যতদিন যাচ্ছে, দিল্লী সীমান্তের কৃষকদের আন্দোলন তত তীব্রতর হচ্ছে। এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও কৃষকরা এই দাবিতে অনড় যে কৃষি আইন বাতিল করতে হবে। সেইসঙ্গে আরও একাধিক দাবি করেছেন কৃষকরা, যেসব দাবির সাথে কৃষকদের কোনো সম্পর্ক নেই। যতদিন যাচ্ছে, এটা স্পষ্ট হচ্ছে যে এই আন্দোলন আর কৃষকদের হাতে নেই। এই আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে অন্য এক গোষ্ঠীর দ্বারা, যারা পিছনে থেকে কৃষকদের চালিত করছেন।
প্রথমে যখন কৃষক আন্দোলন শুরু হয়, তখন কৃষকদের দাবি ছিল এই যে MSP বন্ধ হবে না, এই গ্যারান্টি দিতে হবে সরকারকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় সরকার সে বিষয়ে পরিষ্কার করে বলে যে MSP কোনোভাবেই বন্ধ হবে। সেইসঙ্গে এও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় যে, কৃষি মান্ডি চালু আছে এবং ভবিষ্যতেও চালু থাকবে। কিন্তু কৃষকদের মধ্যে এই গুজব ছড়ানো হয়েছে যে, কৃষি মান্ডি বন্ধ করে দেবে কেন্দ্র সরকার। যা এক সর্বৈব মিথ্যা। এইভাবেই মিথ্যাচার করে সহজ সরল কৃষকদের উস্কানি দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও, আন্দোলনরত কৃষকরা দাবি করেছেন যে দিল্লী হিন্দু বিরোধী দাঙ্গা এবং CAA বিরোধী হিংসায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মুক্তি দিতে হবে। এমনকি শহুরে নকশালদের মুক্তি দেওয়ার দাবিও জানানো হচ্ছে। পাশপাশি শাহীনবাগের স্টাইলে স্লোগানবাজিও করা হচ্ছে। মোদির মৃত্যুকামনাও পর্যন্ত করা হচ্ছে। ফলে যতদিন যাচ্ছে, কৃষক আন্দোলন কিন্তু কৃষকদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাচ্ছে।
তাছাড়া, দিল্লী সীমান্তে কৃষকদের আন্দোলনের ফলে বিপদে পড়তে পারে লাদাখে মোতায়েন ভারতীয় সেনা। কারণ ওই সীমান্তে রেলপথ, সড়কপথ দীর্ঘদিন বন্ধ এবং ঐ রাস্তা দিয়ে কোনও গাড়িকে পার হতে দিচ্ছেন না তাঁরা। আর ওই রাস্তা দিয়েই লাদাখে মোতায়েন সেনার কাছে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী, ওষুধ ও অন্যান্য রসদ পাঠানো হয়। কিন্তু অবরোধের ফলে সেনার কাছে প্রয়োজনীয় রসদ পাঠানো যাচ্ছে না। আকাশপথে রসদ পাঠানো হলেও, তা যথেষ্ট পরিমাণে পাঠানো সম্ভবপর হচ্ছে না এবং দেরি হচ্ছে। ফলে সীমান্তে যদি আবার উত্তেজনাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে বিরাট সমস্যার মুখে পড়বে লাদাখে মোতায়েন ভারতীয় সেনা। ফলে চীনকে সুবিধা করে দিতেই যে কৃষকদের উস্কানি দেওয়া হচ্ছে, তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।