কলকাতায় জোড়া খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে এক বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ। ধৃতের নাম রবিউল গাজী। সে বাংলাদেশের খুলনা জেলার অন্তর্গত কাটিপাড়া এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।
খবর অনুযায়ী, রবিউল গাজী আদতে বাংলাদেশে কুখ্যাত অপরাধী হিসেবে পরিচিত। সে বাংলাদেশ পুলিশের তাড়া খেয়ে বেআইনি উপায়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করে। তারপর সোজা চলে আসে কলকাতা শহরে। শহরে এসে আশ্রয় নেয় শিয়ালদহ স্টেশনের কাছের একটি বস্তিতে। তারপরই সে কলকাতা শহরে তাঁর অপরাধের কর্মকাণ্ড শুরু করে।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২২ সালের ১২ই ডিসেম্বর নিজের বাড়ির গ্যারেজে নৃশংসভাবে খুন করা হয় দমদমের বাসিন্দা মুনমুন পাল(৬২)-কে। পুলিশ সেই ঘটনার তদন্তে নেমে জানতে পারে যে খুনের কয়েক ঘণ্টা আগেই একজন ব্যক্তিকে বাগান পরিষ্কার কাজে লাগিয়েছিলেন মুনমুন পাল। পুলিশ বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে দেখে যে এক ব্যক্তি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তদন্তে নেমে মুনমুন পালের দামী সোনার গহনার কোনও হদিস পায়নি পুলিশ।
দমদমের ঘটনার তদন্ত চলাকালীন গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ তারিখে বিরাটির শিবাচল এলাকায় একই কায়দায় খুন করা হয় শর্বানী দাস(৭৩) নামে এক বৃদ্ধাকে। তিনিও বাগানের কাজের জন্য এক ব্যক্তিকে নিয়োগ করেছিলেন। আর তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বাড়ির বারান্দায় রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন প্রতিবেশীরা। সেই বাড়ি থেকেও মূল্যবান জিনিস চুরি যায়।
এই ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। তৈরি করা হয় বিশেষ তদন্তকারী দল। সেই তদন্তকারী দলের অফিসাররা দমদম, নিমতা এবং বিরাটি এলাকার বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেন। যেসব বাসিন্দারা বাগান পরিষ্কার করার কাজ করিয়েছেন, তাদের বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেন। সেই সব ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ অভিযুক্তের হদিস পায়। তারপরই অভিযান চালিয়ে নিমতা থেকে রবিউল গাজীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ধৃত জেরায় জানায় যে সে বছরখানেক আগে সে ভারতে অনুপ্রবেশ করে। তারপর মালীর ছদ্মবেশে বাড়িতে ঢুকতো। বাগানের কাজ করার নাম করে বাড়িতে ঢুকে সুযোগ বুঝে খুন করে ডাকাতি করতো সে। মূলত যে বাড়িতে একাকী বৃদ্ধ কিংবা বৃদ্ধা থাকতো, সেই বাড়িকেই টার্গেট করতো সে।