Hindu Voice Desk: লাভ জিহাদের বলি হলেন আর একজন হিন্দু মেয়ে। বেঙ্গালুরুর ভাড়া করা ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হল হিন্দু মহিলা মহালক্ষ্মী(২৯)-র দেহ। ওই ভাড়া করা ঘরের ফ্রিজ থেকে মহালক্ষ্মীর দেহের ৩০ টিরও বেশি টুকরো উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় মহালক্ষীর প্রেমিক মহম্মদ আশরাফকে খুজছে পুলিশ।
আলাদা থাকতেন মহালক্ষ্মী
খবর অনুযায়ী মহালক্ষ্মী বেঙ্গালুরুর বাইলিকাল এলাকার একটি ভাড়া ঘরে থাকতেন। স্বামীর থেকে আলাদা হওয়ার পর ওই ঘরে থাকতে শুরু করেন মহালক্ষী। তাঁর মেয়ে থাকতেন প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে। একটি ফ্যাশন কোম্পানিতে চাকরি করতেন মহালক্ষী। পরে মহম্মদ আশরাফ নামে একজন যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন মহালক্ষ্মী, এমনটাই জানিয়েছেন মহালক্ষ্মীর প্রাক্তন স্বামী।
ফ্রিজ থেকে দেহ উদ্ধার
গত ২১শে সেপ্টেম্বর মহালক্ষীর দেহ উদ্ধার হয় তাঁরই বাড়ির ফ্রিজে। মহালক্ষ্মীর টুকরো টুকরো দেহ রাখা ছিল ফ্রিজের ভিতরে। খবর অনুযায়ী মহালক্ষীর দেহকে ৩০ থেকে ৪০টি টুকরো করা হয়েছিল। মহালক্ষ্মীর ফ্ল্যাটে থাকা ১৬৫ লিটার ফ্রিজের ভেতরে দেহের টুকরোগুলি রাখা ছিল।
মহালক্ষ্মীর পিতা জানিয়েছেন যে তাঁরা মাঝে মাঝেই মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে ওইখানে আসতেন। ফোনে কথা হতো প্রায়ই। কিন্তু গত ২রা সেপ্টেম্বর থেকে মহালক্ষ্মীর ফোন বন্ধ ছিল। মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে মহালক্ষ্মীর পিতা ও মাতা বাইলিকাল এলাকার ভাড়া করা ফ্ল্যাটে এসে উপস্থিত হন। ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে ব্যাপক দুর্গন্ধ আসছিল। প্রতিবেশীরাও অভিযোগ জানান যে ফ্ল্যাট থেকে খুবই দুর্গন্ধ আসছে বেশ কয়েকদিন ধরে। তারপরই পুলিশকে খবর দেন তাঁরা। পুলিশ এসে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢোকে।
ফ্রিজে দেহের বহু টুকরো, শুরু হয়েছে পচন
ভিতরে ঢুকতেই ফ্রিজের দিকে নজর পড়ে সবার। ফ্রিজের উপরে তখনো মহালক্ষ্মীর দেহের একটি টুকরো রাখা ছিল। ফ্রিজ খুলতেই ভেতরে দেখা যায় যে মহালক্ষীর দেহের একাধিক টুকরো রয়েছে। সেই দেহের টুকরোগুলিতে ইতিমধ্যেই পচন ধরেছে। সেগুলিতে পোকা কুরে কুরে খাচ্ছে। তারপরই পুরো বাড়িটি ঘিরে ফেলে সিল করে দেয় পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত।
প্রাক্তন স্বামীর অভিযোগ
এদিকে ঘটনার পরেই সামনে আসেন মহালক্ষ্মীর প্রাক্তন স্বামী হেমন্ত দাস। তিনি জানান যে তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মহালক্ষ্মী বাইলিকাল এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। আশরাফ নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন মহালক্ষ্মী। কিছুদিন প্রেম করার পর মহালক্ষীকে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে আশরাফ। এমনকি কয়েক মাস আগে মহালক্ষ্মী স্থানীয় থানায় আশরাফের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কারণ আশরাফ তাকে ব্ল্যাকমেল করে আসছিল, অভিযোগ করেছিলেন মহালক্ষ্মী। এদিকে ঘটনার পরই আশরাফ পলাতক। হেমন্ত দাসের অভিযোগ যে আশরাফই এই ঘটনার পেছনে রয়েছে।
খোঁজ চলছে আশরাফের
এদিকে ঘটনার পরই পলাতক আশরাফ পুলিশ আশরাফের খোঁজে ইতিমধ্যে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশের এক কর্তা সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন যে আশরাফ অন্য রাজ্যের বাসিন্দা। সে বেঙ্গালুরুতে একটি সেলুনে কাজ করতো। আমরা তদন্তে নেমে এটা জানতে পেরেছি যে আশরাফের সঙ্গে মহালক্ষ্মীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে ঘটনার পর থেকেই আশরাফ বেঙ্গালুরু ছেড়ে অন্য রাজ্যে পালিয়েছে। তাঁর খোঁজে ইতিমধ্যেই বিশেষ টিম কাজ করছে বলেও জানানো হয়েছে বেঙ্গালুরু পুলিশের তরফে।
লাভ জিহাদ ও দ্বিতীয় শ্রদ্ধা
এদিকে মহালক্ষীর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় সারা দেশ জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মহালক্ষ্মীর ঘটনাকে দিল্লীর শ্রদ্ধা ওয়াকারের ঘটনার সঙ্গে তুলনা করছেন। ঘটনায় একাধিক হিন্দু সংগঠনও নিজেদের ক্ষোভ ব্যক্ত করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভও উগরে দিয়েছেন নেটিজেনরা। তাঁরা বলছেন, শ্রদ্ধা ওয়াকারের নৃশংস ঘটনার পরও শিক্ষা নেননি হিন্দু মেয়েরা। লাভ জিহাদের বলি হওয়া শ্রদ্ধা ওয়াকারকে ৩৫ টুকরো করে দিল্লির জঙ্গলে ফেলে দিয়েছিলেন আফতাব। দেহের কিছু অংশ ফ্রিজ থেকে উদ্ধার হলেও বাকি অংশ ও শ্রদ্ধার হাড়গোড় দিল্লির জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয়। এমন নৃশংস ঘটনার পরেও লাভ জিহাদ সম্বন্ধে সচেতন নয় হিন্দু মেয়েরা। অনেকেই বলছেন এমন ঘটনা থেকে শিক্ষা না নিলে বারবার এমন ঘটনা ঘটতে থাকবে।