নিজেদের বিভাগীয় তদন্তে স্কলারশিপ নিয়ে বড়সড় দুর্নীতির খোঁজ পেলো সংখ্যালঘু মন্ত্রক। নকল নথিপত্র জমা দিয়ে তুলে দিয়ে নেওয়া হয়েছে সংখ্যালঘু স্কলারশিপের বিশাল পরিমাণ টাকা। এমনকি বাস্তবে অস্তিত্ব নেই, এমন প্রতিষ্ঠানও নকল ছাত্র দেখিয়ে স্কলারশিপের টাকা তুলে নিয়েছে। এমন তথ্য আসার পরই পুরো চক্রের সন্ধান পেতে CBI তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সংখ্যালঘু মন্ত্রক।
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে যে দেশের দেশের ৮৩০টি সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান দুর্নীতিতে জড়িত এবং গত ৫ বছরে নকল নথিপত্র জমা দিয়ে সংখ্যালঘু মন্ত্রকের দেওয়া স্কলারশিপের ১৪৪.৮৩ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। তদন্তে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। মোট স্কলারশিপ পাওয়া ছাত্রছাত্রীর ৫৩ শতাংশই নকল।
তদন্তে এমন দুর্নীতির তথ্য পাওয়ার পরই ব্যাপক ক্ষুব্ধ সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তিনি ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য CBI তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
ইন্ডিয়া টুডে-তে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, দুর্নীতির বিষয়টি নজরে আসার পরই সংখ্যালঘু মন্ত্রকের তরফে ১০ই জুলাই অভিযোগ দায়ের করা হয়। নিজেদের অন্তর্তদন্তে, সংখ্যালঘু মন্ত্রক দেশের ৩৪টি রাজ্যের ১০০টি জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে খোঁজখবর নেয়। তাদের মধ্যে ৮৩০টি প্রতিষ্ঠানের খোঁজ পাওয়া যায়, যেগুলি সরাসরি স্কলারশিপ দুর্নীতিতে জড়িত। এখনও পর্যন্ত ২১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের তথ্য মন্ত্রকের হাতে এসেছে এবং বাকিগুলিতে এখনও তদন্ত চলছে।
এছাড়াও, রিপোর্টে আরও জানা গিয়েছে যে, দুর্নীতিতে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলি যাতে তথ্য প্রমান নষ্ট করতে না পারে, সেজন্য ওই ৮৩০টি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ’ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সংখ্যালঘু মন্ত্রকের দেওয়া স্কলারশিপ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে দেশের ১,৮০,০০০ প্রতিষ্ঠান। ২০০৮-২০০৮ অর্থবর্ষে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের আওতায় সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের প্রথম শ্রেণী থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে।
প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে যে নকল আধার কার্ড এবং অন্যান্য নথিপত্র দিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। তারপর সেই সব অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে স্কলারশিপের টাকা নেওয়া হয়েছে। তদন্তে ব্যাংকের ভূমিকার পাশাপাশি জেলার নোডাল অফিসারদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানা গিয়েছে। ওই অফিসাররা মূলত কাগজপত্র এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ড খতিয়ে দেখে স্কলারশিপের অনুমোদন দেন।
যে সমস্ত রাজ্যগুলিতে নকল নথিপত্র দিয়ে স্কলারশিপের টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে, সেগুলির মধ্যে সবার উপরে রয়েছে ছত্তিশগড়(১০০%), তারপরে রয়েছে রাজস্থান(৭৭.৩৪%), আসাম(৬৮%), কর্ণাটক(৬৪%), উত্তর প্রদেশ(৪৪%) এবং পশ্চিমবঙ্গ(৩৯%)।