© শ্রী সূর্য শেখর হালদার
” গুরুর্বহ্মা গুরুর্বিষ্ণু গুরুর্দেব মহেশ্বর/ গুরুরেব পরমব্রহ্ম তস্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ।”
( শ্রী গুরু দেব ই ব্রহ্মা : গুরু বিষ্ণু: গুরু মহেশ্বর: গুরুদেব পরমব্রহ্ম :সেই গুরুদেব কে প্রণাম করি)
বিশ্বে ভারতের পরিচয় তার সনাতন সংস্কৃতি। সেই সংস্কৃতি এভাবেই শ্রদ্ধা জানায় গুরুকে। এর অর্থ এটাই যে ভারতীয় সংস্কৃতিতে গুরু এক বিশেষ স্থানের অধিকারী ।গুরু শব্দটি সংস্কৃত শব্দ দ্বয় ‘গু’ এবং ‘রু’ এর সমন্বয়ে তৈরি। গুরু শব্দের অর্থ ‘অন্ধকার’ আর ‘রু’ এর অর্থ হল ‘বিনাশক’। অর্থাৎ শিষ্যের হৃদয়ের অন্ধকার যিনি নাশ করেন তিনি ই হলেন গুরু। মনে রাখতে হবে গুরুর প্রতি শব্দ শিক্ষক হতে পারে না। শিক্ষক জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে শিক্ষা দেন, কিন্তু গুরু শব্দের তাৎপর্য আরও অনেক গভীর তিনি শিষ্যের ব্রহ্মজ্ঞান অর্জনে সাহায্য করেন। তাই অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি এই গুরু শব্দটিকে সরাসরি ইংরেজি ভাষায় গ্রহণ করেছে। ইউরোপিয়ান সংস্কৃতিতে ‘গুরু’ বলে কিছু হয় না তাই গুরুর ও কোন ইংরেজি প্রতিশব্দ নেই।
ভারতীয় পরম্পরাতে গুরু
ভারতীয় পরম্পরা তে গুরুর অস্তিত্ব আমরা পাই প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে (হেরোডোটাসকে ইতিহাসের জনক বিবেচনা করে ) ।ভারত তথা পৃথিবীর আদি কাব্য রামায়ণে রাজা দশরথের কুলগুরু ছিলেন মহর্ষি বশিষ্ঠ। তিনি শ্রীরাম এবং তাঁর ভ্রাতাগণদেরও গুরু l শ্রীরামের আরেক গুরু ছিলেন মহর্ষি বিশ্বামিত্র। তিনি কিশোর রামকে জ্ঞানের আলো দেখিয়ে ধর্ম ও দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ প্রস্তুত করেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় তাড়কা রাক্ষসী বধের সময়, রাম ইতস্তত করছিলেন তাড়কাকে বধ করতে, কেননা তাড়কা রাক্ষসী হলেও একজন নারী। গুরু বিশ্বামিত্র তখন বোঝালেন প্রজা রক্ষার নিমিত্তে কোন নৃশংস বা দোষযুক্ত কর্ম , এমনকি স্ত্রী হত্যা করলেও সেটা সনাতন ধর্মে পাপ হয় না ( বাল্মিকী রামায়ণ: বাল কান্ড: স্বর্গ ২৫: শ্লোক ১৮-১৯) ।
মহাভারতের কথা উঠলেই আমাদের স্মরণ হবে গুরু দ্রোণাচার্যের প্রসঙ্গ, কিন্তু গুরু দ্রোণ ছিলেন আসলে এক বেতনভুক শস্ত্র শিক্ষক ।তিনি পাণ্ডব ও কৌরবদের শিক্ষা শেষে তাঁদের থেকে এই গুরুদক্ষিণা চান যে রাজকুমাররা পাঞ্চাল রাজ্যের রাজা দ্রুপদকে বন্দী বানিয়ে নিয়ে আসুক। তাঁর এই রূপ গুরুদক্ষিণা চাওয়ার কারণ ছিল দ্রুপদের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত শত্রুতা। কিন্তু একজন প্রকৃত গুরু, শিষ্যের মাধ্যমে এই রূপ নিজের স্বার্থ সিদ্ধির বা ব্যক্তিগত প্রতিশোধ গ্রহণের কাজ করতে পারেন না। তাই মহাভারতে প্রকৃত গুরু তিনি নন: বরং শ্রীকৃষ্ণ, যিনি স্বয়ং পরমাত্মা, যিনি ধর্মক্ষেত্র কুরুক্ষেত্রে অর্জুনকে (জীবাত্মার প্রতীক ) জীবনে চলার প্রকৃত পথ প্রদর্শন করেন, অর্জুনের মনের অন্ধকার দূর করে তাঁকে আলোকোজ্জ্বল পথে নিয়ে আসেন।
ভারত ইতিহাসের পরবর্তী অধ্যায় গুলিতেও এইরকম গুরুর সন্ধান আমরা পাই। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের অখণ্ড ভারত নির্মাণের যে প্রচেষ্টা, তার অন্যতম কাণ্ডারী ছিলেন গুরু চাণক্য বা কৌটিল্য ।বহিরাগত সম্রাট আকবরের সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে নরশার্দুল রানা প্রতাপকে সাহস ও উপদেশ যোগান গুরু রাঘবেন্দ্র । শিবাজীকে হিন্দু সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা তে ছোটবেলাতেই প্রেরণা দেন গুরু দাদাজি কোন্ডদেব। আর ভারতীয় সংস্কৃতিকে যিনি সারা পৃথিবীতে বিস্তারিত করেন, সেই স্বামী বিবেকানন্দের গুরু ছিলেন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ।
