ভগবান সমন্ধে অপমানসূচক মন্তব্য করতেন। কিন্তু যেহেতু নিজের সন্তানের পড়াশোনার বিষয় ছিল, তাই অভিভাবকরা চুপ করে থাকতেন।
কিন্তু ছাত্রীদের বাথরুমে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর পরই ক্ষোভ আছড়ে পড়ে। আপাতত, স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রিন্সিপাল এবং আরও কয়েকজন খ্রিস্টান শিক্ষককে সাসপেন্ড করেছেন। অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
Image Credits: OpIndia
( Credits: CLICK HERE to read the original Story by OpIndia )