মহারাষ্ট্র থেকে ৪ তীর্থযাত্রী এরাজ্যে এসেছিলেন গঙ্গাসাগর যাওয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু এখানে এসে এমন অভিজ্ঞতা হবে, স্বপ্নেও ভাবেননি তাঁরা। কয়েকজন মুসলিম দুষ্কৃতী অপহরণ করে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল তাদের। চাওয়া হয়েছিল মুক্তিপণও। পরে পুলিশ এসে উদ্ধার করে তাদের। ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার রায়দিঘী থানা এলাকার।
মহারাষ্ট্রের থানে জেলার বদলাপুর থানা এলাকার বাসিন্দা ওই চার পুণ্যার্থী। তাঁরা হলেন, সঙ্কেত সুরেশ, সাগর সুরেশ, অরুণ শিবরাম বরাটে ও তাঁর স্ত্রী বিনীতা অরুণ বরাটে। গঙ্গাসাগরে যাওয়ার জন্য তাঁরা গত বুধবার বেলা ১১টা ৩০ মিনিট নাগাদ হাওড়া স্টেশনে নামেন। গঙ্গাসাগর যেতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেজন্য বিনীতাদেবীর এক প্রতিবেশী তাঁদের সাজামল গাজি নামে ঢোলাহাটের এক বাসিন্দার ফোন নম্বর দেন। বলেন, সাজামলই তাঁদের গঙ্গাসাগর যাওয়ার সব ব্যবস্থা করে দেবে। তদন্তকারী অফিসার বলেন, সাজামলের মহারাষ্ট্রে যাতায়াত আগে থেকেই ছিল। সেই সূত্রেই ওই প্রতিবেশীর সঙ্গে কোনও ভাবে আলাপ হয়েছিল। হাওড়ায় নেমে মহারাষ্ট্রের পুণ্যার্থীরা সাজামলকে ফোন করলে সে অন্য সঙ্গীদের নিয়ে টাটা সুমো করে তাঁদের আনতে যায়। ওইদিন তাঁদের পাথরপ্রতিমার রামগঙ্গার এক হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরের দিনই তাঁদের গঙ্গাসাগরে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল সাজামল। কিন্তু,গঙ্গাসাগর তো দূরের কথা! বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর রায়দিঘির হোকলডাঙ্গা খালপাড়ে মাটির এক পরিত্যক্ত বাড়িতে তুলে আনা হয়। থানেতে ফোন করে বাড়ির লোকজনের কাছ থেকে মুক্তিপণের দাবি করে অভিযুক্তরা। মুক্তিপণ না মিললে, পরিণতি যে ভয়ঙ্কর হবে, সেই হুঁশিয়ারিও দেয় দুষ্কৃতীরা।
আটক থাকা অবস্থায় এক তীর্থযাত্রী অপহরণকারীদের নজর এড়িয়ে মহারাষ্ট্রে এক আত্মীয়কে ফোন করেন। তাঁরা স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরে মহারাষ্ট্র পুলিশের তরফে যোগাযোগ করা হয় এ রাজ্যের পুলিশের সঙ্গে। মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে ওই তীর্থযাত্রীদের উদ্ধার করে পুলিশ। সেইসঙ্গে ৬ জন মুসলিম দুষ্কৃতীকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতরা হলো সাজামল গাজি, সাইফুদ্দিন পুরকাইত, কুতুবুদ্দিন পুরকাইত, ইমরান মির, আব্দুল রেজ্জাক লস্কর ও হাবিবুল্লা গাজি। এদের শনিবার দুপুরে ডায়মন্ডহারবার আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। প্রত্যেকের বাড়ি ঢোলাহাট, মথুরাপুর ও রায়দিঘি থানা এলাকায়।