রাজা গণেশ



Updated: 23 February, 2023 12:39 pm IST

© শ্রী সূর্য শেখর হালদার

বিদ্যালয় পাঠ্য ইতিহাস বই ও বিভিন্ন বাংলা কাব্য – নাটকে আমাদের শেখানো হয় 1757 খ্রিস্টাব্দে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। এটা ঠিক যে সেদিন বাংলার স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা পলাশীর প্রান্তরে রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ বাহিনীর কাছে পরাভূত এবং পরে বন্দী হয়ে মীরজাফর পুত্র মীরণের হাতে নিহত হন। সিরাজকে বাংলার স্বাধীন নবাব বলা হয়। কিন্তু তিনি কি আদৌ বাঙালি ছিলেন? বাংলা কি তাঁর মাতৃভাষা ছিল ? এইসব প্রশ্নের উত্তর আমরা পাঠ্য ইতিহাস বা সাহিত্যে পাই না। বিশেষ কারণবশত সিরাজউদ্দৌলার বংশ পরিচয় সাধারণত জানানো হয় না। ছোট ছোট বাঙালি ছাত্র-ছাত্রী জানতে পারে না সিরাজের পূর্বপুরুষরা বাংলা তথা ভারতে ছিলেন বহিরাগত। সিরাজের পিতা মির্জা মোহাম্মদ হাশিম ছিলেন বাংলার পূর্ববর্তী নবাব আলীবর্দী খানের বড় ভাই হাজী আহমেদের কনিষ্ঠ সন্তান। এই হাজী আহমেদের পিতা মির্জা মোহাম্মদ মাদানী ছিলেন আরবি বা তুর্কী বংশজাত এবং আওরঙ্গজেবের এক দুর সম্পর্কিত ভাইয়ের সন্তান। এর অর্থ হলো ব্রিটিশের করায়ত্ত হবার আগে বাংলা ছিল তুর্কি – আরবি বংশোদ্ভূত বহিরাগত সুলতানদের দ্বারা শাসিত । এই বহিরাগত শাসন বাংলায় শুরু হয় 1206 খ্রিস্টাব্দ থেকে যেদিন তুরস্ক দেশের ঘোর প্রদেশের শাসক মোহাম্মদ ঘুরীর সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন মহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি লখনৌতি বা নদীয়া দখল করে তাঁর শাসন আরম্ভ করেন । অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে 1206 খৃষ্টাব্দ থেকে 1757 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ শত বৎসর বাংলা পরাধীন ছিল। নবাব – সুলতানরা স্বাধীন হলেও বাংলার ভূমি পুত্র , কন্যারা স্বাধীন ছিলেন না। 1757 খ্রিস্টাব্দে শুধু শাসকের পরিবর্তন হয়। এক ধরণের বহিরাগত শাসকের শাসনের অবসান ঘটে এবং আরেক ধরণের বহিরাগত শাসকের শাসন কায়েম হয়।

সাড়ে পাঁচ শত বৎসর কালখণ্ডে বাংলা মূলত আরবী বা তুর্কি বংশজাত সুলতানদের দ্বারা শাসিত হলেও, বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে বাংলার ভূমি পুত্র-কন্যাদের শাসন কায়েম হয়েছিল। মুষ্টিমেয় যে কয়জন প্রকৃত বাঙালি শাসক এই সময়ে স্বাধীন রাজত্বের পত্তন করেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন রাজা গণেশ । তাঁর পুরো নাম হল মহারাজ গণেশ নারায়ন ভাদুড়ী। তিনি 1415 খ্রিস্টাব্দ থেকে আনুমানিক 1419 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সমগ্র বাংলা জুড়ে স্বাধীন হিন্দু সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলার ইলিয়াস শাহী সুলতানের বংশধরকে উৎখাত করে রাজা গণেশ তাঁর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন । খাজা নিজাম উদ্দিন আহমেদ দ্বারা রচিত তবকাত- ই- আকবরী ( 1592-93) মহম্মদ কাসিম শাহ রচিত তারিখ- ই – ফিরিস্তা (1612) মাসির – ই – রহিমী প্রভৃতি গ্রন্থে রাজা গণেশের বিবরণ পাওয়া যায়। এছাড়াও পরবর্তীকালের বিভিন্ন গ্রন্থ যেমন গোলাম হোসেন সালিম জায়েদপুরী দ্বারা রচিত রিয়াজ – উস – সালাতিন, ফ্রান্সিস বুকাননের বিবরণী, মুল্লা তাকিয়ার বয়াজ প্রভৃতি গ্রন্থে গণেশের উল্লেখ পাওয়া যায়। রাজা গণেশের সঙ্গে ইব্রাহিম শর্কির সংঘর্ষের উপর লিখিত গ্রন্থ সংগীত শিরোমণি, চীন সম্রাট কর্তৃক বাংলার রাজসভায় প্রেরিত জনৈক সদস্যের লেখা গ্রন্থ শিং – ছা – শংলান , আরবি ঐতিহাসিক ইবন – ই – হজরের
গ্রন্থ, দরবেশ নূর – কুতুব – আলম ও আশরফ সিমনানীর পত্রাবলী, দনুজমর্দনদেব ও মহেন্দ্র দেবের মুদ্রা রাজা গণেশের ইতিহাস রচনার অন্যতম উপাদান। এখানে উল্লেখযোগ্য অনেক ফার্সি গ্রন্থতে রাজা গণেশ কে কাन्স লেখা হয়েছে যার থেকে অনেকে অনুমাণ করেন যে রাজা গণেশের প্রকৃত নাম ছিল কংস। কিন্তু রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে ফার্সি ভাষায় গ্ কে লেখার প্রবণতা থেকেই এইরকম ভ্রম উৎপাদন হয়েছে।

