গরুর মাংস খাওয়া এবং তার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার পরই উত্তপ্ত নেপালের সুনসারী জেলার ধারণ শহর। হিন্দুদের বিক্ষোভে উত্তেজনা বিরাজ করছে শহরটিতে। গরুর মাংস খাওয়া মুসলিম যুবকদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার না করা হলে বড়সড় আন্দোলনের নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হিন্দু সংগঠনের নেতারা।
ঘটনার সূত্রপাত হয় আগস্টের শেষ সপ্তাহে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও ঘিরে। সেই ভাইরাল ভিডিওতে কয়েকজন মুসলিম যুবক মাংস খেতে খেতে দাবি করে যে নেপালে গরুর মাংস নিষিদ্ধ করা তাঁরা মানে না। গরুর মাংস খাওয়া আমাদের অধিকার। তাঁরা ভিডিওতে এও জানায় যে তাঁরা একটি গরুকে জবাই করে পিকনিক করছে। তাঁরা জানায় যে তাঁরা সুনসারিতে রয়েছে।
সেই ভিডিও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। দায়ের হয় অভিযোগও। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে যে যারা গরুর মাংস খেয়েছে, তাঁরা নেপালের নাগরিক নন। তাঁরা পরিযায়ী শ্রমিক। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই শ্রমিকরা বিহারের বাসিন্দা। কারণ তাঁরা সকলে কুলহাইয়া ভাষায় কথা বলছিলো। উল্লেখ্য, কুলহাইয়া ভাষা হলো উর্দু, মৈথিলী এবং কচ্ছ ভাষার মিশ্রনে সৃষ্ট একটি ভাষা। এই ভাষায় বিহারের উত্তর অংশের মুসলিমরা কথা বলেন।
সুনসারী জেলার পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা প্রেম কুমার ছেত্রী জানান, “তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি যে যারা এই ভিডিওটি বানিয়েছে, তাঁরা অল্পদিন হলো বিহার থেকে নেপালে এসেছে। ঘটনা বাড়াল হওয়ার পরই তাঁরা আত্মগোপনে চলে গিয়েছে। তাঁরা এখনও নেপালেই রয়েছে। তাদের খুঁজে বের করতে সবরকম চেষ্টা চলছে।”
উল্লেখ্য, নেপালের জনসংখ্যার ৮১ % হলো হিন্দু। দেশটিতে গো-হত্যা এবং গরুর মাংস নিষিদ্ধ রয়েছে। কিন্তু দেশটিতে কাজ করতে যাওয়া মুসলিম শ্রমিকরা গরুর মাংস খাওয়ার দাবিতে নানারকম অশান্তি সৃষ্টি করার চেস্ট চালিয়ে যাচ্ছে। আর তাদেরকে কড়া ভাষায় দমন করার কথা জানিয়েছেন নেপালের পুলিশের একটি সূত্র।
প্রসঙ্গত, বিহার ও উত্তর প্রদেশ থেকে মুসলিম নেপালে অনুপ্রবেশ করেছে। এছাড়াও, অনেক মুসলিম ব্যক্তি কাজ করতে গিয়ে আর ফায়ার যাননি, তাঁরা নেপালেই থেকে গিয়েছেন। আর তাদের কারণেই বিহার ও উত্তর প্রদেশের সীমান্তবর্তী নেপালের জেলাগুলির জনবিন্যাস খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। জনবিন্যাসের পাশাপাশি নেপালের সংস্কৃতি এবং ভাষাও আজ বিপদের মুখে। অন্যদিকে মুসলিম অনুপ্রবেশের ফলে আইন ও শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও ব্যাপকভাবে বিঘ্ন হচ্ছে। সদ্য গরুর মাংস খাওয়ার ভিডিও তারই প্রমাণ।
Image Credits: Swarajya