সরকারি জমি দখল করে গড়ে তোলা মসজিদ ও মাদ্রাসা ভেঙে দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠলো উত্তরাখণ্ডের হালদোয়ানি(Haldwani)। উন্মত্ত ইসলামিক মৌলবাদীদের আক্রমণে পুড়লো বেশ কয়েকটি বাড়ি ও গাড়ি। বাদ যাননি মোতায়েন থাকা পুলিশকর্মীরা। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে কড়া সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি। দাঙ্গাবাজদের দেখা মাত্রই গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
খবর অনুযায়ী, গতকাল, ৮ই ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার, হালদোয়ানি শহরের প্রান্তে একটি বেআইনি মসজিদ ও মাদ্রাসা ভাঙার উদ্দেশ্যে জেসিবি নিয়ে পৌঁছে যায় প্রশাসনের একটি দল। অভিযোগ, বিশাল পরিমাণ সরকারি জমি দখল করে ওই মসজিদ ও মাদ্রাসা গড়ে তোলা হয়েছিল। কোনোরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয়েছিল বিশাল পুলিশবাহিনীও।
প্রথমে প্রশাসনের লোকজনকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায় মুসলিম জনতা। কিন্তু মসজিদ ও মাদ্রাসা ভাঙা হতেই উন্মত্ত হয়ে ওঠে তাঁরা। পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজনকে লক্ষ্য করে শুরু হয় ব্যাপক পাথরবৃষ্টি। একদল ইসলামিক মৌলবাদী ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাড়া করে পুলিশ বাহিনীকে। প্রাণ বাঁচাতে বেশ কিছু মহিলা পুলিশকর্মী একটি ঘরে লুকিয়ে পড়েন।
বেশ কিছু সময় ধরে চলতে থাকে ইসলামিক মৌলবাদীদের তান্ডব। পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। একটি জেসিবি মেশিনকে ভেঙে দেওয়া হয়। আশেপাশের বেশ কয়েকটি বাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেয় ইসলামিক মৌলবাদীরা, এমনটাই অভিযোগ। পরে আশেপাশের থানা থেকে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
এদিকে ইসলামিক মৌলবাদীদের হামলায় বহু পুলিশকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। অনেকের মাথা ফেটেছে। এক মহিলা পুলিশকর্মী বলেন, “প্রাণ বাঁচাতে আমরা ১৫-২০ জন একটি বাড়িতে লুকিয়ে পড়েছিলাম। সেখানেও হামলা চালানো হয়। বাড়িঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে দাঙ্গাকারীরা। এমনকি বাড়িতে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে। পরে অতিরিক্ত বাহিনী এসে আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময়েও আমাদের লক্ষ্য করে বাড়ির ছাদ থেকে পাথর ও কাঁচের টুকরো ছোঁড়া হয়।”
এখনও এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে। প্রশাসনের তরফে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
এদিকে হিংসা দমনে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পুষ্কর সিংহ ধামি। দাঙ্গাবাজদের দেখা মাত্রই গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি হিংসায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন পুলিশকে।
ঘটনার বিষয়ে শহরের মেয়র পঙ্কজ উপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন যে মসজিদ ও মাদ্রাসাটি সরকারি জমি দখল করে বেআইনিভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল।
বর্তমানে এলাকায় বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি নামানো হয়েছে RAF ও CRPFও।