শুধুমাত্র মুসলিমদের নামাজ পড়ার জন্য আলাদা কক্ষ কেন দিতে হবে? এক মুসলিম আইনজীবীর করা জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে এমনই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন গুয়াহাটি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি। সাফ জানিয়ে দিলেন, আলাদাভাবে প্রার্থনা করতে হলে অন্যত্র যান। বিমানবন্দরে আলাদা কক্ষ দেওয়া সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, গুয়াহাটির লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলৈ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মুসলিমদের জন্য আলাদা প্রার্থনা কক্ষ চেয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন সাইদুর জামান নামে এক আইনজীবী। সেই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সন্দীপ মেহেতা এবং বিচারপতি সুস্মিতা ফুকনের ডিভিশন বেঞ্চ গঠিত হয়। গত ২৯শে সেপ্টেম্বর সেই মামলার শুনানি হয়।
শুনানিতে পিটিশন দায়েরকারী আইনজীবীকে কড়া ভাষায় তুলোধোনা করেন বিচারপতিদ্বয়। প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্য আলাদা কক্ষ কেন দিতে হবে?
প্রধান বিচারপতি মেহেতা বলেন, কোনো একটি নির্দিষ্ট ধর্মের জন্য প্রার্থনা গৃহ নির্মাণ করা কি মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে? আমাদের দেশ ধর্মনিরপেক্ষ? তাহলে একটি বিশেষ ধর্মের জন্য আলাদা প্রার্থনা গৃহ কেন? এখানে বিভিন্ন ধর্মের লোক বসবাস করে? তাহলে কোন যুক্তিতে শুধুমাত্র একটি ধর্মের মানুষের জন্য প্রার্থনা গৃহ নির্মাণ করা আইনসিদ্ধ হতে পারে? যার প্রার্থনা করা প্রয়োজন, সে অন্যত্র গিয়ে প্রার্থনা করবে।
প্রধান বিচারপতির কড়া বাক্যেও পিছু হটেননি মামলার পক্ষে থাকা আইনজীবী। ওই আইনজীবী যুক্তি দেন যে কিছু কিছু বিমানের সময় আছে, যেগুলি নামাজ পড়ার সময়ে ছাড়ে। তাই বিমান বন্দরে নামাজ পড়ার জন্য কক্ষের প্রয়োজন। এই যুক্তি শুনে চটে যান বিচারপতিদ্বয়। বলেন, তবে প্রার্থনা বা নামাজের সময় বাদ দিয়ে অন্য সময়ের বিমানের টিকিট বেছে নিন। তাহলে আপনার নামাজও হবে আর আপনার প্রার্থনাও হবে। শুধুমাত্র বিশেষ ধর্মের স্বাচ্ছন্দের জন্য আমরা বিশেষ কোনো নির্দেশ দিতে পারি না।