মহারাজ গণেশের জন্ম হয় একটাকিয়ার কাশ্যপ গোত্রীয় ভাদুড়ী বংশে ।এই বংশের সুবুদ্ধি নারায়ন রায় ভাদুড়ী একডালা দুর্গের যুদ্ধে দিল্লির সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলককে পরাজিত করেন। রিয়াজ- উস – সালাতিন অনুযায়ী রাজা গণেশ বর্তমান বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুরের ভাতুরিয়ার জমিদার ছিলেন। আবার ফ্রান্সিস বুকানন বলেন যে তিনি উত্তরবঙ্গের দিনাজপুরের হাকিম ছিলেন। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে ভাতুরিয়া অঞ্চলে তাঁর জমিদারি ছিল। জমিদার রূপে তিনি অত্যন্ত শক্তিশালী ছিলেন এবং প্রথম জীবনে ইলিয়াস শাহী বংশের সুলতানদের অন্যতম আমীর ছিলেন। রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেন শিহাবউদ্দিন বায়াজিদ শাহ, আলাউদ্দিন ফিরোজ শাহের আমলে ব্যক্তিত্বসম্পন্ন জমিদার গণেশ নারায়ণই ছিলেন বাংলার প্রকৃত শাসক । 1414 – 15 খ্রিস্টাব্দে গণেশ নারায়ণ ফিরোজ শাহকে পরাজিত ও নিহত করে নিজস্ব বাহিনীর সাহায্যে বাংলায় বহিরাগত মুসলিম শাসনের উচ্ছেদ করেন এবং বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন।

ছবি: রাজা গণেশের মুদ্রা(Source: Wikipedia)

রমেশ চন্দ্র মজুমদারের বক্তব্য অনুসারে রাজা গণেশের রাজত্বকাল শান্তিপূর্ণ ছিল না। কারণ ছিল তৎকালীন মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরোধিতা। তৎকালীন বাংলার অভিজাত মুসলিমরা একজন হিন্দুর শাসন মেনে নিতে পারেননি। তাই তাঁরা দরবেশদের ( মুসলিম সন্ত ) নেতৃত্বে অশান্তি শুরু করেন। কিন্তু দক্ষ প্রশাসক রাজা গণেশ কঠোরভাবে বিদ্রোহ দমন করেন এবং কয়েকজন দরবেশকে বধ করেন। এতে দরবেশরা আরো ক্রুদ্ধ হলেন। এই দরবেশদের নেতা ছিলেন নূর কুতুব আলম। তিনি পরাক্রান্ত সুলতান ইব্রাহিম শর্কির নিকট প্ররোচনামূলক ভাষায় পত্র প্রেরণ করেন। ইব্রাহিম শর্কি ছিলেন জৌনপুরের সুলতান। তিনি পত্র পাঠ করে যখন জানলেন যে রাজা গণেশ ঘোরতর অত্যাচারী ও মুসলমানের শত্রু। তখন তিনি সসৈন্যে বাংলা আক্রমণ করে রাজা গণেশকে উচ্ছেদ করতে মনস্থ করেন।

