ভারতের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জোগাড় করতে নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ভারতের নাগরিকদের হানি ট্র্যাপের শিকার বানানো। এবারে এমনই এক হানি ট্র্যাপের শিকার হলেন একটি কুরিয়ার সংস্থায় কাজ করা ডেলিভারি বয়। শেষমেষ তাকে গ্রেপ্তার করলো কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স।
গত ২৫শে আগস্ট কলকাতা পুলিশের টাস্ক ফোর্স ওই ডেলিভারি বয়কে গ্রেপ্তার করে। ধৃতের নাম ভক্তবংশী ঝা। সে বিহারের বাসিন্দা। কয়েকমাস আগেই সে দিল্লী থেকে ট্রান্সফার হয়ে কলকাতায় আসে।
জানা গিয়েছে, ওই কুরিয়ার বয় পূর্বে দিল্লীতে কাজ করতো। গত বছরের অক্টোবর মাস নাগাদ ফেসবুকের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় আরুশী শর্মা নামে একজনের। দুজনের মধ্যে কথা হতে থাকে চ্যাটের মাধ্যমে। এভাবে চলতে চলতে ওই ডেলিভারি বয়কে প্রেমের জালে ফাঁসায় ওই তরুণী। পরে দুজনের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর আদান প্রদান হয়। তারপর থেকেই দুজনে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে কথা বলতো।
গোয়েন্দারা বলছেন, দুজনে ভিডিও কলে কথা বলত প্রায়ই। আর এইভাবেই ডেলিভারি বয়কে বশে নিয়ে আসে ওই তরুণী। তারপর থেকেই ওই তরুণীর কথা মতো বিভিন্ন সেনা ছাউনির ছবি, সেনাদের গতিবিধির খবর পাঠাতে থাকে ওই ডেলিভারি বয়। এমনকি কোম্পানি তাকে কলকাতায় ট্রান্সফার করে দিলেও তথ্য পাঠানো বন্ধ হয়নি। কলকাতার বিভিন্ন তথ্যও সে পাঠায় ওই তরুণীকে।
গোয়েন্দারা বলছেন যে আরুশি শর্মা নামে ওই ফেসবুক প্রোফাইলে ঠিকানা অমৃতসর লেখা থাকলেও আদতে তা পরিচালিত হতো পাকিস্তান থেকে। পাকিস্তানের আইএসআই-এর কোনও মহিলা অফিসার ওই প্রোফাইল চালাতেন। পরিকল্পিতভাবে ওই ডেলিভারি বয়কে হানি ট্র্যাপে ফাঁসানো হয়েছে। আর সেই হানি ট্র্যাপের শিকার হয়ে দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাকিস্তানে পাঠিয়েছেন ওই ডেলিভারি বয়।
গোয়েন্দারা ওই ডেলিভারি বয়ের ফোন পরীক্ষা করে দেখেন যে দেশের বিভিন্ন স্থানের সেনা ছাউনি ও তাদের তথ্য পাকিস্তানে পাঠানো হয়েছে। আপাতত নিজেদের হেফাজতে নিয়ে ওই ডেলিভারি বয়কে জেরা করছেন গোয়েন্দারা।