কয়েকদিন আগে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানের জয়সলমিরে পাকিস্তান থেকে আগত হিন্দু শরণার্থীদের বাড়িঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপরই দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছিল। চরম সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল রাজস্থানের কংগ্রেস সরকারকে। প্রতিবাদে নেমেছিলেন রাজস্থানের বিজেপি নেতৃত্ব। আর তার কারণেই হিন্দু শরণার্থীদের জন্য এক গুচ্ছ পদক্ষেপ নিলো জয়সলমিরের জেলা প্রশাসন।
খবর অনুযায়ী, পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু শরণার্থীদের বাড়ি নির্মাণের জন্য ৪০ বিঘা জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে খোলা আকাশের নিচে ত্রিপল খাটিয়ে থাকা হিন্দু পরিবারগুলির জন্য সরকার পরিচালিত ‘ইন্দিরা রসোই’-তে দুবেলা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গতকাল জয়সমিরের জেলাশাসক টিনা দাবি এক নির্দেশিকা জারি করে একথা জানান।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে যে পাকিস্তান থেকে আসা যেসব হিন্দুদের নাগরিকত্ব রয়েছে, তাদেরকে জমি পাকাপাকিভাবে দেওয়া হবে। আর যেসব হিন্দু শরণার্থী পরিবার এখনও ভারতের নাগরিকত্ব পাননি, তাদেরকে দীর্ঘময়াদি লিজে জমি দেওয়া হবে। পাশাপাশি, পাকিস্তান থেকে আগত হিন্দু শরণার্থীদের জন্য পানীয় জল, বিদ্যুৎ এবং রাস্তাঘাটের ব্যবস্থা করবে জেলা প্রশাসন।
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে যে যেসব হিন্দুরা এখনও ভারতের নাগরিকত্ব পাননি, তাঁরা যাতে ভারতের নাগরিকত্ব দ্রুত পেতে পারেন, তার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। যতদিন না তাঁরা নাগরিকত্ব পাচ্ছেন, ততদিন তাদের বিশেষ দেখভাল করা হবে। আর পুরো প্রক্রিয়া দেখভাল করার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সিটি ডেভপমেন্ট ট্রাস্টের এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে মোট ২৫০টি হিন্দু শরণার্থী পরিবারকে স্থায়ী বসবাসের ব্যবস্থা করে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মূল সাগর গ্রামে ৪০ বিঘা জমিতে ৫০টি পরিবারকে বাড়ি করার জায়গা দেওয়া হবে। পরবর্তীতে বাকিদেরও জমি দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে হিন্দু শরণার্থীরা মূল সাগর গ্রামে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন। গত ১৭ই মে পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু শরণার্থীদের বাড়িঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় জেলা প্রশাসন। উচ্ছেদে বাধা দেওয়ায় হিন্দু শরণার্থীদের উপরে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। অনেকে আহত হয়। তারপর থেকেই চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ওই হিন্দু শরণার্থীরা। একাধিক হিন্দু সংগঠন এবং বিজেপির বিক্ষোভের পরে শেষমেষ টনক নড়লো রাজস্থানের কংগ্রেস সরকারের।