মহান ঐতিহাসিক চরিত্র দের মহান করে তোলার জন্য গুরুদের অবদান অনস্বীকার্য। তাই ভারতীয় সংস্কৃতিতে গুরুর স্থান ঈশ্বর সম। গুরু সনাতন সংস্কৃতিতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝানোর জন্য একটি প্রবচন আছে।
“গুরু গোবিন্দ দুয়ো খারে, কাকে লাগু পায় /বলিহারি গুরু আপনে যিন গোবিন্দ দিও বাতায়ে।”
এই প্রবচনে একটি পরিস্থিতির উল্লেখ করা হয়েছে , যেখানে গোবিন্দ (ঈশ্বর ) আর গুরু দুজনেই দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছেন। এখন ভক্ত কাকে আগে প্রণাম করবে ? এই প্রবচনেই রয়েছে সমাধান ।আগে ভক্ত গুরুর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করবে, কৃতজ্ঞতা জানাবে , কারণ গুরুই আমাদের ঈশ্বর চেনান।
ঠিক এই কারণেই গুরু পূর্ণিমা পালন সনাতন সংস্কৃতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথা। হিন্দু পঞ্জিকার আষাঢ় মাসের যে পূর্ণিমা , সেটাই হলো গুরু পূর্ণিমা তিথি। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী আদিদেব মহাদেবই হলেন আদিগুরু। তিনি এই বিশেষ তিথিতে আদি গুরু হয়ে সপ্তর্ষি কে ( অত্রি, বশিষ্ঠ, পুলহ, অঙ্গীরা, পুলস্থ্য, মরিচি, ক্রতু) মহাজ্ঞান দেন। অনেকে মনে করেন গুরু পূর্ণিমা হল মহাকবি বেদব্যাসের জন্মতিথি। তাই এই তিথি ব্যাস পূর্ণিমা নামেও খ্যাত ।প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য বেদব্যাস মহাভারত ছাড়াও পুরাণের রচনাকার এবং চতুর্বেদের সম্পাদক ।বৌদ্ধ ধর্মেও এই তিথির প্রভূত গুরুত্ব রয়েছে। এই তিথিতে বোধিজ্ঞান প্রাপ্ত ভগবান বুদ্ধ উত্তর প্রদেশের সারনাথে প্রথম উপদেশ দান করেন। বুদ্ধদেবের জন্মভূমি নেপালে তিথিটি শিক্ষক দিবস রূপে পালন করা হয়।
গুরু মাহাত্ম্য
মনুষ্য জীবনের অন্যতম লক্ষ্য হলো মোক্ষলাভ। মোক্ষলাভ করতে গেলে প্রয়োজন চৈতন্য লাভের ।আর চৈতন্য লাভ করতে হলে বুঝতে হবে পরমেশ্বর তত্ত্ব। মানুষ আর পরমেশ্বর এর মধ্যে যে সেতু, সেই সেতুই হলো গুরু ।গুরু প্রদত্ত জ্ঞান ই আমাদের অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসে ,অসৎ থেকে সৎ বানায় ।আজকাল আমরা দেখি সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে আমরা কি পাচ্ছি, কি পেয়েছি, আর কি পাব – সর্বদা তারই হিসেব-নিকেশ চলছে এমনকি শিক্ষিত সমাজও এই হিসাবে ব্যস্ত, কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি যে প্রকৃতিতে তথা জীবজগতে সবাই কিন্তু পাবার সঙ্গে সঙ্গে দিয়েও থাকে। বৃক্ষ মাটি থেকে জল ও খনিজ উপাদান সংগ্রহ করে ।পরিবর্তে অক্সিজেন দেয় । জীব জগতের প্রতিটি প্রাণী তা গ্রহণ করে। আবার ধুপ জ্বলে, আর আমরা তার সুগন্ধ পাই। কিন্তু ধুপ নিজে জ্বলে শেষ হয়ে যায় ।বৃক্ষ বা ধূপের ন্যায় ত্যাগের শিক্ষা আজকাল মানুষ প্রায় ভুলে গেছে। তাই প্রকৃতি ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠেছে মানুষ। অর্থ রোজগারের উদ্দেশ্যে অবলীলায় ধ্বংস করছে প্রকৃতিকে, যা তার নিজের আধার। সবচেয়ে বুদ্ধিমান হয়েও মানুষ আজ বিপথগামী। এই বিপথগামিতা রোধ করার জন্যই প্রয়োজন গুরুর। গুরু পূজন মানুষের বুদ্ধির অহংকার দূর করে; তার মধ্যে সমর্পণের ভাব জাগিয়ে তোলে। আমরা কে না জানি, অর্জুনের সমর্পন ভাবই তাঁকে ভারত পথিক শ্রীকৃষ্ণের কাছে দিব্য জ্ঞান লাভ করতে সাহায্য করেছিল?