জৌনপুর থেকে বাংলায় আসার পথে ত্রিহুত বা মিথিলা হয়ে আসতে হত। এই ত্রিহুত বা মিথিলা ছিল জৌনপুরের সামন্ত রাজ্য। কিন্তু সেই সময় ত্রিহুতের রাজা দেবসিংহকে উচ্ছেদ করে তাঁর স্বাধীনচেতা, ধার্মিক পুত্র শিব সিংহ রাজত্ব করছিলেন। শিব সিংহ রাজা গণেশের মিত্র ছিলেন এবং তিনিও দরবেশদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেন। সে কারণে ইব্রাহিম শর্কি প্রথমে ত্রিহুত আক্রমণ করেন। যুদ্ধে শিব সিংহের পরাজয় ঘটে এবং তিনি বন্দী হন। ইব্রাহিম শিব সিংহের বদলে দেবসিংহকে আনুগত্যের শর্তে ফের ত্রিহুতের রাজা পদে আসীন করেন।

এরপর ইব্রাহিম বাংলায় পদার্পণ করে রাজা গণেশর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন। ইব্রাহিমের বিশাল সৈন্যের কাছে গণেশ নারায়ণ ও পরাজিত হন। উপরন্তু তাঁর এক পুত্র যদু নারায়ণ পিতার পক্ষ ত্যাগ করে ইব্রাহিমের পক্ষ নেন এবং পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন । তাঁর নাম হয় জালাল উদ্দিন । ইব্রাহিম ত্রিহুতে পুত্রের বদলে পিতাকে সিংহাসনে আসীন করেছিলেন। সেইরকম বাংলায় তিনি পিতার বদলে পুত্রকে রাজত্বের ভার দিয়ে নিজ রাজ্যে ফিরে যান । এতে বাংলায় ফের মুসলিম আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয় । 14 15 – 16 খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি এই ঘটনা ঘটে । তবে রাজা গণেশ ছেড়ে দেওয়ার পাত্র ছিলেন না ।ইব্রাহিম চলে যাবার পরে সুযোগ বুঝে রাজা গণেশ ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করেন। পুত্র জালাল উদ্দিন সুলতান থাকলেও তিনি গণেশের ক্রীড়নকে পরিণত হন এবং বাংলাদেশে আবার গৈরিক ধ্বজ উড্ডীন হয় । এই ঘটনায় দরবেশ নূর আলম এতটাই মর্মাহত হন যে তিনি কিছুদিনের মধ্যে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কথিত আছে তিনি গণেশের পুত্র যদুকে ছোটবেলায় অপহরণ করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করেন।

এরপর সুযোগ বুঝে রাজা গণেশ দনুজমর্দনদেব নাম নিয়ে শাসন করতে থাকেন । দনুজমর্দনদেব আসলে রাজা গণেশ ছিলেন কিনা সেই নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক আছে । তবে রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে দনুজমর্দনদেব আর রাজা গণেশ একই ব্যক্তি । দনুজমর্দনদেব নামটি পাওয়া যায় সমকালীন সময়ের মুদ্রাতে । এই মুদ্রা গুলিতে একদিকে রাজার নাম – দনুজমর্দনদেব ও অন্যদিকে ট্যাঁকশালের নাম, উৎকীর্ণ হওয়ার সাল এবং চণ্ডীচরণপরায়ণস্য বাংলা অক্ষরে লেখা রয়েছে । এই লেখা থেকে বোঝা যায় যে মুদ্রাগুলি 1339 শকাব্দ ( 1417 – 18 খ্রিস্টাব্দ )এবং 1340 শকাব্দের (1418 -19 খ্রিষ্টাব্দ) সময় তৈরি করা । কিছুকাল রাজত্ব করার পর গণেশের মৃত্যু হয়।

রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে রাজা গণেশ তাঁর বিধর্মী পুত্র যদুকে পুণরায় হিন্দু ধর্মে নিয়ে আসেন এবং তাঁকে বন্দী করে রাখেন। যদু মানসিকভাবে ইসলাম ত্যাগ করেননি এবং সম্ভবত তাঁরই ষড়যন্ত্রে রাজা গণেশের মৃত্যু হয় ।গণেশের মৃত্যুর পরে জালালউদ্দিন নাম নিয়ে যদু সিংহাসনে আসীন হন। তবে 1340 শকাব্দের কিছু কিছু মুদ্রায় মহেন্দ্র দেব নামে এক হিন্দু রাজার নাম পাওয়া যায় ।এই মুদ্রা গুলি ও দনুজমর্দনদেবের মুদ্রাগুলি একই রকম । এর থেকে বোঝা যায় যে এই রাজা মহেন্দ্র দেব গণেশের উত্তরসূরী। আবার তারিখ- ই- ফিরিস্তা অনুযায়ী গণেশের আরেক পুত্র ছিল। এর থেকে অনুমাণ করা যায় যে রাজা গণেশের মৃত্যুর পর তাঁর আরেক পুত্র মহেন্দ্র দেব সিংহাসনে আসীন হন কিন্তু জালালউদ্দিন ওরফে যদু তাঁকে সহজেই রাজ্যচ্যুত করে সিংহাসন অধিকার করেন । জালাল উদ্দিন 1418 খ্রিস্টাব্দ থেকে 1433 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন এবং তিনি মুসলিম সুলতান রূপেই বাংলাতে রাজত্ব চালান।

