© শ্রী সূর্য শেখর হালদার
আমরা সবাই ইতিহাস এ পড়েছি যে ভারত স্বাধীন হয় ১৯৪৭ সালের ১৫ ই আগস্ট। এই দিনটিকে আমরা স্বাধীনতা দিবস হিসেবেই জেনে এসেছি। কিন্তু এই দিনটি আমাদের কাছে একটি দুঃখের দিন হিসাবেও পরিগণিত হয়, কারণ এটাই সেই দিন যেদিন শেষবারের মতন ভারতকে বিচ্ছিন্ন বা খন্ড করা হয়েছিল। সে কথা স্মরণ করেই ১৫ই আগস্ট পালন করা হয় অখন্ড ভারত দিবস হিসাবে। এখন এই ‘অখণ্ড ভারত ‘কথার তাৎপর্য কি তা বুঝতে গেলে আমাদের চলে যেতে হবে সুদূর অতীতে এবং জানতে হবে ভারতের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসকে।
‘ভারত’ শব্দটি একটি সংস্কৃত শব্দ, যেটি এসেছে ‘ভা:’ আর ‘ ‘ রত ‘ এই দুটি শব্দের সংমিশ্রণে তৈরি। ভা: শব্দের অর্থ হলো আলো। আর
‘রত ‘শব্দের অর্থ হলো নিয়োজিত। অর্থাৎ ভারত শব্দের অর্থ হল আলোর সন্ধানে রত বা নিয়োজিত। আমাদের মনে রাখতে হবে ভারত শুধুমাত্র একটি ভূখণ্ড নয়, এটি একটি সংস্কৃতি, ধর্ম, তথা জীবনধারা যা এশিয়া মহাদেশের একটি বিস্তীর্ণ ভূমিতে বিস্তৃত হয়েছিল একদিন। এখন ও তার নিদর্শন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। দক্ষিণ এশিয়ার যেসব স্থানে এই সংস্কৃতি ,ধর্ম আর জীবনধারা যুগ যুগ ধরে মানুষের সমাজ ও জীবনকে প্রভাবিত করেছে সেইসব স্থান দিয়েই তৈরি যে ভূমি খন্ড তাই হল অখন্ড ভারত।
আমরা ভারতবাসীরা এই সংস্কৃতি বা জীবনধারাকে মায়ের সম্মান দিয়ে পূজা করি, অর্চনা করি। আমাদের দেশভক্তি ধর্ম ও সংস্কৃতি কে ভক্তি না করে সম্ভব নয় কারণ দেশ, ধর্ম, সংস্কৃতি সবই আমাদের কাছে এক।
তাই ভারতমাতা পূজনের অর্থ হল দেশ ,ধর্ম ও সংস্কৃতির আরাধনা। দেশ ধর্ম ও সংস্কৃতিকে মাতার সঙ্গে তুলনা অনাদিকাল থেকে ভারতবর্ষে চলে আসছে। আমরা শুনেছি সেই শ্লোক, যাতে বলা হচ্ছে ‘জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী’ । ভারতবর্ষের ইতিহাসে আমরা দেখেছি যখন রাজপুত কি মারাঠারা লড়াই করেছে বহিরাগত মোঘলদের বিরুদ্ধে, তখন তারা আকাশ-বাতাস মুখরিত করেছে’ জয় ভবানী ‘ধ্বনিতে। সনাতন ধর্মের দেবী মা ভবানী সেই মুহূর্তে পরিণত হয়েছেন দেশ ও সংস্কৃতি রক্ষার অনুপ্রেরণাতে।
এই ঐতিহ্য অনুসরণ করেই সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন ভারতমাতা। এই ভারতমাতার কথা প্রথম উচ্চারিত হয় উনবিংশ শতাব্দীর বঙ্গভূমিতে, কিরণ চন্দ্র বন্দোপাধ্যায় এর দ্বারা রচিত একটি নাটকে। সময় ছিল ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দ। এরপর আসে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র রচিত আনন্দমঠ উপন্যাস। সময় ১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দ। এখানে আমরা দেখি মাতৃভূমি আর দেবী দুর্গা সমার্থক হয়ে উঠেছেন, কারণ বন্দেমাতারাম মন্ত্রের মধ্যে রয়েছে দেবী দুর্গার স্তব।
“ত্বং হি দুর্গা দশপ্রহরণধারিণী
কমলা কমল-দলবিহারিণী
বাণী বিদ্যাদায়িণী
নমামি ত্বাং …”
