বাঙ্গালীর সবচেয়ে বড়ো উৎসব আসছে। সারা বিশ্বের বাঙ্গালী দুর্গা পূজার দিনগুলিতে উৎসবের আনন্দে সামিল হলেও বাংলাদেশের বাঙ্গালীরা তা থেকে বঞ্চিত থেকে যান। কারণ, সরকারের উদাসীনতা এবং বাঙালীদের প্রতি বৈষম্যমূলক মানসিকতা। এবার সরকারের সেই বৈষম্যমূলক মানসিকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়ো হিন্দু সংগঠন “বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট”-এর ছাত্র শাখা জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট।
সংগঠনটির দাবী, দুর্গা পূজায় তিন দিনের সরকারী ছুটি দিতে হবে। কারণ হিসেবে নেতারা বলছেন যে ছুটি না থাকার কারণে বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত বাঙালীরা দুর্গা পূজার আনন্দে উৎসবে সামিল হতে পারেন না। সারা বছর ধরে অপেক্ষায় থাকলেও এই আনন্দে পরিবারের সঙ্গে, প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন না। বিশেষ করে যারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মসূত্রে থাকেন, তাঁরা পূজার আনন্দে সামিল হতে পারেন না। এই বৈষম্যের অবসান চেয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
এই দাবীর পাশাপাশি কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় হিন্দু মন্দিরে হামলা এবং প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল, ২২শে সেপ্টেম্বর, শুক্রবার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভে সামিল হন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। বিক্ষোভে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নেতারা বলেন যে, দুর্গা পূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড়ো ধর্মীয় উৎসব, বাঙ্গালীর চিরন্তন ঐতিহ্যও বটে। প্রতিটি পরিবারের কোনো না কোনো সদস্য পড়াশুনা, চাকরি কিংবা ব্যবসার প্রয়োজনে অন্যত্র বসবাস করেন। সেজন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা পরিবার-পরিজনের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য সারা বছর এই দিনগুলির অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, দুর্গা পূজা পাঁচ দিনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও সরকারীভাবে মাত্র এক দিনের ছুটি থাকে, সেটাও বিজয়া দশমীর দিন। ফলে দুর্গা পূজায় কারওর পক্ষেই গ্রামে গিয়ে পরিবার ও পরিজনের সঙ্গে ধর্মীয় কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকে না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলাদেশে দুর্গা পূজায় সরকারী ছুটি থাকে মাত্র এক দিন। ফলে দুর্গা পূজার আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকেন সে দেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা। সংখ্যালঘু হওয়ায় সরকারের কাছে গুরুত্ব হারিয়েছে দুর্গা পূজা। আর তাই দীর্ঘ বছর ধরে তিন দিনের সরকারী ছুটির দাবী জানালেও নজর দেয়নি কেউই। এমনকি ‘হিন্দু দরদী’ হিসেবে পরিচিতি আওয়ামী লীগ সরকারের নেতা-মন্ত্রী কিংবা শেখ হাসিনা কেউই হিন্দুদের এই দাবী নিয়ে একটি বাক্যও খরচ করেননি। ফলে দুর্গা পূজার আনন্দ থেকে বঞ্চিত থেকেছেন দেশটির হিন্দুরা।