দুর্গা পূজার প্রাক্কালে দেশের হিন্দু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বিশেষ বার্তা দিলেন সরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বললেন, “দুর্গা পূজার সংখ্যা আর বাড়াবেন না।” আর তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা।
গতকাল, ১৪ই সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার, সরাষ্ট্র মন্ত্রকে আসন্ন দুর্গা পূজা উপলক্ষে এক বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে দুর্গা পূজার সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। সেই আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন যে গত বছরের তুলনায় এ বছরে দুর্গা পূজার সংখ্যা বেড়েছে। প্রায় প্রতি বছর দুর্গা পূজা মণ্ডপের সংখ্যা বাড়ছে। তাই, এ বছর আর দুর্গা পূজার সংখ্যা বাড়াবেন না।
মুখে না বললেও সরকার যে দুর্গা পূজা মণ্ডপগুলিকে নিরাপত্তা দিতে হিমশিম খাচ্ছে এবং সরাষ্ট্র মন্ত্রীর এহেন মন্তব্যে বিরক্তি প্রকাশ পেয়েছে, তা স্পষ্ট। অনুরোধের সুরে বললেও দুর্গা পূজার সংখ্যা বাড়ুক, তা চান না সরাষ্ট্র মন্ত্রী, বলছেন অনেকে। কারণ পরিসংখ্যান বলছে, আওয়ামী লীগের আমলে হিন্দু নির্যাতন মোটেও কমেনি। আর হিন্দু নির্যাতন ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে বদনাম হয় শেখ হাসিনা সরকারের। আর তাই দুর্গা পূজা কমানোর কথা বলছেন আসাদুজ্জামান খান।
তিনি আরও জানান যে দুর্গা পূজার সময়ে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ‘পূজা উদযাপন পরিষদ’ প্রতিটি পূজা মণ্ডপে স্বেচ্ছসেবক মোতায়েন করবে। এছাড়াও, পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তায় সারা দেশে দুই লাখ আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে। ৯৯৯ কতৃপক্ষ বিশেষ সতর্ক থাকবে দুর্গা পূজার দিনগুলিতে।
আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, পূজা মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। সীমান্ত এলাকায় বিজিবি, উপকূলীয় এলাকায় কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশ সতর্ক থাকবে। প্রতি উপজেলায় পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (মনিটরিং রুম) থাকবে। ইউটিউব ও ফেসবুকের মাধ্যমে যাতে কেউ গুজব সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য বিশেষ নজর দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে, বাংলাদেশের ৩২ হাজার ১৬৮টি দুর্গা পূজা হয়েছিল। আর এ বছর দুর্গা পূজার সংখ্যা বেড়েছে ২৩৯টি। প্রতি বছরের মতো এ বছরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন সরাষ্ট্র মন্ত্রী। তবে অতীতে দুর্গা পূজার সময় মণ্ডপে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর এবং হিন্দুদের উপরে হামলার ঘটনা বন্ধ করা যায়নি। ফলে এ বছরও নিরাপদ দুর্গা পূজা হবে, এ আশা করছেন খুবই কম্ম মানুষ।