গুরুপূজন ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ
ভারতের সনাতন সংস্কৃতিকে মাথায় রেখেই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ গুরু পূর্ণিমা পালনের আদর্শ গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের এটি একটি অন্যতম উৎসব , যা প্রতিবছর মর্যাদা সহকারে পালিত হয় ।এখন প্রশ্ন হচ্ছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের গুরু কে? উত্তরে বলা যায় সংঘের গুরু কিন্তু কোন ব্যক্তি নয়; বরং একটি তত্ত্ব, যার বহিঃপ্রকাশ হল অগ্নিবর্ণ গৈরিক ধ্বজ। তত্ত্ব হল শাশ্বত, কিন্তু ব্যক্তি তা নয় । তাই সংঘ ব্যক্তি নয় তত্ত্বকে গুরু হিসেবে পূজা করে। আকারে প্রজ্বলিত শিখার ন্যায় গৈরিক ধ্বজ ত্যাগ ও সমর্পণের প্রতীক। অগ্নি স্বয়ম কে প্রজ্বলিত করে জগতকে আলো প্রদান করে। সূর্য নিজে জ্বলে মহাবিশ্বে আলোক প্রদান করে ।তাই গৈরিক ধ্বজও অগ্নি বরণ, কেননা এটি নিজে জ্বলে রাষ্ট্র ও সমাজকে আলোক শিখা প্রদর্শনের প্রতীক। এছাড়াও গৈরিক রঙ ভারতীয় সংস্কৃতিতে এক বিশেষ সম্মানের অধিকারী। সেই সুপ্রাচীন কাল থেকে ভারতীয় ঋষি ও সাধুগণ গৈরিক বস্ত্র পরিধান করতেন ।মহর্ষি দধীচি যেমন সমাজের কল্যাণের জন্য নিজের প্রাণ ত্যাগ করেছিলেন , গেরুয়া বসন ধারীরাও ভারতীয় সমাজ ও সংস্কৃতি উন্নয়নের স্বার্থে এই রূপ করেছেন। তাঁদের প্রতি সম্মান জানিয়েই ধ্বজের রং হয়েছে গৈরিক। মনে রাখতে হবে ভারতের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকারও সবচেয়ে উপরে রঙ হল গৈরিক।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ সমগ্র ভারতীয় তথা হিন্দু সমাজকে রাষ্ট্রীয়তার তথা মাতৃভূমির আধারে সংগঠিত করার কার্য করে থাকে। তাই কোন ব্যক্তি কে গুরুর আসনে না বসিয়ে যজ্ঞের জ্বালাময়ী অগ্নি তথা ত্যাগের প্রতীক গৈরিক ধ্বজকে গুরুর আসনে আসীন করেছে। মনে রাখতে হবে মহর্ষি দধীচি প্রাণ ত্যাগ করেছিলেন যাতে করে তাঁর অস্থি থেকে বজ্রায়ুধ তৈরি হতে পারে, আর সেই অস্ত্র অসুর বধ করতেও জগত কল্যাণের কাজে লাগে। একজন স্বয়ংসেবকেরও সেইরূপ সমর্পণ ভাব মনের মধ্যে জাগ্রত হওয়া প্রয়োজন , কেননা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের মতে ব্যক্তির শক্তি বুদ্ধি ও সম্পদের উপর অধিকার ব্যক্তির নয় ; বরং সমাজ তথা রাষ্ট্রের। ব্যক্তি তার থেকে ঠিক ততটুকুই নেবে , যতটুকু বাঁচার তাগিদে তার প্রয়োজন। বাকিটুকু সে দান করবে সমাজ তথা রাষ্ট্র রুপ পরমেশ্বরকে । উদ্দেশ্য সমাজ তথা রাষ্ট্রের হিতসাধন। এই মনোভাবই হল সমর্পণ ভাব আর সেই মনোভাবকে জাগরিত করার উদ্দেশ্যেই পরম পূজনীয় ডাক্তার জি ( শ্রী কেশব বলিরাম হেড গোওয়ার জী) গুরু পূজন উৎসব চালু করেন।