রাজা গণেশ স্বল্পকাল রাজত্ব করলেও দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করেন। রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে তিনি উত্তরবঙ্গ, পশ্চিমবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু অংশ নিজের অধিকারে আনেন। ফিরিস্তা অনুযায়ী তিনি সুশাসক ছিলেন। তাঁর কার্যকলাপ বুঝিয়ে দেয় যে তিনি ছিলেন কূটনীতিজ্ঞ ও প্রচণ্ড ব্যক্তিত্বের অধিকারী। চন্ডী দেবীর প্রতি তাঁর প্রগাঢ় শ্রদ্ধা তাঁর মুদ্রা থেকে জানা যায়। আবার পদ্মনাভের বংশধর জীব গোস্বামীর সাক্ষ্য থেকে জানা যায় থেকে জানা যায় যে তিনি বিষ্ণুভক্ত ছিলেন। তিনি গৌড় ও পান্ডুয়ায় বেশকিছু স্থাপত্য নির্মাণ করান। শোনা যায় তিনি দনুজমর্দনদেব রূপে দিনাজপুরের প্রতিষ্ঠা করেন। এ কথা প্রচলিত আছে যে আদিনা মসজিদ (যা আসলে আদিনাথ মন্দির ছিল বলে দাবি উঠেছে) সংস্কার করে তিনি তাঁকে কাছারিবাড়িতে পরিণত করেন।

রাজা গণেশ আজকের বিদ্যালয়ের পাঠ্য ইতিহাস বইতে ব্রাত্য । বাংলার মুসলিম শাসকদের কথা সেখানে বিশদ উল্লেখ থাকলেও গণেশের নাম বাংলার ছাত্র-ছাত্রীদের শেখানো হয় না। ইতিহাস বইগুলিতে এইরূপ প্রতিপন্ন করার চেষ্টা হয় যে মধ্য যুগে বহিরাগত মুসলিম শাসকদের ( বহিরাগত বলে উল্লেখ করা হয় না) অধীনে হিন্দু প্রজারা খুশিতে ছিল। কিন্তু রাজা গণেশের ইতিহাস দেখিয়ে দেয় একজন হিন্দু রাজাকে উচ্ছেদের জন্য মুসলিম দরবেশ এবং সুলতানরা কতদূর যেতে পারতেন । সেই সঙ্গে বেশ কিছু অভিজাত হিন্দু রাজপুরুষ অর্থ ও ক্ষমতার লোভে মুসলিম দরবেশ শাসকদের সহায়তা করেছিলেন। ত্রিহুত রাজ্যের দেব সিংহ কিংবা গণেশের পুত্র জালাল উদ্দিন এই তথ্য প্রমাণ করে। আজকের বাংলাতেও দেব সিংহ বা যদুরা বর্তমান। এনারা অর্থ, ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির লোভে একজন পিতার বিরুদ্ধে , আরেকজন পুত্রের বিরুদ্ধে শত্রুতা করেছিলেন। যদু আবার স্বধর্ম ত্যাগ করে স্বভূমিতে বহিরাগত সংস্কৃতি ও প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। একইরকমভাবে আজকের পশ্চিমবঙ্গে একদল হিন্দু রাজপুরুষ ও বুদ্ধিজীবী বহিরাগত আরবী সংস্কৃতিকে পশ্চিমবাংলার বুকে প্রতিষ্ঠিত করতে বদ্ধপরিকর। আশ্চর্যের বিষয় যে সেই ১৯৪৭ সালেই আরবী শাসন ও সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে বাংলা দ্বিখণ্ডিত হয়। তারপরেও এনারা হিন্দু প্রধান পশ্চিমবঙ্গের জনবিন্যাস বদলাতে চান, আরবী সংস্কৃতির পরিমণ্ডল সৃষ্টি করতে চান এবং প্রশাসনকে বহিরাগত আরবী সংস্কৃতির ধারকদের হাতে তুলে দিতে চান ! আধুনিককালের এইসব দেব সিংহ বা যদুদের সেকুলার আখ্যা দেওয়া যায় কিনা পাঠক একটু ভেবে দেখবেন ।

তথ্য সূত্র : বাংলাদেশের ইতিহাস দ্বিতীয় খন্ড [মধ্যযুগ] : শ্রী রমেশ চন্দ্র মজুমদার। প্রথম প্রকাশ ১৩৭৩ বঙ্গাব্দ।