এরপর ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ প্রতিরোধ করার সময় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর অংকন করেন বঙ্গমাতার অবয়ব যা খুব শীঘ্র হয়ে ওঠে ভারতমাতা। গৈরিক বসন পরিহিতা, সাধ্বী, এই ভারতমাতা দেবী লক্ষী ও দেবী সরস্বতীর সমন্বয়। তাঁর চার হাতে রয়েছে – অন্ন, স্বেতবস্ত্র, পুস্তক ও রুদ্রাক্ষের মালা। ভগিনী নিবেদিতা এই ভারতমাতার অবয়বকে স্বর্গীয় বলে বর্ণনা দেন। বর্তমানে আমরা ভারতমাতার যে অবয়ব দেখছি, সেই সিংহবাহিনী ভারতমাতা আমাদের দেবী দুর্গার কথা মনে করিয়ে দেয়। দেবী দুর্গা যদি সত্ত্বগুণের প্রতীক হন, তাহলে সিংহ হল রজোগুণের প্রতীক। অর্থাৎ এখানে রজোগুণ পরিচালিত হচ্ছে ব্রহ্মগুণ বা সত্ত্বগুণের দ্বারা। ভারত মাতার এই ছবি অংকন করেন পি.এস. রামচন্দ্র রাও ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে। অর্থাৎ যখন জাতীয়তাবাদী আন্দোলন মধ্য গগনে, তখন তিনি এই ছবি অংকন করেন ভারতীয় সনাতন ঐতিহ্য মেনে। মনে রাখতে হবে এই সময় বেনারসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি ভারত মাতা মন্দির। সেই মন্দিরের উদ্বোধক ছিলেন মহাত্মা গান্ধীজী। অর্থাৎ এই কথা আমরা বলতে পারি যে দেশ ধর্ম ও সংস্কৃতিকে মাতা বলে মানার এবং পূজা করার ঐতিহ্য কে সমর্থন করেছিলেন গান্ধীজীও। এই সময় ভারতমাতা পূজন এর একটি শ্লোক রচিত হয়। এটি হলো নিম্নরুপ:
রত্নাকরা ধৌত পদং হিমালয় কিরীটনীম ।
ব্রম্ভরাজর্ষি রত্নাঢ্যাং বন্দে ভারতমাতরম্ ।।
অর্থাৎ যাঁর পা ধুয়ে দিচ্ছে সমুদ্রের জল : মাথার মুকুট হিসাবে শোভা বর্ধন করছে হিমালয় পর্বত : যিনি সমৃদ্ধ ব্রাহ্মণ আর রাজর্ষির সমুদ্র সদৃশ জ্ঞানে, সেই ভারতমাতাকে বন্দনা করি।
অখন্ড ভারত দিবস-এর সঙ্গে ভারতমাতা পূজন-এর এক বিশেষ সম্পর্ক বর্তমান। তাই আজও রীতি মেনে এই দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে করা হয়ে থাকে ভারতমাতার পূজন। তবে একথা ভুললে চলবেনা যে আমাদের ভারত মাতা কিন্তু এখন অখন্ড নন। দুষ্কৃতীদের উপদ্রবে তিনি বারবার খন্ডিত হয়েছেন। তাই অখন্ড ভারতের ভাবনা বোঝার জন্য অতীতে এই ভারত মাতার রূপ কেমন ছিল সেটা জানা প্রয়োজন।
বর্তমান ভারতের যে রাজনৈতিক ভূখণ্ড রয়েছে, ভারত ভূমি কিন্তু শুধু তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। সেই সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয় সনাতন ধর্ম ও সংস্কৃতি বিস্তৃত হয়েছিল মধ্য এশিয়া থেকে সুদূর পূর্ব এশিয়া পর্যন্ত। এই বিশাল ভূমি খন্ডকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে অখন্ড ভারতের ভাবনা। সাংস্কৃতিক ঐক্যের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এই অখণ্ড ভারতকে বুঝতে গেলে আমাদের চলে যেতে হবে সুদূর রামায়ণের যুগে। রামায়ণ শব্দের অর্থ রামের ভ্রমণ বা যাত্রা। এই যাত্রা ঠিক যতটাই আধ্যাত্বিক, ঠিক ততটাই ভৌগোলিক। আমরা সবাই জানি সীতা মাতাকে উদ্ধারের জন্য তিনি যাত্রা করেছিলেন শ্রীলঙ্কাতে। এভাবেই শ্রীলংকার সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ভারতের সম্পর্ক। রামায়ণের উত্তরকাণ্ডতে আমরা দেখি ভারতের দুই পুত্র তক্ষ ও পুষ্কল রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন গান্ধার প্রদেশে, বর্তমানে যা আফগানিস্থানে কান্দাহার নামে পরিচিত। তক্ষের নাম অনুসারে একটি নগরীর নাম হয় তক্ষশীলা, আর পুষ্কলের নামে একটি নগরীর নাম হয় পুষ্কলাবতী। দুটি নগরই বর্তমানে আফগানিস্তানের অংশ। আবার মহাভারতের অন্যতম চরিত্র গান্ধারী ছিলেন এই গান্ধারের রাজা সুবলের কন্যা। এইসব তথ্য থেকে প্রমাণ হয় যে কান্দাহার বা গান্ধার একটা সময় ছিল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
