স্কুলে টিপ পরে যাওয়ায় সকলের সামনে অপমান করেন স্কুলের শিক্ষক। শুধু তাই নয়, মারা হয় চড়-থাপ্পড় এবং সবার সামনে বিভিন্ন কটু কথা বলে অপমানও করা হয়। তারপর স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয় ওই হিন্দু নাবালিকা ছাত্রীকে। আর এই কারণে চরম অপমানিত ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করলেন। ঘটনা ঝাড়খণ্ডের। সে গত ১০ই জুলাই, সোমবার গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে।
জানা গিয়েছে, আত্মহত্যা করা ওই হিন্দু নাবালিকার নাম ঊষা কুমারী। সে ধানবাদ শহরের সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। গত ১০ই জুলাই সোমবার নিয়ম মাফিক স্কুলে যায় সে। স্কুলের প্রেয়ার হলে যায়। তাঁর কপালে টিপ পরা ছিল। আর তা দেখতে পেয়ে ক্ষেপে জন স্কুলের এক শিক্ষক। তাকে সবার সামনে অপমান করেন ওই শিক্ষক। বেশ কয়েকবার চড় মারা হয় ওই নাবালিকা ছাত্রীকে।
ওখানেই শেষ নয়। তারপর ওই শিক্ষক তাকে প্রিন্সিপালের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে আর এক প্রস্থ অপমান করা হয়। তারপর তাঁর হাতে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার নোটিশ ধরিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলা হয়। তারপর ওই ছাত্রী বাড়ি চলে আসে।
বাড়ি এসে সকাল এগোরোটা নাগাদ ওই ছাত্রী তাঁর বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে। ওই ছাত্রীর স্কুল ইউনিফর্মের পকেটে একটি ‘সুইসাইড নোট’ পাওয়া যায়। সেখানে তাঁর মৃত্যুর জন্য সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের এক শিক্ষক এবং প্রিন্সিপালকে দায়ী করে গিয়েছেন ওই ছাত্রী।
পরে ওই নাবালিকার পরিবারের তরফে তেতুলমারি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ স্কুলের ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ধানবাদ শহরে। বিষয়টির প্রতিবাদে সরব হয়েছে একাধিক হিন্দু সংগঠন। যেভাবে সেন্ট জেভিয়ার্স – এর মত বিখ্যাত স্কুল টিপ পরে আসায় এক হিন্দু ছাত্রীকে নির্যাতন করেছে, তাতে অবাক অনেকে। টিপ পরে এলে কি স্কুলের মর্যাদা নষ্ট হয় নাকি, এমন প্রশ্ন করেছেন অনেকে। অনেকে আবার টিপ পরে আদায় নির্যাতনকে হিন্দুদের প্রতি ঘৃণার প্রকাশ হিসেবে দেখছেন।
টিপ পরাকে কেন্দ্র করে নাবালিকা ছাত্রীর উপরে নির্যাতন ঘিরে নড়েচড়ে বসেছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন NCPCR ( National Commission for Protection of Child Rights)। কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে ধানবাদে তদন্তে যাবে কমিশনের প্রতিনিধিরা।