কুমিল্লার পূজা মণ্ডপে কোরআন রাখা ইকবালকে মাত্র ১৬ মাসের কারাদণ্ড দিলো আদালত

কুমিল্লার পূজা মণ্ডপে কোরআন রাখার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ইকবাল হোসেনকে মাত্র ১৬ মাসের কারাদণ্ড দিলো আদালত। গতকাল ২রা মার্চ, বৃহস্পতিবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক জুলফিকার হায়েত এই সাজা শোনান।

সেই সঙ্গে বিচারপতি আরও নির্দেশ দেন যে বিচার চলাকালীন ইতিমধ্যেই ১৬ মাসের কারাদণ্ড ভোগ করেছেন ইকবাল হোসেন। যদি তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনও মামলা না থাকে, তবে তাকে যেনো অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক, নির্দেশ দেন বিচারপতি।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবরের ওই ঘটনায় দেশের বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে আরও ১০টি মামলা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে ইকবালকে পূজামণ্ডপে কোরআন রেখে গদা কাঁধে নিয়ে হেঁটে যেতে দেখা যায়। ৩০ বছর বয়সী ইকবাল কুমিল্লা শহরের মুরাদপুর-লস্করপুকুর এলাকার নূর আহম্মদ আলমের ছেলে। কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে ২১ অক্টোবর ইকবালকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সেই ঘটনার পরই সক্রিয় হয়ে ওঠে ইসলামিক মৌলবাদীরা। ইসলাম অবমাননার অভিযোগ তুলে কুমিল্লার নানুয়ার দীঘির পাড়ের দুর্গা পূজা মন্ডপে হামলা চালানো হয়। মূর্তি ভেঙে ফেলে দেওয়া হয়। অল্প সময়ে মধ্যে দেশ জুড়ে হিন্দু বিরোধী হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। হিন্দুদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

তবে সেই ঘটনায় ইকবাল হোসেনের মাত্র ১৬ মাসের সাজা হওয়ায় হতাশ সে দেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা। কারণ ইসলাম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া হিন্দুদের যেখানে ৫ বছর কিংবা ৭ বছর জেলের সাজা হচ্ছে, সেখানে ইকবালকে মাত্র ১৬ মাসের সাজা শোনানো হাস্যকর, বলছেন অনেকে। উদাহরণ হিসেবে অনেকে বলছেন গত মাসের রংপুরের ঘটনার কথা। ফেসবুকে ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে রংপুরের যুবক পরিতোষ সরকারকে ১১ বছরের জেলের সাজা শুনিয়েছে আদালত। সিলেটের এক হিন্দু ব্যক্তিকে ৭ বছরের সাজা শোনায় আদালত। কিন্তু ইকবালের কোরআন রাখার ফলে শত শত মন্দির ভাঙ্গা কিংবা ঘরবাড়ি জ্বলে যাওয়ার পরেও মাত্র ১৬ মাসের সাজা শোনানো আসলে বাংলাদেশের হিন্দুদের অবস্থাকে প্রমাণ করে।