উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্য ত্রিপুরার হিন্দুদের উপর নেমে এলো ভয়াবহ জিহাদি আক্রমণ। বেছে বেছে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা চালালো উন্মত্ত ইসলামিক মৌলবাদী জনতা। বেছে বেছে হিন্দুদের দোকানে লুটপাট ও ভাঙচুর চালানো হলো। হিন্দুদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে শুধুমাত্র লুটপাট করেই ক্ষান্ত হয়নি, আগুন লাগিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। গতকাল অর্থাৎ ৬ই অক্টোবর, রবিবার এমনই ঘটনা ঘটেছে উত্তর ত্রিপুরা জেলার কদমতলা বাজারে।
জানা গিয়েছে, কদমতলা বাজার পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুর্গা পূজার আয়োজন করেছিল একটি ক্লাব। চাঁদা সংগ্রহের কাজ করছিলেন ক্লাবেরই কয়েকজন ছেলে। দুইজন মুসলিম ব্যক্তিকে চাঁদা চাওয়া ঘিরেই ঘটনার সূত্রপাত। ওই মুসলিম লোকেরা অভিযোগ তোলেন যে তাঁরা চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় তাদেরকে মারধর করা হয়েছে। এই অভিযোগ ছড়িয়ে পড়তে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাস্থলে ভিড় জমান কয়েকশ স্থানীয় মুসলিম জনতা। এলাকায় উত্তেজনামূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বিশাল পুলিশ বাহিনী আসে ঘটনাস্থলে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরবর্তী সময় মাঠে নামে ইসলামিক মৌলবাদীদের একটি দল। তাঁরা মিছিল করে কদমতলা থানায় যায় এবং দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাতে থাকে। পুলিশের তরফে ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও খুশি হয়নি ইসলামিক মৌলবাদীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে গতকাল অর্থাৎ ৬ই অক্টোবর বিকেল নাগাদ কয়েকশো ইসলামিক মৌলবাদী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কদমতলা বাজারে হামলা চালায়। বেছে বেছে হিন্দুদের দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালানো হয়। লুটপাটের পর দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়। জিনিসপত্র রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। হামলা থেকে বাদ যায়নি বাজারের পাশে থাকা হিন্দুদের বাড়িঘর। হিন্দুদের বাড়িঘর ভাঙচুর চালানো হয়। বেশ কয়েকটি গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। হিন্দু মহিলাদেরকেও মারধর করা হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং দাঙ্গাবাজ ইসলামিক মৌলবাদীদের তাড়িয়ে দেয়।
পরবর্তীতে সন্ধ্যায় কদমতলা বাজারে আবার হামলা চালায় ইসলামী মৌলবাদীরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, সন্ধ্যার সময় হিন্দুদের বেশ কয়েকটি দোকানপাট ও বাড়ি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় উন্মত্ত ইসলামিক মৌলবাদীরা। বিশাল পুলিশ বাহিনী শূন্যে গুলি চালিয়ে দাঙ্গাবাজ ইসলামিক মৌলবাদীদেরকে তাড়িয়ে দেয়।
বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে। বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি এলাকায় প্রশাসনের তরফে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রচার চলছে। বিশেষ বাহিনী নিয়মিত টহল দিচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে যে অনেকেই সর্বস্ব হারিয়েছেন। অনেকেই আজ বাজারে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখতে এসেছিলেন। তাঁরা নিজেদের দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট ও ভাঙচুর অবস্থায় দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। অনেকেই জানিয়েছেন যে তারা কি করবে বুঝতে পারছেন না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলেও তাদের যে এই বিশাল ক্ষতি হয়েছেতা কিভাবে সামাল দেবেন, তাও জানেন না বলে জানিয়েছেন তাঁরা।