ভাইকে কিডনি দান করায় মুসলিম মহিলাকে হোয়াটসঅ্যাপ কলে দেওয়া হলো ‘তিন তালাক’



Updated: 23 December, 2023 3:33 am IST

দেশে আইন করে নিষিদ্ধ করা হলেও থামছে না ‘তিন তালাক'(Triple Talaq)। এবার উত্তর প্রদেশের এক মুসলিম মহিলাকে হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমে তিন তালাক দেওয়ার ঘটনা ঘটলো। মহিলার অপরাধ, নিজের ভাইয়ের জীবন বাঁচাতে কিডনি দান করেছিলেন। ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা। কিন্তু তাঁর স্বামী সৌদি আরবে থাকায় এখনই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না পুলিশ।

জানা গিয়েছে, তালাকের শিকার হওয়া মহিলার নাম তারান্নুম(৪০)। উত্তর প্রদেশের গোণ্ডা জেলার বাসিন্দা। প্রায় কুড়ি বছর আগে তাঁর সঙ্গে বিয়ে হয় মহম্মদ আবদুল রশিদের সঙ্গে। কর্মসূত্রে রশিদ বর্তমানে সৌদি আরবে থাকেন।

ওই মহিলার অভিযোগ, বিগত কিছুদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তাঁর ভাই। ভাইকে বাঁচাতে কিডনি দেওয়া ছাড়া কোনও বিকল্প ছিল না। তাই ভাইয়ের জীবন বাঁচাতে নিজের কিডনি দান করার সিদ্ধান্ত নেন তারান্নুম। কিডনি দেওয়ার বিষয়ে স্বামীর মতামত জানতে চান তারান্নুম। স্বামী কিডনি দেওয়ার পক্ষে মত দেন। সেই সঙ্গে বলেন যে কিডনির বদলে ভাইয়ের কাছ থেকে যেন ৪০ লাখ টাকা নিয়ে আসে সে।

কিছুদিন আগেই সফলভাবে ভাইয়ের শরীরে কিডনির প্রতিস্থাপন হয়। তারপর থেকেই সৌদি আরব থেকে ফোন করে টাকা নিয়ে আসার জন্য তারান্নুমকে লাগাতার চাপ দিতে থাকেন রশিদ। টাকা নিয়ে আসতে না পারায় ফোন করে লাগাতার গালিগালাজ করতে থাকে রশিদ। কয়েকদিন আগে হোয়াটসঅ্যাপ(WhatsApp) কলে কথা বলার সময় তাকে ‘তিন তালাক’ দেয় রশিদ, অভিযোগ করেছেন তারান্নুম। তারপর তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় রশিদের পরিবার। বর্তমানে বাপের বাড়িতে রয়েছেন তারান্নুম।

ইতিমধ্যেই রশিদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তারান্নুম। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রশিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। কিন্তু রশিদ বর্তমানে সৌদি আরবে থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারছে না পুলিশ। রশিদ সৌদি আরব থেকে ফিরলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, দেশে আইন করে তিন তালাক নিষিদ্ধ করা হয় ২০১৯ সালে। কিন্তু নিষিদ্ধ হলেও কিছু মানুষ এখনও ফোন কিংবা মেসেজ কিং হোয়াটসঅ্যাপ এর মাধ্যমে তালাক দিয়ে চলেছেন। অনেক ক্ষেত্রে সাহসী মুসলিম মহিলারা পুলিশের দ্বারস্থ হলেও বেশিরভাগ ঘটনা আড়ালেই থেকে যায়।