ঠিক একই রকমভাবে আমরা দেখি নেপালের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ। সীতা-মাতার পিতৃভূমি ছিল মিথিলা রাজ্য। আর মিথিলার রাজধানী জনকপুরি যে স্থানে অবস্থিত সেটি বর্তমানে নেপালে। ভগবান বুদ্ধের জন্ম ভূমি কপিলাবস্তুও কিন্তু নেপালে অবস্থিত। আবার পুরাণে উল্লেখ রয়েছে কাঠমান্ডুর বিখ্যাত পশুপতিনাথ মন্দির-এর। পঞ্চকেদার-এর ইতিহাস পড়তে গিয়ে আমরা উল্লেখ পাই পশুপতিনাথ মন্দিরের। এর অর্থ এই যে নেপাল এবং ভারত এককালে অবিচ্ছেদ্য ছিল।
মহাভারতে গান্ধার ছাড়াও উল্লেখ রয়েছে সিন্ধু প্রদেশ এবং মদ্র দেশের। সিন্ধু প্রদেশের রাজা ছিলেন জয়দ্রথ, আর মদ্র দেশের মেয়ে মাদ্রী মহাভারতের অন্যতম চরিত্র। তাঁর ভ্রাতা মদ্র নরেশ শল্য ছিলেন অঙ্গরাজ কর্ণের সারথি এবং কৌরব পক্ষের অন্যতম সেনাপতি। মদ্র দেশ এবং সিন্ধু প্রদেশ দুটোই কিন্তু আজকের পাকিস্তানে অবস্থিত। পাকিস্তান যে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল এটাতো বলা বাহুল্য মাত্র।
আবার আধুনিক পৃথিবীর ম্যাপে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে তিব্বত চীনের অংশ, কিন্তু আসলে তিব্বত ছিল ভারতের অংশ। প্রমাণ হচ্ছে মানস সরোবর।’ মানস ‘এই শব্দটাই একটি সংস্কৃত শব্দ আর এই সরোবরের তীরে অবস্থিত কৈলাস পর্বত দেবাদিদেব মহাদেবের বাসস্থান। এই তথ্য প্রমাণ করে যে উত্তর দিশাতে ভারত ভূমি বিস্তৃত ছিল তিব্বত পর্যন্ত। তিব্বতের কাছাকাছি এবং নেপালের পার্শ্ববর্তী আরেকটি দেশ ভুটান ও কিন্তু ভারতীয় সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক। ভুটানে বৌদ্ধধর্ম বিস্তার লাভ করে ভারত থেকেই।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে ভারতের বিস্তার প্রতিষ্ঠিত হয় প্রাচীন যুগেই। আমরা ইতিহাসে সবাই বোরবুদুরের বৌদ্ধ মন্দিরের কথা জেনেছি। এটির অবস্থান বর্তমান ইন্দোনেশিয়াতে। অর্থাৎ ইন্দোনেশিয়াতে এক কালে পৌঁছে ছিল ভারতীয় সনাতন সংস্কৃতির স্রোতের ধারা। ইন্দোনেশিয়ার পার্শ্ববর্তী কম্বোডিয়াতে অবস্থিত পৃথিবীর বৃহত্তম বিষ্ণুমন্দির যা আঙ্করভাট এর বিষ্ণুমন্দির নামে পরিচিত। এই কম্বোডিয়া ভারতের ইতিহাসে পরিচিত ছিল কম্বোজ নামে। বর্তমান থাইল্যান্ড দেশটিও একইরকমভাবে শ্যামদেশ নামে পরিচিত ছিল ভারতীয় উপমহাদেশে। এই নামই বুঝিয়ে দেয় যে এই দেশ এককালে ভারতীয় সংস্কৃতির ধারক ও বাহক ছিল। এখনো থাইল্যান্ডের জাতীয় গ্রন্থ হচ্ছে রামায়ণ। এই দেশের রাজাকে এখনো শ্রীরামের নামে শপথ করতে হয় রাজ্যভিষেকের সময়। ভারতের দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত আরেকটি দেশ ব্রহ্মদেশ ও (যার বর্তমান নাম মায়ানমার) এক ইতিহাস ভাগ করছে আমাদের সঙ্গে। এই দেশের নামই বলে দিচ্ছে যে এই দেশ কতটা সমৃদ্ধ হয়েছিল ভারতীয় সনাতন দর্শনের দ্বারা। ব্রহ্মদেশ বা বার্মার রাষ্ট্রধর্ম এখনো বৌদ্ধ ধর্ম যা ভারতীয় সনাতন সংস্কৃতির অঙ্গ। এছাড়াও মালয়েশিয়া, বালি দ্বীপ ,ভিয়েতনাম, ফুনান ইত্যাদি দেশে ছড়িয়ে রয়েছে ভারতীয় সনাতন সংস্কৃতি ও ধর্মের নিদর্শন।
