এখনও কয়েক দফার ভোটপর্ব বাকি। তার আগেই সংখ্যালঘু ভোট ধরে রাখা নিয়ে চিন্তায় তৃণমূল শিবির। সংখ্যালঘু ভোটারদের অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে বাম, কংগ্রেস কিংবা আব্বাসের দলে ভিড়ছেন। ফলে নিজের গদি টিকিয়ে রাখার প্রধান অবলম্বন যে সংখ্যালঘু ভোটাররা ছিল, তাঁরা তৃণমূল থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। আর তা বুঝতে পেরেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জির কপালে চিন্তার ভাঁজ।
একসময় সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় ছিল তৃণমূলের প্রধান ভরসা। তৃণমূল নেত্রী একাধিকবার স্বীকার করেছেন সে কথাও। ‛যে গরু দুধ দেয়, তাঁর লাথি খাওয়া ভালো’ – তাঁর এই মন্তব্য যথেষ্ট আলোড়ন ফেলেছিল রাজনৈতিক মহলে। আর সেই মুসলিম ভোটের লোভে গত ১০ বছরে মাত্রাতিরিক্ত তোষণ করে গিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। কিন্তু তারপরেও সন্তুষ্ট নয় সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়। তাদের অভিযোগ, মমতা ব্যানার্জি সংখ্যালঘু মুসলিমদের উন্নয়নে কিছুই করেননি। ফলে মুসলিম ভোটারদের বড়ো অংশই তৃণমূল থেকে সরে গিয়েছেন।
অন্যদিকে মুসলিম তোষণের ফলে রাজ্যের মুসলিম মৌলবাদীরা শক্তিশালী হয়েছে ধীরে ধীরে। তাদের হামলায় রাজ্যের এমন কোনো জেলা নেই, যেখানে হিন্দু সম্প্রদায় আক্রান্ত হয়নি। ফলে রাজ্যের হিন্দুদের বড় অংশই তৃণমূল থেকে দূরে সরে গিয়েছেন। কিন্তু মুসলিম ভোটের লোভে ক্ষমতায় ফিরবো- এই স্বপ্ন দেখা মমতা ব্যানার্জি বুঝতে বড্ড দেরি করে ফেলেছেন। যখন বুঝতে পারলেন, তখন সর্বশ্রেষ্ঠ সেক্যুলার আব্বাস সিদ্দিকীর উদয় হয়েছে। তিনি মুসলিমদের ভাগিদারির স্বপ্ন দেখালেন। ফলে সংখ্যালঘু মুসলিম অধ্যুষিত এলাকার দলে দলে মানুষজন আব্বাস ভাইজানের দলে ভিড়তে লাগলেন। ফলে মুসলিম ভোটে তৃণমূলের আর একচ্ছত্র আধিপত্য রইলো না।
এদিকে তোষণের কারণে রাজ্যের একাধিক বিধানসভা আসনের ভোটাররা হিন্দু ও মুসলিম দুই ভাগে বিভক্ত। মমতা যতই বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধেও আঙ্গুল তুলুক না কেন, তাঁর তোষণের কারণেই আজ রাজ্যের ভোটাররা দুই শিবিরে বিভক্ত। রাজ্যের বহু বিধানসভা আসনে হিন্দু ভোটাররা বিজেপি শিবিরে এবং মুসলিম ভোটাররা তৃণমূল ও বাম, কংগ্রেস, ইডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট শিবিরে বিভক্ত। ফলে বিধানসভা নির্বাচনে মুসলিম ভোটাররা আর নির্ণায়ক শক্তি নয়। বরং হিন্দু ভোটই এবারের বিধানসভায় নির্ণায়ক শক্তি। ফলে মমতার আমও গেল, ছালাও গেল।