প্রথমে প্রেম এবং পরে হিন্দু রীতি মেনে বিয়ে। বিয়ের পরে স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে চেয়ে হিন্দু ধর্ম গ্রহন করেছিলেন মুসলিম তরুণী। কিন্তু তারপরেই বেঁকে বসেন হিন্দু যুবক। বাড়িতে মেনে নেবে না, এই অজুহাত দিয়ে স্ত্রীকে ছেড়ে বেপাত্তা হয়ে যান ওই হিন্দু যুবক। পরে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে অবশ্য হিন্দু যুবককে খুঁজে বের করা হলেও স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করতে রাজি নয় সে। আর এমন জঘন্য ঘটনার স্বাক্ষী থাকলো কোচবিহার জেলার দিনহাটার ভেটাগুড়ি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সিঙ্গিজানি গ্রাম।
জানা গিয়েছে, গ্রামের বাসিন্দা তাপস বর্মণ কর্মসূত্রে দিল্লীতে থাকতেন। সেখানে একটি ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করত সে। সেখানেই একই কোম্পানিতে কাজ করতো দক্ষিণ ২৪ পরগনার তরুণী শরিফা খাতুন। সেখানেই দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় আড়াই বছর প্রেম চলার পর দুজনে বিয়ে করেন। বিয়ের পর ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম গ্রহন করেন শরিফা। এর পর এক বছর সংসারও করেন দুজনে। তারপর হঠাৎই একদিন শরিফাকে ছেড়ে তাঁর সমস্ত সোনার গয়না নিয়ে দিনহাটায় গ্রামের বাড়িতে পালিয়ে আসেন তাপস।
প্রায় ৬ মাস কেটে গেলেও দিল্লীতে না ফিরে আসায় দিনহাটায় তাপসের গ্রামের বাড়িতে আসার সিদ্ধান্ত নেন শরিফা। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার, ১০ই জানুয়ারি দিনহাটায় তাপসের গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছান। শরিফাকে আসতে দেখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান তাপস।
এমন খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভিড় জমান গ্রামবাসীরা। দেখা যায়, শরিফা শাঁখা ও সিঁদুর পরে রয়েছেন। এসে পৌঁছান স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য। তাঁরাই তাপসকে খুঁজে নিয়ে আসেন। সকলে বলা সত্বেও শরিফার সঙ্গে সংসার করতে রাজি নয় তাপস। পরে খবর দেওয়া হলে এসে পৌঁছায় দিনহাটা থানার পুলিশ। পুলিশের বোঝানো সত্বেও সংসার করতে রাজি নয় তাপস।
তাপসের মা বলেন, ‛আমার ছেলে কবে বিয়ে করেছে, কী করেছে কিছুই জানি না। আমরা ছেলের বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজছিলাম। ফলে এ মেয়েকে আমরা বাড়িতে তুলতে পারবো না।’
কান্না চোখে নিয়ে শরিফা বলেন, ‛ভালোবেসে তাপসকে বিয়ে করেছি। সংসার করতে চেয়ে স্বেচ্ছায় হিন্দু ধর্ম গ্রহন করেছি। কিন্তু এখন ও সংসার করতে চায়না। আমি আর বাপের বাড়ি ফিরতে চাইনা। আমি ওর সঙ্গে সংসার করতে চাই।’ আপাতত তাপসের বাড়িতেই রয়েছেন শরিফা। খেয়াল রাখছেন প্রতিবেশীরা।