Law & Order

মন্দির চত্বর কিংবা মন্দিরে গেরুয়া পতাকা লাগানো যাবে না: কেরালা হাইকোর্ট

গেরুয়া পতাকা নিয়ে আজব নির্দেশ দিলো কেরালা হাইকোর্ট(Kerala High Court)। আজব নির্দেশিকা দেওয়ার পাশাপাশি গেরুয়া পতাকা সম্বন্ধে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণও যথেষ্ট আপত্তিজনক। হাইকোর্টের বিচারপতিদের বক্তব্য:- মন্দির কিংবা মন্দির চত্বরে গেরুয়া পতাকা লাগানো যাবে না। কারণ গেরুয়া পতাকা রাজনৈতিক প্রতীক এবং মন্দির রাজনীতির জায়গা নয়।

উল্লেখ্য, কয়েকড দিন আগে কেরালা হাইকোর্টে একটি পিটিশন দায়ের হয়। পিটিশন দায়ের করেন মন্দিরের ভক্ত মন্ডলীর তরফে একটি সংস্থা। সেই পিটিশনে মুথুপীলক্কড়-এ অবস্থির শ্রী পার্থসারথী মন্দির চত্বরে গেরুয়া লাগানোর অনুমতি চাওয়া হয়। কারণ, পরম্পরা অনুযায়ী মন্দির চত্বরে গেরুয়া পতাকা লাগাতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি পতাকা লাগাতে গেলে তাদের উপরে হামলা চালানো হয়। পুলিশও পতাকা লাগাতে সহযোগিতা করছে না, উল্টে বাধা দিচ্ছে। তাই হাইকোর্ট তাদের পতাকা লাগানোর অনুমতি দিক এবং পুলিশকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিক, আবেদন জানানো হয়।

সেই পিটিশনের শুনানিতে কেরালার কমিউনিস্ট সরকারের তরফে উপস্থিত আইনজীবী গেরুয়া পতাকাকে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে হাইকোর্টে ধরেন। মন্দিরে কিংবা মন্দির চত্বরে গেরুয়া পতাকা লাগানোর তীব্র বিরোধিতা করেন কেরালা সরকারের আইনজীবী। ওই আইনজীবী হাইকোর্টে মন্তব্য করেন যে যারা গেরুয়া পতাকা লাগাতে চাইছে, তাঁরা নিশ্চয়ই একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সদস্য। ওই ব্যক্তিরা মন্দিরকে রাজনৈতিক কর্মকান্ড করার স্থান বানাতে চাইছেন মন্দিরকে, বলেন কেরালা সরকারের আইনজীবী।

সব শোনার পর কেরালা হাইকোর্টের বিচারপতি মামলাটি খারিজ করে দেন। সেই সঙ্গে বিচারপতি বেশ কয়েকটি মন্তব্য করেন। হাইকোর্টের বিচারপতি বলেন যে মন্দির কিংবা মন্দির চত্বরে কোনও গেরুয়া পতাকা লাগানো যাবে না। কারণ মন্দির রাজনীতি করার জায়গা নয়। ভক্তদের তরফে গেরুয়া পতাকা লাগানোর পরম্পরা তুলে ধরা হলেও তাতে গুরুত্ব দেননি কেরালা হাইকোর্টের বিচারপতি।

প্রসঙ্গত, কেরালার প্রায় বেশিরভাগ মন্দির রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে। বিশেষ আইন বলে মন্দিরের পরিচালন থেকে মন্দিরের প্রশাসন এবং মন্দিরের অর্থ- সবকিছুতেই কেরালা সরকারের কথাই শেষ কথা। ফলে কেরালার হিন্দুদের অধিকার নেই মন্দির পরিসরে নিজের ইচ্ছেমতো গেরুয়া পতাকা লাগানো কিংবা মন্দিরকে নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নেওয়ার। মন্দির সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকায় মন্দির চত্বরে কোনোরকম অনুমতি ছাড়া কিছু করা বেআইনি। তবে মন্দিরে দান কিংবা প্রণামী দিতে কোনও বাধা নেই কেরালা সরকারের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Sorry! Content is protected !!