হে রাম…



Updated: 21 January, 2024 8:18 am IST

© স্বরূপ কুমার ধবল

তলোয়ারের ভয়ে সালোয়ার পরা কিছু স্বদেশ, স্বজাতি ও স্বধর্মবিদ্বেষী মানুষের গাত্র জ্বলন হচ্ছে অযোধ্যা রাম মন্দিরের পুনর্নির্মাণ এবং সেই মন্দিরে রামলালার বিগ্রহে প্রাণ প্রতিষ্ঠার আবেগ ও আয়োজন দেখে। Facebook Instagram, WhatsApp- এ তাদের তোষিত হৃদয় নিংড়ে বিকৃত ন্যাকি লোকদেখানো সেকুলারিজমের এক বোবা কান্না প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। পাঁচশো বছর আগে ১৫২৯ সালে বাবরের সেনাপতি মীর বাকি যখন হাজার হাজার হিন্দুকে হত্যা করে অযোধ্যার রাম জন্মভূমির পবিত্র মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি করেছিল সেই ঘটনা সম্পর্কে বর্তমানের হীনমন্যতায় ভোগা একশ্রেণির লুপ্তপ্রায় প্রজাতির কাছে কোন প্রতিবাদ শোনা যায়নি।। তাদের যত প্রতিবাদ বাবরি মসজিদ কেন ভাঙা হলো তা নিয়ে । নির্লজ্জ ,বেহায়া, তোষামোদে, তাবেদারের দল কেবল শিশুপাঠ্য কাহিনিতে মুখ ঢেকে বসে থাকে। তাদের যত আক্রমণ শুধু হিন্দুর বেলায় । পাকিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে যারা মুসলমানদের মার খেয়ে ঘর-বাড়ি, জমি- জায়গা, পুকুর, বাগান সব ফেলে কোন রকমে যারা প্রণে বাঁচলো তাদের মুখে আবার যখন ধর্মনিরপেক্ষতার কথা শোনা যায় তখন তাদের কোন্ বিশেষণে বিশেষিত করব তার কোন পরিভাষা খুঁজে পাই না। স্বদেশ, স্বসংস্কৃতি, স্বধর্মকে অবমাননা করাতেই এদের পৌরুষত্ব। যে মানুষ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে পারে না সে শীত ঘুমিয়ে আচ্ছন্ন। রাম ছাগলের দাড়ির সুড়সুড়িতে যারা এতখানি আচ্ছন্ন তাদের গণ্ডারের চামড়া ছেদন করে শ্রীরামের আবেগ প্রবেশ করাটা সত্যিই অবিশ্বাস্য। মানসিকভাবে তারা প্যারালাইজড।

সমগ্র বিশ্ব যখন রাম নামে মাতোয়ারা তখন তারা ধর্মনিরপেক্ষতার বুলি আওড়ে সংবিধানের দোহাই দিয়ে নিজেকে নিরপেক্ষ প্রতিপন্ন করার এক বেল্লিক প্রয়াসে ব্যস্ত।

হে নির্লজ্জ, বেহায়া, তোষামোদে, প্রবঞ্চক, ঠক, নিজের বিদ্যা-বুদ্ধিকে বন্ধক দেওয়া স্বধর্মবিদ্বেষী হিন্দু! তোমার থেকে একজন আনপড়, অশিক্ষিত মুসলমান অনেক সৎ ,সাহসী ও সাচ্চা। সে অন্তত নিজের ধর্মের অবমাননা করে না, বরং নিঃস্বার্থভাবে স্বধর্মের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে। অনেক মুসলমান নির্দ্বিধায় স্বীকার করে পাঁচ-সাত পুরুষ আগে তার পূর্বজ হিন্দু ছিল। কিন্তু তোমার স্মৃতি এতই ক্ষীণ এবং আত্মা এতটাই কলুষিত যে তুমি তোমার পূর্বজদের হত্যাকারীদের ভুলে গেছো, বিস্মৃত হয়েছো তোমার সংস্কৃতির ধ্বংসকারীদের।

কয়েকটা ডিগ্রী অর্জন করলেই শিক্ষিত হয় না। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বলেছেন- ‘যে শিক্ষা আমাদের জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ করে না সেই শিক্ষার কোন মূল্য নেই।’ অবশ্য তার কথা তোমাদের কাছে বলা আর উলুবনে মুক্তো ছড়ানো একই ব্যাপার। তোমাদের কাছে তো নেতাজি কুইসলিঙ বা তোজোর কুত্তা। তাই তো ! ঠিকই বুঝতে পারছো।

