Hindu Voice Desk: আজ শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সনাতন জাগরণ মঞ্চের রংপুর বিভাগীয় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সনাতন জাগরণ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ও কেন্দ্রীয় নেতারা ভেন্যু নির্ধারণের বিষয়ে রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আগমন করেন এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে অবস্থান করেন।
পরবর্তীতে রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল সনাতন জাগরণ মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করে রংপুর জেলার সমন্বয়কদের সঙ্গে তার অফিস কক্ষে বৈঠক করেন। এ সময় সনাতন জাগরণ মঞ্চ রংপুরের সমন্বয়করা জেলা প্রশাসক কর্তৃক নির্ধারিত ভেন্যু: মাহিগঞ্জ কলেজের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে এর পরিবর্তে রংপুর জিলা স্কুল মাঠ দাবি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক নির্ধারিত ভেন্যুতে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন।
দুপুর ১টার দিকে সনাতন জাগরণ মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতাসহ জেলা সমন্বয়করা রংপুর মহানগরীর মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠ পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে নেতারা পৌনে ২টার দিকে রংপুর মহানগরীর জেলা পুলিশের তিলোত্তমা গেস্ট হাউসে গমন করেন।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ৩৪ জন গতকাল রাতে ঐ গেস্ট হাউসের ১৪ টি কক্ষে অবস্থান করেন।
সনাতনী জাগরণ মঞ্চের প্রতিনিধিদের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মন্দির পরিদর্শন: সন্ধ্যা পর্যন্ত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন বিদ্যার্থী সাংসদ এর সভাপতি সয়ন সাহা এর সভাপতিত্বে বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারী প্রভুপাদসহ মোট ৫ জন নেতা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় মন্দির পরিদর্শন করেন। পরে মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় আলোচনা সভায় যোগদান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও সনাতনী বিদ্যার্থী সংসদ এর প্রতিষ্ঠাতা বরণ কুশল চক্রবর্তী, চট্টগ্রামের গিরি আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী ওমেশানন্দ গিরি মহারাজ, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের স্বামী বিপ্রানন্দ জী ও শ্রী শ্রী গোপীনাথ ব্রহ্মচারী প্রমুখ।
সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারী প্রভুপাদ তার বক্তব্যের শুরুতে অস্থায়ী মন্দির স্থাপনের জন্য এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ জানান। পুলিশের লোকজন তিলোত্তমা গেস্ট হাউসে তাদের থাকতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, সনাতনীরা কোনো ধর্মের বিষোদগার করে না। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা থেকে হেন কোনো নিপীড়ন নয় যা আমাদের ওপর করা হয়েছে। বঙ্গের নাম অনুসারী আমাদের আজকের বঙ্গভূমি। এই ভূমির আমরা ভূমিপূত্র, আমরা আর্যপূত্র।
এ সময় তিনি সনাতনীদের ৩-৪ টি সন্তান নেয়ার কথা বলেন। তিনি উপস্থিত সবাইকে অধিকারের জন্য লড়ে যাওয়ার আহবান জানান। তিনি বর্তমান সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, যে যায় লংকায় সে হয় রাবণ। পরিশেষে তিনি মহাসমাবেশে যাওয়ার জন্য সবাইকে আহবান জানান।
মহাসমাবেশের স্থান নির্ধারণ:
রংপুর মহানগরীর মাহিগঞ্জ থানাধীন মানিকগঞ্জ কলেজে ভেন্যু নির্ধারিত হয়েছে। ঐ ভেন্যুতে আগামীকাল দুপুর ২টায় মহাসমাবেশ শুরু হবে। এ উপলক্ষে রাত ৮টার দিকে মাঠে ৬০টি মাইক আনা হয়েছে এবং মঞ্চের কাজ আগামীকাল সকাল থেকে শুরু করা হবে। মাহিগঞ্জ মাঠে প্রায় ১২-১৩ হাজার লোকজনের সংকুলান করা সম্ভব। তবে মাহিগঞ্জ কলেজের প্রধান গেটের পাশে একটি মসজিদ রয়েছে। স্থানীয় প্রায় ৩০০-৪০০ জন মুসল্লি ঐ মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করে থাকেন। জুম্মার নামাজের সময় সনাতন জাগরণ মঞ্চের কর্মসূচিতে যোগদানের উদ্দেশ্যে অনুসারীরা আগমন শুরু করবে- এ নিয়ে স্থানীয় মুসল্লিদের মধ্যে সংশয় রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সনাতন জাগরণ মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতারা রংপুর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ না পাওয়ায় তাদের মধ্যে ক্ষুব্ধভাব পরিলক্ষিত হয়।
সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতারা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে রংপুর জিলা স্কুল মাঠ ভেন্যু হিসেবে নেয়ার চেষ্টা করেছে, তবে শেষ পর্যন্ত প্রশাসন তাদের অবস্থানে অটুট থাকায় প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত মাঠেই সমাবেশ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এরইমধ্যে জেলা প্রশাসন কর্তৃক ধর্মীয় উস্কানিমূলক বা রাষ্ট্র বিরোধী বা হিন্দু নির্যাতনের মিথ্যা তথ্য না ছড়ানোসহ ১৫টি শর্তে তাদেরকে মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে জনসভা করার অনুমতি প্রদান করেছে।
রংপুর বিভাগের আটটি জেলা থেকে ইসকন অনুসারীরা কর্মসূচিতে যোগদান করবেন। তবে তাদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যেন অংশগ্রহণ করতে না পারে সেজন্য জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠ পর্যায়ে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।