© শ্রী আশীষ কুমার ব্যানার্জি
ওয়াকফ আইন কত ভয়ংকর ও খানগ্রেস আমাদের অর্থাৎ হিন্দুদের কি সর্বনাশ করে গেছে তা দেখুন। এই কালাকানুন অপসারন ও ওয়াকফ বোর্ড তুলে দেওয়ার দাবিতে গণআন্দোলন গড়ে তুলুন।
যেকোনো মূহুর্তে আপনাকে গৃহহীন করতে পারে এই আইন।
ওয়াকফ আ্যক্ট ১৯৯৩ এবং ২০১৩ সম্বন্ধে দু চারটি কথা জেনে রাখা ভাল। এই আ্যক্টটির বিরুদ্ধে একটি পিআইএল (PIL) নথীভুক্ত হয়েছে মহামান্য সর্বোচ্চ আদালতে, শুনানিও শ্রীঘ্রই শুরু হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রথম ওয়াকফ আ্যক্ট লিপিবদ্ধ হয় ১৯১৩ সালে, বৃটিশ জমানায়। পরে ১৯৫৫ সালে সেটি সামান্য সংস্কার করা হয়। ১৯৯৩ সালে এই আ্যক্ট নিঃশব্দে নীরবে সংখ্যার বিচারে লঘু কংগ্রেস সরকারের দ্বারা কালা কানুনে পরিনত হয়। পরে ২০১৩ সালে সেটিকে আরো একটু পরিমার্জন করে আক্ষরিক অর্থেই দেশের সাড়ে সর্বনাশ করে পাশ করিয়ে নেয় তদানিন্তন কংগ্রেস (সোনিয়া মনমোহন জুটি) সরকার।
কি আছে সেই কালা কানুনে? কিছুই বিশেষ নেই এটুকু ছাড়া যে, যে কোনও দিন যে কোনও সময়ে যে কোনও সম্পত্তি ভারতভূমির (জম্মু ও কাশ্মীর ব্যতিরেকে) যে কোনও জায়গায় ওয়াকফ আইনের বলে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে নোটিশ, উচ্ছেদ ও দখল করে নিতে পারবে রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড বা কেন্দ্রিয় ওয়াকফ কাউন্সিল। অর্থাৎ কাল যদি আমার / আপনার বাড়িটা রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড মনে করে বা ‘বিশ্বাস’ করে যে, সেটি ওয়াকফ সম্পত্তি, তাহলে ঐ উল্লিখিত আ্যক্টের ৪০ ধারা অনুযায়ী তারা ২৪ ঘন্টার মধ্যে আমাকে উচ্ছেদ করে আমার বাড়ির দখল নিয়ে নিতে পারবে। এবং সমস্ত সরকারি ও প্রশাসনিক অফিসার সেই নোটিশের মান্যতা দিয়ে ওয়াকফ বোর্ডকে দখল করার জন্য সহায়তা দিতে বাধ্য থাকবে।
তাহলে আমি কি করতে পারি? আমি কোনও আদালত বা আইনের দ্বারস্থ হতে পারব না। ওয়াকফ বোর্ড বা কাউন্সিলের বিরুদ্ধে কোনও আইনি প্রক্রিয়া চালু করা যাবে না। একমাত্র এবং শুধুমাত্র ওয়াকফ ট্রাইবুনালেই আমি আমার আপত্তি জানাতে পারি। আর সেই ট্রাইবুনাল, যা ওয়াকফ বোর্ডের পরামর্শেই গঠিত, যদি মনে করে যে, ওয়াকফ বোর্ড ঠিক কাজ করেছে তাহলে আমাকে আমার কষ্টার্জিত সেই বাড়ি ফিরিয়ে দেবার ক্ষমতা এমন কি সর্বোচ্চ আদালতেরও নেই – ওয়াকফ বোর্ড বা কাউন্সিলের বিরুদ্ধে কোনও আ্যপিল ভারতের কোনও আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে না।
ওয়াকফ বোর্ড নিয়ে মামলা না চালাতে পারার হতাশা থেকে এবং সুচারুভাবে তথ্যাদি সংগ্রহ করার পর অন্ধ্রপ্রদেশের (অবিভক্ত) উচ্চ আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘ভারতে সবচাইতে বেশী সম্পত্তির মালিকানা আছে ভারতীয় সেনা বাহিনীর, তারপর ভারতীয় রেলের এবং তৃতীয় স্থানে আছে ওয়াকফ বোর্ড’। আশা করি ভয়াবহতাটা বোঝাতে এটুকুই যথেষ্ট। এই প্রভুত পরিমান সম্পত্তি এরা করেছেন নির্বিচারে একের পর এক সম্পত্তি ওয়াকফ বোর্ডের দখলে এনে যার জন্য এক কানাকড়িও এদের ক্ষতিপুরন দিতে হয় নি। ভারতবর্ষের পায়ের তলা থেকে জমি হু হু করে সরে যাচ্ছে ভারতবাসির অজান্তে, কংগ্রেসী বদান্যতায়।
পরিস্থিতি এমন জায়গায় গেছে যে এখন ওয়াকফ বোর্ড তাজমহল কুতুবমিনার লালকেল্লা ইত্যাদি ঐতিহাসিক স্থাপত্য ও নিদর্শনকেও নিজেদের বলে দাবি করছে এবং আরকিওলজিক্যাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার (ASI) হাত থেকে তাদের হাতে সমর্পন করার দাবি জানিয়েছে। আর একটা উদাহারনেই সামাজিক ব্যাকস্ট্যাবিংটা পরিস্কার হবে হয়তো – বম্বের এবং ভারতের সবচাইতে বিলাসবহুল বাড়ি ‘আ্যনটিলা’ যা মুকেশ আম্বানির বলে আমরা সবাই জানি – সে বাড়িটিও ওয়াকফ বোর্ড তাদের বলে দাবি করে নোটিশ পাঠিয়েছে। মুকেশ আম্বানি বলেই সেটির দখল এখনো নিতে পারে নি, কিন্তু ওয়াকফ বোর্ড যদি আদাজল খেয়ে লাগে তাহলে মুকেশ বাবাজীর অন্যত্র বাসাবাড়ি খুঁজতে হবে। গত সপ্তাহেই তামিলনাড়ুর তিন তিনটে গ্রাম যা হিন্দু অধ্যুষিত, তার উপর সম্পুর্ণ দাবি জানিয়েছে সেখানকার রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড। এক দুটো বাড়ি নয় – পুরো গ্রাম তার জমিজমা বাড়িঘর পুকুর দিঘী সহ সবই নাকি ওয়াকফের। জাস্ট তাদের ‘বিশ্বাস’ যে এটি ওয়াকফের সম্পত্তি, তার বলে বলিয়ান হয়েই।
এই ভয়ংকর এবং আ্যনাকোন্ডার মতন অমিত শক্তিধর শত্রুর হাত থেকে কি পরিত্রাণের কোন উপায় নেই? আমরা কি কংগ্রেসী সরকারের করা আইনের গাড্ডায় ডুবে যাব? বিনা প্রতিবাদে?
আইনি লড়াই মাত্র শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে শুনানি শুরু হবে হয়তো নভেম্বর মাসেই। তাদের তরফ থেকে নিম্ন লিখিত যুক্তি থাকতে পারে:-
বাকিটা সময় বলবে। আশার কথা এই যে, আইনি প্রক্রিয়া দেরীতে হলেও শুরু হয়েছে। দেখা যাক , কি হয়।