স্কুলের ছুটিতে বড়সড় কাটছাঁট করলো বিহার সরকার। সরকারের শিক্ষা দপ্তরের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, একাধিক পূজা ও উৎসবের জন্য বরাদ্দ ছুটির সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হলো। আর সেই তালিকায় রয়েছে দূর্গা পূজা, ছট পূজা এবং দীপাবলির মতো ধর্মীয় উৎসব। আর সরকারের সেই সিদ্ধান্ত সামনে আসার পর ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে বিহারের শিক্ষা মহলে। অনেকে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘হিন্দু বিরোধী’ আখ্যা দিয়েছেন।
গত ২৯শে আগস্ট, বিহার(Bihar)- এর শিক্ষা দপ্তর স্কুলের ছুটি সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা জারি করে। সেই নির্দেশিকায় বলা হয় যে সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত স্কুলের ছুটি ২৩ দিন থেকে কমিয়ে ১১ দিন করা হলো। সেই নির্দেশিকা জারি করেছেন অতিরিক্ত সচিব কে কে পাঠক।
সেই নির্দেশিকায় একাধিক হিন্দু পূজা ও উৎসবের ছুটি হয় বাতিল করা হয়েছে, নতুবা ছুটি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, রাখি বন্ধনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। দূর্গা পূজার ছয় দিনের ছুটি কমিয়ে তিন দিন করা হয়েছে। দীপাবলি ও ছট পূজা মিলিয়ে মোট নয় দিনের ছুটি কমিয়ে চার দিনের করা হয়েছে। ছট পূজার জন্য মাত্র দুই দিনের ছুটি দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে একটি দিন আবার রবিবার রয়েছে। দীপাবলির জন্য মাত্র একদিনের ছুটি ঘোষণা হয়েছে, যা রবিবার দিন পড়েছে।
আর এই ছুটি বাতিলের কারণ হিসেবে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে যে নির্বাচন, স্কুলের পরীক্ষা, উৎসব, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বন্যা, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কারণে স্কুলে নির্দিষ্ট সংখ্যক দিন পড়াশুনা হচ্ছে না। তাই ছুটি বাতিল করে বেশিদিন স্কুল চালু রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত। কিন্তু, শুধুমাত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা ও উৎসবের ছুটি কেন কমানো, তার কোন সদুত্তর মেলেনি সরকারের তরফ থেকে।
এদিকে, বিহার সরকারের এমন সিদ্ধান্ত সামনে আসার পর বিভিন্ন মহলে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে। বেগুসরাই থেকে বিজেপি সাংসদ শান্ডিল্য গিরিরাজ সিং বিহার সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স(X) -এ তিনি লেখেন, “ভবিষ্যতে হয়তো এমনও হতে পারে যে বিহারে শরিয়া লাগু করে দেওয়া হলো এবং হিন্দুদের উৎসবের উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেওয়া হলো।”
অন্যদিকে বিহার সরকারের এমন সিদ্ধান্তে খুশি নন বিহারের শিক্ষকরাও। কোনওরকম আলোচনা না করে ছুটি কমানোর সিদ্ধান্তে বেজায় ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা। সিদ্ধান্ত না বদলালে সরকারের ভিত নড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বিহারের শিক্ষকদের সংগঠনের তরফে।
Image Credits: Mint