প্রেমের ফাঁদে ফেলে হিন্দু তরুণীকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করতে পারলেই পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। এমন লোভনীয় অফার দিচ্ছে একটি চক্র। আর এই চক্র সক্রিয় রয়েছে বেশ কিছুদিন ধরেই। মহারাষ্ট্রের দাউন্ড এলাকায় এই চক্র গত দুই বছরে প্রায় ২০০ হিন্দু তরুণীকে ধর্মান্তরিত করেছে। টাইমস নাও-এর তদন্তে উঠে এলো এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
রিপোর্টে এমন তথ্য উঠে এসেছে যে হিন্দু যুবকদেরও ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে অন্য কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। অভিযোগ, সুন্দরী মুসলিম তরুণীদের ব্যবহার করে হিন্দু যুবকদের প্রেমের ফাঁদে ফেলা হচ্ছে। তারপর আইন মেনে বিয়ে করছে। কিন্তু বিয়ের পরই নানারকমভাবে চাপ সৃষ্টি করে হিন্দু যুবককে ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে। তারপর ধর্মান্তরিত হিন্দু যুবকের সুন্নতও করাচ্ছে ওই চক্রটি। টাইমস নাও(Times Now) প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, গত দুই বছরে ওই এলাকায় প্রায় ১০০ হিন্দু যুবক ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছে।
ওই রিপোর্টে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এক স্থানীয় বাসিন্দাকে উদ্ধৃত করে রিপোর্টে বলা হয়েছে যে এই ধর্মান্তরণ চক্রের সঙ্গে নামকরা রাজনৈতিক নেতা এবং প্রশাসনের লোকজনের যোগসাজশ রয়েছে। এমনকি পুলিশের তেমন সহযোগিতা পাওয়া যায় না বলেই অভিযোগ।
লাভ জিহাদের শিকার হওয়া এক হিন্দু তরুনীর সঙ্গেও কথা বলেছে সংবাদ সংস্থা টাইমস নাও। লাভ জিহাদের শিকার তরুণী জানায়, “আমি ভেবেছিলাম যে ছেলেটি হিন্দু এবং প্রেম করলে আমার পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নেবে। কিন্তু আইনি বিয়ে করতে গিয়ে যখন কাগজপত্র দেখলাম, তখনই জানতে পারলাম যে ছেলেটি মুসলিম। আমি তা দেখে অবাক হয়ে যাই এবং তাকে জিজ্ঞেস করি যে সে কিভাবে আমার সঙ্গে এমন প্রতারণা করতে পারলো। তাঁর সঙ্গে আরও কিছু যুবক ও লোকজন ছিল। তাঁরা আমাকে ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্য বোঝাতে থাকে। আমি যখন কোনোমতেই রাজি হলাম না, তখন তাদের একজন পুরো পরিকল্পনার কথা বলে।”
টাইমস নাও তাদের প্রকাশিত রিপোর্টে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তির বক্তব্য তুলে ধরেছে। সেই ব্যক্তির কথায়, ‛যদি কোনও হিন্দু তরুণী ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম যুবককে বিয়ে করে, তবে ওই যুবক পুরস্কার হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা পায়। আর এসবের পিছনে ফারুক কুরেশি, কুমেল কুরেশি আশিব কুরেশি এবং ফারহান কুরেশি রয়েছে। কেউই এদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়না।’
ভুক্তভোগী এক হিন্দু যুবকের বক্তব্য তুলে ধরেছে টাইমস নাও। ওই যুবক তাঁর ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেয়। ওই যুবক জানায়, ‛আমি এক মুসলিম তরুণীকে ভালোবেসে বিয়ে করি। আমরা বিয়ের সময় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে বিয়ের পরে আমরা যে যার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবো। সেইভাবেই দিন কাটাচ্ছিলাম। কয়েকমাস পর থেকেই আমাকে হুমকি দিতে থাকে কামেল কুরেশি ওরফে হাজী সাহেব। একদিন আমার ঘরে কামেল কুরেশি একদল লোক নিয়ে ঢুকে পড়ে। তারপর আমাকে ধরে বেঁধে সুন্নত করায় কামেল কুরেশি ও আসিফ কুরেশি।’ ওই হিন্দু যুবকের মুসলিম স্ত্রী-র কথায়, ‛আমাকে বলা হয়েছিল যে স্বামী যদি ইসলামে ধর্মান্তরিত না হয়, তবে তাকে খুন করা হবে।’
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী যুবক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরই ঘটনার তদন্তে নেমে কামেল কুরেশি ওরফে হাজী সাহেবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে জেরা করেই এই চক্রের খোঁজ পায় পুলিশ। তখনই সামনে আসে যে দাউন্ড ও আশেপাশের এলাকায় শত শত হিন্দুকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করতে সক্রিয় রয়েছে একটি চক্র। আপাতত এই চক্রের বাকিদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।