© জয় রাজ
প্রথমেই ভারতীয় জনতা দলকে ধন্যবাদ। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বাংলা ভাষা সংস্কৃতির উন্নতি নিয়ে নানা প্রসঙ্গ রেখেছেন।
….
বাংলা ভাষার উন্নতি বিচ্ছিন্ন ভাবে হতে পারেনা। বিশেষত প্রকৌশল ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে বাঙ্গলা ভাষায় শিক্ষার কথা বলা হয়েছে।এ ই সব উচ্চাকাক্ষী পরিকল্পনা তখনই বাস্তব হতে পারে যখন সমগ্র এশিয়া বা বিশ্বের প্রেক্ষাপটে চিন্তা করা হবে। বাংলা ভাষার সত্যিকারের উন্নতি করতে হলে কেজি থেকে ১২ সংস্কৃত শিক্ষা জরুরী। বাংলা থেকে সমস্ত ভাষার সংস্কৃতায়ন শুরু হোক। পশ্চিমবাংলা হয়ে উঠুক বিশ্ব সংস্কৃতায়নের কেন্দ্রবিন্দু।
পশ্চিমবাংলায় একটি আন্তর্জাতিক সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাকে ঘিরে সংস্কৃত টাউনশিপ হতে পারে। এখানে শুধু শিক্ষা ও গবেষনা নয়, সংস্কৃতকে প্রতিদিনের জীবনে এবং বিনোদনের মাধ্যমে পরিনত করার পরিকাঠামো থাকতে পারে। এখানে সমগ্র এশিয়ার ভাষাগুলির জন্য সংযুক্ত পরিভাষা কোষ, সংস্কৃত ভাষা ভিত্তিক মেসিন ট্রান্সলেসন, স্পিচ ইন্জিনসহ সমস্ত গবেষনাকে সমন্বয় করা যেতে পারে।আইএসআই, আইআইটি সহ ল্যাঙ্গুয়েজ টেকনোলজির যত গবেষনাকে একটি এজেন্সীর অধীনে আনা যেতে পারে। গুগুলের ট্রান্সলেসনের মত সংস্কৃত ভিত্তিক ভারতীয় বিকল্প অবিলম্বে দরকার। ঠিক তেমনি বিশ্বের মঞ্চে প্রমিত বাংলা যেটি বিদ্যাসাগর-বঙ্কিমচন্দ্র-রবীন্দ্রনাথ-বিবেকানন্দ-শরৎচন্দ্র বিকাশ করেছিলেন, তাকেই সঠিক ভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গুগুল-ফেসবুক সহ সমগ্র অন্তর্জালে প্রকৃত বাঙ্গলার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বিগত সরকারগুলির অপদার্থতায় .বাংলা টিএলডিও পশ্চিমবাংলার হাতে থাকেনি।গুগুলেও বাংলাকে আজ ভারতের বাইরের ভাষা হিসাবে প্রদর্শিত হয়।
ভারতীয় প্রেক্ষাপটে ভারতের সমস্ত রাজ্যে বাংলাকে সরকারী চাকরী ও শিক্ষায় প্রতিষ্ঠা, বিমান, রেল, ব্যাঙ্কিং সহ সমস্ত পরিষেবা হিন্দীর পাশাপাশি বাংলার ব্যবহার, কেন্দ্রে বাংলা ভাষা প্রচার মন্ত্রক অনেক কিছুই করনীয়। তবে এই বাংলা হবে প্রমিত বাংলা (আন্তর্জাতিক মানক আরবীর মত)। সবরকম ইসলামীকরন বর্জিত যেন হয়, সেটা ভেবে দেখতে হবে।বাংলা একাদেমীকে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের বিলয় করে রবীন্দ্রনাথ সহ মহাজনগনের নির্দেশিত পথেই বাংলাভাষা যেন চিরকাল চলে নিশ্চিত করা দরকার।আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার দরকার। সেটি হল সমস্ত ভাষাভাষীদের বাংলা শিক্ষার সুবিধার জন্য লিপি সংস্কার। আইপিএ-কে নির্ভর করে সংস্কৃত ভিত্তিক বৈশ্বিক লিপিমালা। এরফলে হিন্দী, বাংলা সহ অধিকাংশ ভাষার পৃথক পৃথক লিপির প্রয়োজন থাকবেনা।…বিশ্বের সমস্ত ভাষার সংস্কৃতকরন ও মানবজাতির ভারতকেন্দ্রিক ঐক্য প্রতিষ্ঠায় এ হবে যুগান্তকারী পরিবর্তন।
….
বাংলার ভাবনার প্রেক্ষাপট সর্বদা বিশ্বের প্রেক্ষাপটে।বিগত কয়েকদশক বাংলা পরিনত হয়েছিল বোধশূন্য বদ্ধভূমিতে। বাংলাকে তার বৈশ্বিক ভাবনার জগতে পুনঃস্থাপিত করা হবে এটিই কাঙ্খিত।
(মতামত লেখকের ব্যক্তিগত)