© অমিত মালী
বর্তমানে বাগেশ্বর ধাম এবং এর আচার্য্য শ্রী ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ শাস্ত্রী খবরের শিরোনামে। তাঁর বিরুদ্ধে সেক্যুলার সিস্টেম পরিচালিত মিডিয়ার অভিযোগ যে তিনি কুসংস্কারকে উৎসাহিত করছেন। আর এ নিয়ে এক শ্রেণীর মিডিয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে নিন্দার অন্ত নেই। যদিও সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী জানিয়েছেন যে এসবই তাঁর বিরুদ্ধে চলা ষড়যন্ত্রের অংশ। তাঁর দাবি, যেদিন থেকে তিনি ধর্মান্তরিত মানুষদের হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেছেন, সেদিন থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর কথায়, যারা ধর্মের বিরোধী, তারাই এমন ষড়যন্ত্র এবং অপপ্রচার করে চলেছে। তিনি বলেন, “কিছু লোক আছে যারা প্রভু শ্রী রাম এবং অযোধ্যার অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এমনকি লাগাতার হিন্দু সাধুদের উপরে আক্রমণ নেমে আসছে। ঐসমস্ত লোকেদের আমাদের নিয়ে সমস্যা রয়েছে কারণ আমরা সেই সমস্ত মানুষদের হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনার কাজ করছি যারা হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছিল। আমি আগেই বলেছিলাম যে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হতে পারে। এখন হচ্ছে। আমরা এসবে ভয় পাই না।”
তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া FIR নিয়েও মুখ খুলেছেন ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ শাস্ত্রী। উল্লেখ্য, শ্যাম মানব নামে এক ব্যক্তি মহারাষ্ট্রে শাস্ত্রীর বিরুদ্ধে কুসংস্কার ছড়ানোর অভিযোগ তুলে FIR দায়ের করেছেন। কথা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে কুসংস্কার ও অলৌকিক শক্তির কথা প্রচার করছেন শাস্ত্রী, অভিযোগ ওই ব্যক্তির। যদিও সেই অভিযোগকে তেমন একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না তিনি।
ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ শাস্ত্রী বলেন, “ধর্মান্তকরন গোষ্ঠীগুলো শত শত কোটি টাকা খরচ করে হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করার কাজ করছে। আমরা সেই সব মানুষদের সনাতন হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনার কাজ করে চলেছি। তাই আমার বিরুদ্ধে দশ কোটি খরচ করে ষড়যন্ত্র করা এমন কিছু ব্যাপার নয় তাদের কাছে।”
প্রসঙ্গত, ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী ২০২২ খ্রিস্টাব্দের ক্রিসমাসের দিন প্রায় ৩০০ খ্রিষ্টানকে হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনেন। আর তারপর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয় সমালোচনা। সেই সমালোচনা প্রথম মিডিয়া থেকে শুরু হলেও পরে তা FIR পর্যন্ত গড়ায়। যদিও এ সব করে তাকে দমিয়ে রাখা যাবে না বলেই সাফ জানিয়েছেন শাস্ত্রী মহারাজ।
তাঁর কথায়, “এ দেশে ভন্ডামি একটু অন্য স্তরের। দরগায় চাদর চড়ানো কিংবা চার্চে মোমবাতি জ্বালানো নিয়ে কোনও প্রশ্ন কেউ করেনা। কিন্তু হনুমান চালিসা পাঠ করা কিংবা সনাতন ধর্ম নিয়ে কথা বললেই তাকে কুসংস্কার ছড়ানোর অভিযোগে সমালোচনার শিকার হতে হয়।”
বাগেশ্বর ধাম মন্দির মধ্য প্রদেশের ছত্তরপুর জেলায় অবস্থিত। ওই মন্দির ও ধাম শ্রী হনুমানকে সমর্পিত। ২৬ বছর বয়সী ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ শাস্ত্রীর আসল নাম ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ গর্গ। তিনি এই ধামের প্রতিষ্ঠাতা মহন্ত, সিদ্ধ সাধু দাদা গুরুজী মহারাজের উত্তরাধিকারী। বর্তমানে বাগেশ্বর ধামের মহন্ত অর্থাৎ প্রধান পুরোহিত ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ শাস্ত্রী। পুরো মধ্যপ্রদেশের হিন্দুদের কাছে জনপ্রিয় এই ধাম এবং ভক্তদের কাছে ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ শাস্ত্রী পরিচিত ‘বাগেশ্বর ধাম সরকার’ নামে।