এই সেদিনও ব্রিটিশরা শাসন করছিল আমাদের দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার যেসব দেশ গুলির কথা এখানে উল্লেখিত হল, তার অনেকগুলি তখনো পর্যন্ত ছিল ভারতের মধ্যেই। একই শাসকের দ্বারা এবং একই আইনের বিধিতে শাসিত হত এই বিশাল ভূখন্ড। এইসব দেশগুলির মধ্যে রয়েছে শ্রীলংকা, আফগানিস্তান, নেপাল, ভুটান, তিব্বত, ব্রহ্মদেশ এবং অবশ্যই পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতমাতাকে খন্ড করতে করতে আজ আমরা বর্তমান স্থানে এসে পৌঁছেছি। ইতিহাস বলছে ভারতের থেকে প্রথম পৃথক হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে। আফগানিস্তান ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে; নেপাল ও ভুটান যথাক্রমে ১৯০৪ ও ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে, তিব্বত ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে এবং ব্রহ্মদেশ ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে। আর শেষবারের মতন ভারত দ্বিখন্ডিত হয় ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে। ভারতমাতার দুই বাহু ছিন্ন করে তৈরি হয় একটি নতুন দেশ যার নাম পাকিস্তান। পরবর্তীকালে পাকিস্তানেরই পূর্ব অংশে পরিণত হয় বাংলাদেশে। যে ভারত ভূমি স্বাধীনতার সময় আমাদের ছিল তাও বর্তমানে আমাদের নেই। লাদাখের বিস্তীর্ণ অঞ্চল যা আকসাই চীন নামে পরিচিত, তা চলে গেছে চীনের দখলে ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে। আর পাকিস্তান দখল করে রেখে দিয়েছে কাশ্মীর উপত্যকার একটি বৃহৎ অংশ বর্তমানে POK (Pakistan Occupied Kashmir) নামে পরিচিত।
আমরা সবাই জানি স্বাধীনতা এক বিশাল আনন্দের বিষয়। অস্বীকার করার উপায় নেই বহু মানুষের আত্ম বলিদান এর কারণেই এসেছিল এই স্বাধীনতা। নেতাজি সুভাষ বসুর আজাদ হিন্দ এর লড়াই আর তারপর নৌ বিদ্রোহ (১৯৪৬) ছিল স্বাধীনতার প্রকৃত কারণ, কিন্তু আফসোস ক্ষমতা হস্তান্তর যখন হয় তখন উপস্থিত ছিলেন না নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মতন একজন বীর, দেশপ্রেমী। তাই কিছু তথাকথিত ভারতপ্রেমী কিন্তু আসলে ক্ষুদ্র স্বার্থান্বেষী নেতা, সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ সরকার, আরেকটি সাম্প্রদায়িক দল মিলে ভারতমাতাকে ভাগ করে নিজেদের মধ্যে। স্বামী বিবেকানন্দ, শ্রী অরবিন্দ, বিনায়ক দামোদর সাভারকার এর অখন্ড ভারতের স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায় এই অন্যায় সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার কারণে। স্বাধীনতার আনন্দ পর্যবসিত হয় হাজার হাজার মানুষের চোখের জলে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং নিজেদের ভূমি হারিয়ে উদ্বাস্তু হবার কারণে নিহত হয় লক্ষ লক্ষ ভারতবাসী। বাস্তুহারা মানুষের চোখের জলে ভেসে যায় স্বাধীনতার আনন্দ। আজও মন কাঁদে আমাদের পিতৃপুরুষের যে জমি আমরা হারিয়েছি তা ফেরত পাবার জন্য। তাই সিংহবাহিনী ভারত মাতার মূর্তি বানিয়ে আজও পূজা করে দেশপ্রেমী ভারতবাসীরা; সংকল্প করে ভারতমাতাকে পূর্বের রূপে ফিরিয়ে দেওয়ার। আগামী দিনে তা সম্ভব হবে কিনা তার উত্তর দেবে আগামী দিনের ঘটনা ক্রম। তবে অখন্ড ভারত নির্মাণের কাজ কিন্তু ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সংবিধান থেকে বিলুপ্ত হয়েছে বৈষম্য কারী ৩৭০ ধারা। জম্মু কাশ্মীর এখন ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আশা করা যায় আগামী দিনে এই লক্ষ্য অবিচল রেখে যেসব ভূমি খন্ডিত হয়েছে ভারত থেকে তার সব উদ্ধার করব আমরা।
বন্দেমাতরম্।