
টানা ৩২ মাস ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকার পর ভারতীয় হলেন জিরিঘাটের বাসিন্দা কাজলবালা দেব। যে ট্রাইব্যুনাল তাকে বিদেশী ঘোষণা করেছিল, সেই ট্রাইব্যুনালই তাকে ভারতীয় ঘোষণা করে মুক্তি দিলো, তবে ২ বছর ৮ মাস পর। তবে এতদিন ডিটেনশন ক্যাম্পে কাটানোর পর কাজলবালা এখন মানসিক ভারসাম্যহীন। ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে চিনতে পারেননি নিজের ছেলে বাপন দেবকেও। জানা গিয়েছে, কাজলবালা নমঃশূদ্রের জন্ম ও বেড়ে ওঠা মনিপুরের জিরিবামে। বাবা কালীকুমার নমঃশূদ্র এবং মা রেখাবালা নমঃশূদ্র। তাঁর বিয়ে হয় জিরিঘাটের ব্যবসায়ী অজিত দেবের সঙ্গে। কিন্তু হঠাৎ করেই একদিন কাজলবালার নামে বিদেশী নোটিশ আসে। সেখানে স্বামী হিসেবে নাম আসে কালীকুমার দেবের। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল মানতে চায়নি যে তাঁর স্বামী কালীকুমার দেব নয়, কালীকুমার আসলে তাঁর পিতা। ফলে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয় তাকে। এই অন্যায় মেনে নিতে পারেননি তাঁর একমাত্র ছেলে বাপন দেব। তিনি হাইকোর্টে আইনি লড়াই শুরু করেন কাজলবালাকে ভারতীয় প্রমান করার লক্ষে। সমস্ত কাগজপত্র দেখে হাইকোর্ট ট্রাইব্যুনালকে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেয়। শেষ পর্যন্ত গত ১৯শে ডিসেম্বর, ২০১৯ ট্রাইব্যুনাল তাকে ভারতীয় বলে মুক্তি দেয়। কিন্তু এরই মধ্যে কেটে গিয়েছে ২ বছর ৮মাস। ডিটেনশন ক্যাম্পে অযত্নের ফলে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন কাজলবালা। চিনতে পারেননি নিজের ছেলেকেও। নিজের জীবনের মূল্যবান সময় ডিটেনশন ক্যাম্পে কাটিয়ে দিলেন কাজলবালা, বিদেশী ট্রাইব্যুনালের ভুলে।