আসামে ঘোষিত বিদেশিদের জমির অধিকার এবং অন্যান্য অধিকার থাকবে কি থাকবে না, এক রায় দিতে গিয়ে তা স্পষ্ট করলো গুয়াহাটি হাইকোর্ট(Guwahati HC)। কুদ্দুস আলী এবং ভারত সরকারের মধ্যে একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে গুয়াহাটি হাইকোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে যে বিদেশিরা কোন কোন অধিকার পেতে পারে আর কোন কোন অধিকার পেতে পারে না।
এই বিষয়ে রায় দিতে গিয়ে আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে যে একজন মানুষের বাঁচার জন্য, জীবন যাপনের জন্য ন্যূনতম যা প্রয়োজন অর্থাৎ আশ্রয়, শিক্ষা, খাদ্য, বাসস্থান, কাজ করার অধিকার ইত্যাদি সুবিধা যা আগে ঘোষিত বিদেশিরা ভোগ করতে পারতেন, এখন থেকে তা আর পারবেন না। এই সব ঘোষিত বিদেশিরা, যাদের আধার কার্ড, প্যান কার্ড, পাসপোর্ট সমেত যেসমস্ত সরকারি নথিপত্র রয়েছে, সেগুলো তাদের ফেরত দিতে হবে। নথিপত্রগুলি ব্যবহার করার অধিকার তাদের আর থাকবে না।
এমনকি সম্পত্তির অধিকারের ক্ষেত্রে আদালত বলেছে, ঘোষিত বিদেশির জমি-জমা সরকার অধিগ্রহণ করতে পারে। এলিনেশন আইন এবং আসাম রেভিনিউ আইনের কারণে সরকারের সেই অধিকার রয়েছে। একজন ঘোষিত বিদেশি তাঁর সমস্ত সম্পত্তির অধিকার হারাবেন। শুধু ঘোষিত বিদেশি, তাদের সন্তানরাও কোনওরকম জমির অধিকার এবং সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন না।
এছাড়াও, শিক্ষার ক্ষেত্রে গুয়াহাটি হাইকোর্ট জানিয়েছে যে বিদেশি ঘোষিতদের সন্তানদের শিক্ষা গ্রহণের অধিকার থাকবে। কিন্তু সরকারি স্কুলে বিনামূল্যে তাঁরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে না। বেসরকারি স্কুলে বেতন দিয়ে তাদের পড়াশুনা করতে হবে।
কাজের অধিকার সম্পর্কে হাইকোর্ট তার রায়ে জানিয়েছে যে অবৈধ ঘোষিত বিদেশিদের কাজের অধিকার থাকবে। তবে উপর্জনের উপরে কর দিতে হবে। যদি কোনও ঘোষিত বিদেশি সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত থাকেন, তবে ওই ব্যক্তিকে কাজ থেকে ছাঁটাই করা হবে।
হাইকোর্টের এমন রায়ে চিন্তিত বহু মানুষ। এই রায়ের ফলে বিপদে পড়তে পারেন বহু মানুষ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মামলার রায় এমন সময়ে দেওয়া হয়েছে, ১৯৭১ নাকি ১৯৫১ সাল ভিত্তিবর্ষ হবে, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। আর যদি ১৯৫১ সালকে ভিত্তিবর্ষ করা হয়, তবে লক্ষ লক্ষ মানুষ বিদেশি হিসেবে ঘোষিত হবেন।