সেক্যুলারিজমের ন্যাকামি আর ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্ন তুলে তোমরা আগুন গিলেছো। ১৯৫০ সালে ২৬ শে জানুয়ারি ভারতীয় সংবিধানে কোথায় ছিল তোমার সেকু্লারিজম? দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে যখন দেশ ভাগ হলো সে বিষয়ে প্রতিরোধ করাতে তোমাদের পূর্বজদের মর্দাঙ্গী কোথায় ছিল? ঐসব না-মর্দের তোমরা ভবিষ্যৎ। তাই তোমাদের কন্ঠে হিন্দু বিদ্বেষ ধ্বনিত হবে এটাই স্বাভাবিক। ১৯৭৬ সালে ৪২তম সংবিধান সংশোধন করে যখন কেবল ভোট ব্যাঙ্কের জন্য হিন্দুদের রাষ্ট্রটাকে ধর্মনিরপেক্ষ করে দেওয়া হল রাতারাতি তখন এই বড়ো বড়ো বুলিগুলো কোথায় ছিল? মৌলিক অধিকারের ১৪ থেকে ১৮ নম্বর ধারায় সাম্যের অধিকার দিয়ে ২৯ এবং ৩০ নম্বর ধারায় উপধারা সৃষ্টি করে তোমাদের আরাধ্য দেবতাদের যখন বিশেষ সুবিধা করে দেওয়া হল তখন কোথায় ছিল এই সচেতনতা, এই দেওয়াল লিখন? সংবিধানের অপরিবর্তনীয় প্রস্তাবনাকে যখন পরিবর্তন করা হলো তখন তোমরা লুঙ্গিতে মুখ ঢেকে চোখ বন্ধ রেখে জপ করছিলে- দে শুয়ারের পা ধুয়িয়ে। অনেককে আবার দেখছি আপত্তি তুলেছে মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে ২২ তারিখে ধর্মীয় উদযাপন করার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে । ধর্মীয় উদযাপন তার কাছে উন্মাদনা আর ১৯৯১-৯২ সালে কাশ্মীরের প্রতিটি মসজিদে যখন মাইকিং হচ্ছিল তখন সেটাকে তোমাদের ঘুম পাড়ানি গান মনে হয়েছিল। আর মেট্রো তো কেবল মেট্রোপলিটন আছে, কিন্তু সারা দেশের আনাচে-কানাচে যখন দিনে পাঁচবার ৩৬৫ দিন আপনার পিতৃ-পুরুষের নাম উচ্চারণ করে অন্যদের জীবন নাজেহাল করে দিচ্ছে তখন হাত দিয়ে একটি বর্ণও ফেসবুক ওয়ালে বা হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাসে ভেসে ওঠে না। এটাই হচ্ছে তোমাদের প্রকৃত চরিত্র। এই সমস্ত মানুষগুলো আবার নিজেদের জাহির করতে চায় নিরপেক্ষ বলে। ন্যাকা। ভাবে আমরা কত সচেতন , কত সভ্য। মধুসূদন যথার্থই বলেছেন- হা আমার পোড়া কপাল মদ মাস খ্যেয়ে ঢলা ঢলি করলেই কি আর সভ্য হওয়া যায়, একেই কি বলে সভ্যতা?

হাজার বছর ধরে কোটি কোটি মানুষের আরাধ্য দেবতা হলেন শ্রীরামচন্দ্র। শ্রীরাম কোন নাম নয়, তিনি হলেন একটা আদর্শ, একটা চেতনা, একটা জাতীয় জীবনের আবেগ, একটা অতি প্রাচীন সভ্যতা ও সংস্কৃতির পরিচায়ক। আদর্শহীন হিন্দুর পক্ষে তাকে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়।

৫০০ বছর দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলেছে। হাজার হাজার মানুষ সেইসব যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছেন একটা আদর্শ ও আবেগকে রক্ষা করার জন্য । তাদের নিঃস্বার্থপর বলিদান তোমাদের মত স্বার্থান্বেষী আদর্শহীনদের মগজে ঢুকবে না – অঙ্গারঃ শত ধৌতেন মলিনত্বং ন মঞ্চতে।

সুদীর্ঘ প্রাচীনকাল থেকে প্রবাহমান রামনামের স্রোতধারা যা প্রকৃত হিন্দুর শিরা-উপশিরায় প্রবাহিত, সেই সেন্টিমেন্টকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় সরকার অর্ধদিবস ছুটি ঘোষণা করাতে এদের অনেকের গায়ে ফোসকা পড়ে যাচ্ছে। শ্রমজীবী, কৃষিজীবী, মেহনতী মানুষের হে ধাপ্পাবাজ প্রতিনিধি! কোথায় ছিল তোমাদের এই কর্মপ্রবণতা যখন তিন দশক ধরে তোমরা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, আদালত, কলকারখানা অফিস শূন্য করে প্রতিটি মানুষকে জোরপূর্বক বছরে ১০০ দিনের কাজ দিয়েছিলে ব্রিগেড ভরানোর। পেন ডাউন, টুল ডাউন, ওয়ার্ক টু রুল,- এত সহজেই ভুলে গেলে? এ তো তোমাদেরই সৃষ্টি। ফাঁকিবাজি, স্লোগানবাজি, ধর্মঘট তো তোমাদেরই দান । আমরা কিন্তু ভুলিনি। তাই চোরের মুখে রাম নাম মানায় না। থুড়ি থুড়ি… তোমাদের তো রাম নামেই আপত্তি।

হে অতি বুদ্ধির অহংকারে মদমত্ত, মোহাচ্ছন্ন, তোষামোদকারী, প্রতারক সেকুলার, ভারতীয় হিন্দু আচার, রীতি-নীতি, পুরাণ ছাড়া তোমার জীবন , জীবিকা, ব্যবসা, শিক্ষা কোনটাই চলবে না। জন্ম, অন্নপ্রাশন, উপনয়ন, বিবাহ, মৃত্যু ও শ্রাদ্ধ, শাঁখা থেকে সিন্দুর, ঠাকুর ঘর থেকে অপারেশন থিয়েটার সর্বত্রই ধর্ম জড়িত, তাকে তুমি বাদ দিতে পারবে না নিজের জীবন থেকে । তবুও তুমি বিরোধিতা করে যাবে । কারণ স্বধর্মের বিরোধিতা করাটাই তোমার ধর্ম । গবেষকদের মতে তোমরা হীনমন্যতায় ভোগা, এক জাতীয় স্থিতবুদ্ধি, বিকৃতমনা, কফিনবদ্ধ মানসিক রোগী।

জয় জয় রঘুপতি রাঘব রাজা রাম/ পতিত পাবন সীতারাম।

জয় শ্রীরাম।