সংঘের প্রতিটি স্বয়ংসেবককে মনে রাখতে হবে সমাজ থেকে আমরা যা পাই , তা অন্যকেউ প্রদান করে বলেই আমরা পাই। তাই আমাদের উচিত আমাদের শক্তি ,বুদ্ধি আর সম্পদ সমাজ হিতে দান করা। আমাদের শক্তি, বুদ্ধি ,সম্পদ- আসলে সবই সমাজের । সূর্য পূজার সময় আমরা যেমন নদীর জল নদীতেই অর্ঘ্য হিসেবে প্রদান করি , সেই রূপ আমাদের শক্তি ,বুদ্ধি ও সম্পদ যা আমরা সমাজ থেকেই প্রাপ্ত করি ,তা সমাজ হিতেই প্রদান করা উচিত। এখানে ‘আমি’ অহং এর কোন স্থান নেই । মনে রাখতে হবে মুচি ,মেথর, ঝাড়ুদার থেকে শুরু করে ইঞ্জিনিয়ার ,অধ্যাপক, বিজ্ঞানী: কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী: গুজরাট থেকে অরুণাচল: গ্রাম থেকে নগর: মফস্বল থেকে বড় শহর – সবাই সমাজ হিতেই অবিরত কর্ম সম্পাদন করছে। সমাজ তথা রাষ্ট্রহিতে ত্যাগ ও কর্মসম্পাদনের ভাবই কিন্তু আমাদের একত্রিত করেছে, জাতি হিসেবে গঠিত করেছে। এই আত্মোৎসর্গের ভাব দেশের প্রতিটি মানুষের মধ্যে জাগ্রত হওয়া প্রয়োজন। এর অর্থ এই নয় যে আমরা পরিবারের উন্নতির জন্য কাজ করব না। কিন্তু পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন আমাদের উচিত সমাজ তথা দেশের জন্যও কিছু সেবা ও সময় প্রদান করা। এই আত্মোৎসর্গের ভাবই আমাদের সংস্কৃতি । সমাজে এই ভাবনা প্রতিস্থাপন করলে আমরা হিংসা, দ্বেষ, স্বার্থপরতা এবং ভ্রষ্টাচার মুক্ত হতে পারব ।গড়ে তুলতে পারব এক সুস্থ, সুন্দর, শক্তিশালী সমাজ তথা রাস্ট্র। এই কথা স্মরণ করেই পরম পূজনীয় ডাক্তারজী এবং গুরুজি নিজেদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের কথা না ভেবে, সমাজ রাষ্ট্র গঠনের জন্য তৈরি ও পালন করেছিলেন করেছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ কে। ১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠন আজ এক মহীরুহে পরিণত হয়েছে ত্যাগের আদর্শকে সামনে রেখেই।
পরিশেষে বলা যায় সমাজ তথা রাষ্ট্র নির্মাণ ত্যাগ ও সেবার আদর্শ ছাড়া সম্ভব নয়। কিন্তু আজকের সমাজে আমরা দেখছি বস্তুবাদ আর ভোগবাদের আধিক্য। মানুষ আজ সর্বদা কিছু পাবার জন্য ছুটছে ,ভ্রষ্টাচার ও অবৈধ সংসর্গে লিপ্ত হচ্ছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে সবাই যখন সেবাদানের আদর্শে ব্রতী হবে, তখনই সুস্থ ,সুন্দর ও শক্তিশালী সমাজ গঠিত হবে। এই সেবাদান তখনই সম্ভব, যখন আমরা হব অহংমুক্ত ও সমর্পিত ।আর এই সমর্পিত ভাব জাগানোর জন্যই প্রয়োজন গুরু পূজন । তমসা থেকে জ্যোতির পথে নিয়ে যেতে পারে একমাত্র
গুরুই। আর সকলের সেই গুরু যদি হয় অগ্নিবর্ণ গৈরিক ধ্বজ,
তাহলে সমাজ তথা দেশের প্রভাবশালী হওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।
পরিশেষে অগ্নিবরণ গুরু গৈরিককে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই।