মহারাষ্ট্রের গ্রামে গড়ে উঠেছিল ভারতে ইসলামিক স্টেটের ‘রাজধানী’



Updated: 20 December, 2023 8:06 am IST

গোয়েন্দা সংস্থা NIA-এর বারবার অভিযান ও ধরপাকড় সত্বেও ভারতের মাটিতে ইসলামিক স্টেট জিহাদি গোষ্ঠীর বাড়বাড়ন্ত কমছে না। অন্যান্য বার ছোট ছোট মডিউলের সন্ধান পেলেও এবারের অভিযানে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটের সন্ধান পেলেন NIA-এর গোয়েন্দারা। ছোট খাটো জিহাদি মডিউল নয়, দেশের মধ্যে ইসলামিক স্টেটের ‘রাজধানী’ গড়ে তুলেছিল জিহাদিরা। আর সেই গ্রামের নাম হলো পড়গাওঁ

পড়গাওঁ গ্রামে গড়ে উঠেছিল আইসিস(ISIS) মডিউল

পড়গাওঁ গ্রামটি মহারাষ্ট্রের কোঙ্কন অঞ্চলে অবস্থিত একটি গ্রাম। মুম্বই থেকে গ্রামটির দূরত্ব মাত্র ৫০ কিমি। গ্রামটি মুসলিম অধ্যুষিত এবং গ্রামের জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ মুসলিম। সেই গ্রামের বেশ কিছু মুসলিম বাসিন্দা গড়ে তুলেছিলেন ইসলামিক স্টেটের বড়সড় ইউনিট। সেই ইউনিটের সঙ্গে যোগ ছিল মহারাষ্ট্রের অন্যান্য এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জিহাদিদের সঙ্গে। আর এই ইউনিটের মূল মাথা ছিলেন শাকিব নাচান।

উল্লেখ্য, সপ্তাহখানেক আগে ওই গ্রামে অভিযান চালায় NIA ও ATS-এর আধিকারিকরা। সেই অভিযানে গ্রাম থেকে ৪০টি ড্রোন, বিপুল বিস্ফোরক, জিহাদি বইপত্র, ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেটস এবং ৩৮ লাখ টাকা। গ্রেপ্তার করা হয় ইসলামিক স্টেটের মডিউলের একাধিক জিহাদি। এছাড়াও গ্রেপ্তার করা হয় মূল মাথা শাকিব নাচানকেও।

গ্রামের নাম বদলে রাখা হয়েছিল ‘আল শামস’

খবর অনুযায়ী, ইসলামিক স্টেটের জিহাদিরা ওই গ্রামটির নাম পরিবর্তন করে রেখেছিলো ‘আল-শামস’। গ্রামটিকে জিহাদিদের ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জিহাদি যুবকদের গ্রামে আনা হতো এবং তাদের বিস্ফোরক ও অন্যান্য অস্ত্র ব্যবহারের ট্রেনিং দেওয়া হতো। এই গ্রামকে স্বাধীন গ্রাম হিসেবে নিজেদের মধ্যে উল্লেখ করতেন ইসলামিক স্টেটের জিহাদিরা। এই গ্রামে বসেই জিহাদি হামলা ও নাশকতার পরিকল্পনা করা হচ্ছিলো, দাবি গোয়েন্দাদের।

গোয়েন্দাদের দাবি, গ্রামে বসেই মুম্বই শহরে হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিলো। মুম্বই শহরের ৪০টি স্থানে ড্রোন হামলা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছিলো।

মূল মাথা শাকিব নাচান

এই জিহাদি মডিউলের মূল মাথা হলেন শাকিব নাচান। শাকিব নাচান দীর্ঘ বহু বছর ধরেই জিহাদি কার্যকলাপে জড়িত। ১৯৯১ সালে মুম্বই শহরে বোমা বিস্ফোরণে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রথম গ্রেপ্তার হয় শাকিব। আদালতের নির্দেশে ১০ বছরের জেল হয় তাঁর। দশ বছরের সাজা শেষে ২০০১ সালে মুক্তি পায় শাকিব।

কিন্তু দশ বছর জেল খেটেও সংশোধন হয়নি তাঁর। জেল থেকে বেরিয়েই জিহাদি কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে শাকিব। ২০০২ সালে মুম্বই শহরের একাধিক স্থানে ট্রেনে বিস্ফোরণ হয়। সেই ঘটনার মূল মাথা হিসেবে গ্রেপ্তার হয় শাকিব। দীর্ঘদিন জেল খেটে ২০১৭ সালে মুক্তি পায় সে। কিন্তু মুক্তি পেয়েই ফের জিহাদি কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে শাকিব।

এবারে জড়িয়ে পরে ইরাক ও সিরিয়ায় সক্রিয় ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে। মহারাষ্ট্রে গড়ে তোলেন জিহাদি মডিউল। একাধিক মুসলিম যুবকের মগজধোলাই করে পাঠিয়েছিল সিরিয়ায়। সেই সঙ্গে মুম্বই শহরের বুকে বড়সড় হামলার জন্য নিচ্ছিলেন প্রস্তুতি। কিন্তু তার আগেই তাকে গ্রেপ্তার করেছে NIA-এর গোয়েন্দারা