দেশের কোন কোন রাজ্যে কোন ধর্মীয় গোষ্ঠী সংখ্যালঘু, তা জানাতে হবে কেন্দ্রকে। পাশাপাশি বারবার বলা সত্বেও কেন্দ্র সরকার কেন তা জানাতে দেরি করছে, তা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তারপরেই কেন্দ্রকে চার সপ্তাহের সময় দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, এই সময়ের মধ্যেই হলফনামা জমা দিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুক কেন্দ্র সরকার।
দেশের ৬ রাজ্য এবং ৩ কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে হিন্দুদের সংখ্যালঘুর মর্যাদা দেওয়া হোক, এই দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন অশ্বিনী উপাধ্যায়। কিন্তু কেন্দ্র সরকার নিজেদের মতামত জানাতে গড়িমসি করছে।
উল্লেখ্য, অশ্বিনী উপাধ্যায় ১৯৯২ সালের ন্যাশনাল কমিশন অফ মাইনরিটিজ আইনের ২(সি) ধারা চ্যালেঞ্জ করে দাবি করেছেন যে, ওই আইনে মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, ইহুদিদের সংখ্যালঘুর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। অথচ দেশের ৬টি রাজ্যে হিন্দুরা সংখ্যালঘু হলেও তাদের সেই মর্যাদা দেওয়া হয়নি।
উপাধ্যায়ের দাবি, মিজোরামে হিন্দু জনসংখ্যা ২.৭৫ শতাংশ, নাগাল্যান্ডে ৮.৭৫ শতাংশ, মেঘালয়ে ১১.৫৩ শতাংশ, অরুণাচল প্রদেশে ২৯ শতাংশ, মণিপুরে ৩১.৩৯ শতাংশ, পাঞ্জাবে ৩৮.১০ শতাংশ। আরও দুই কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে হিন্দুরা জনসংখ্যার মাত্র ২.৫ শতাংশ। তবুও কেন এই ৬ রাজ্য ও ৩ কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে হিন্দুদের সংখ্যালঘুর মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না? প্রশ্ন তুলেছেন উপাধ্যায়।
তাঁর দাবি,জম্মু-কাশ্মীর সমেত একাধিক রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে হিন্দুরা সংখ্যালঘু হলেও তাঁরা অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, সংবিধানের ২৯ ও ৩০ নম্বর অনুচ্ছেদে যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, তা থেকে এই রাজ্যগুলির সংখ্যালঘুদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।
সেই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এসএস কৌল এবং বিচারপতি এম সুন্দরেশ-এর ডিভিশন বেঞ্চ এই ব্যাপারে কেন্দ্রকে অবিলম্বে নিজেদের মতামত জানিয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি কেন্দ্রকে তাদের সিদ্ধান্ত জানাতে চার সপ্তাহের সময় বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যদি কেন্দ্র এই বিষয়ে সংবিধান মেনে সিদ্ধান্ত নেয়, তবে আগামীদিনে এই ৬টি রাজ্যে হিন্দুরা সংখ্যালঘুর মর্যাদা পেতে পারে, এমনটাই মনে করছেন অনেকে।